শুরু হলো ‘ক্লিন সাতক্ষীরা গ্রীণ সাতক্ষীরা’র সামাজিক আন্দোলন
শুরু হলো ক্লিন সাতক্ষীরা গ্রীন সাতক্ষীরা সামাজিক আন্দোলন।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে মুজিব বর্ষ পালন কর্মসূচি। সুন্দর গ্রাম সুন্দর শহর। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন তিলোত্তমা সাতক্ষীরা গড়ার সামাজিক আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে এ কর্মসূচি।
এরপর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী উৎসব পালিত হবে। স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী থেকে ভবিষ্যতের জন্য থাকছে এক সুদূর প্রসারী উন্নয়ন পরিকল্পনা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মোস্তফা কামাল তিন পর্বের এ উৎসবকে ঘিরে জেলার সুধীজনদের নিয়ে গ্রহণ করেছেন বিস্তারিত কর্মসূচি। মঙ্গলবার একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে আগামী দিনগুলোতে উৎসবের আনন্দে মেতে থাকবে জেলাবাসি। জেলার প্রত্যেকটি গ্রামে গ্রামে পৌছে যাবে উৎসবের আমেজ। গোটা সাতক্ষীরাকে জেলাকে ঝকঝকে নান্দনিকরূপে গড়ে তুলতে মাস্টার প্লান করা হয়েছে।
এরমধ্যে রয়েছে, রাস্তার দুইপাশ পরিষ্কার, ডাস্টবিন নির্মাণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস প্রাঙ্গন পরিষ্কার, প্রাণসায়র খালের দুই পাশ, পৌরসভা এলাকার জন্য ড্রেনেজ ব্যবহার Master Plan, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণ, Central waste disposal unit নির্মাণ, পাড়া ও মহল্লাভিত্তিক Cleaner নিয়োগ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার theme song।
প্রচার প্রচারণার কৌশল হিসেবে থাকছে র্যালি, সমাবেশ, লিফলেট, মাইকিং, স্যাটেলাইট চ্যানেল, সচেতনতামূলক কর্মকা–মসজিদ, মন্দির, স্কুল-কলেজ, সাংস্কৃতিক সংগঠন (পথনাটক, পটগান), কনসার্ট, বিলবোর্ড, ফেসবুক পেইজ, Theme song, পোস্টার, ব্যানার, লোকাল স্যটেলাইটে ব্যাপকভিত্তিক প্রচার, মতবিনিময় সভা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উদ্বুদ্ধকরণ সভা, সংবাদ সম্মেলন, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার, পাড়া মহল্লায় উঠান বৈঠক, সাড়া জাগানো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন ও মিডিয়া সেল গঠন।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল ক্লিন সাতক্ষীরা গ্রঅন সাতক্ষীরা বাস্তবায়ন কৌশল প্রণয়ন করে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
তিনি বলেছেন, সাতক্ষীরা জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে অংশগ্রহণ করবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি ইঞ্চি জমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে। প্রতি ক্লাসে ৩ সদস্যের টিম থাকবে। একজন শিক্ষক ও ২ জন ছাত্র-ছাত্রী টিমের সদস্য থাকবে।
ন্যুনতম ৭৫% ক্লাসে অংশগ্রহণ, ক্লাস সময়ে কোন কোচিং বা গৃহশিক্ষকতায় জড়িত হলে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। উত্তম আচরণে এবং দৃষ্টান্তকারী হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান স্কুল তহবিল থেকে প্রতি ২ মাস অন্তর অন্তর সাংস্কৃতিক দিবস পালনের মাধ্যমে ঐ দিনে পুরস্কৃত করবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক ম্যাগাজিনে পুরস্কৃতদের ছবি প্রকাশ করবেন। সরকার যেহেতু সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০০% বেতন-ভাতাদি নিয়মিত পরিশোধ করেন, সেহেতু কোন স্কুলের তহবিল সংকট থাকার কথা নয়। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করে দক্ষ জনশক্তি গঠনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারলে সাতক্ষীরা জেলা মডেল জেলায় অচিরেই পরিগণিত হবে। ক্লিন সাতক্ষীরা কর্মসূচি সফল হবে। একইভাবে সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত সকলে অফিস চালাকালীন সময়ে কোনরূপ দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলা না করলে পরিচ্ছন্ন সাতক্ষীরা গঠনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হবে। সকল ক্ষেত্রে ভালো কাজের পুরস্কার এবং দায়িত্ব অবহেলা বা মন্দ কাজের জন্য দৃষ্টান্তমূলক তিরস্কারের ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হলে এক বছরেই সফলতা লাভ করা কোন কঠিন কাজ হবে না।ক্লিন সাতক্ষীরা কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাথমিক পর্যায়ে চোখ কান বন্ধ রেখে সকল অবৈধ দোকান, দোকানের সামনের স্ট্যান্ড সাইনবোর্ড, ইট-বালির স্তুপসহ অবৈধ গাড়ি পার্কিং উচ্ছেদ করতে হবে।
এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে গঠন করা হয়েছে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, অফিস ও নাগরিক কমিটি।
এদিকে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ‘ক্লিন সাতক্ষীরা, গ্রীন সাতক্ষীরা’ মূলত এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। ভূ-প্রাকৃতিক পরিবর্তন এবং মনুষ্যসৃষ্ট কারণে সাতক্ষীরা জেলায় জলাবদ্ধতা এক অভিশাপের নাম। অপরিকল্পিত নগরায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অপর্যাপ্ততা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে জনমানুষের আশা আকাক্সক্ষা ও প্রত্যাশার বাস্তবায়ন না হওয়া, যথাযথ উদ্যোগের অভাব, নাগরিকদের প্রাপ্য সুবিধা বাস্তবায়নে ধীর গতি, সেবা প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেবা প্রদানে দক্ষ জনবল ও আধুনিক প্রযুক্তির অভাব, পৌরসভা এবং বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজার, বাস স্টেশন, রাস্তাঘাট, খাল, বাড়ির আশেপাশে অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতার সংস্কৃতি থেকে সাতক্ষীরা জেলাকে নূতনরূপে ঢেলে সাজানোর এখনই প্রকৃষ্ট সময়।
এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে সাতক্ষীরা জেলাকে একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সবুজ জেলা তথা ক্লিন সাতক্ষীরা, গ্রীন সাতক্ষীরা বাস্তবায়ন করতে একটি টেকসই স্বল্পব্যয়ী অংশগ্রহণমূলক যৌথ কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে।জনগণের কাছে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ইতিবাচক মানসিকতা, সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণে জনবান্ধব এবং পরিবেশ বান্ধব রূপরেখা প্রণয়ন এবং তার সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলাকে একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সবুজ তথা “ক্লিন সাতক্ষীরা, গ্রীন সাতক্ষীরা” এই সামাজিক আন্দোলন সফল করা সম্ভব।
এ সামাজিক আন্দোলনকে একটি দীর্ঘমেয়াদী টেকসই আন্দোলনে রূপ দিতে ৩ পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। সকল শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে এই আন্দোলনের সংবাদ পৌঁছে দেয়ার জন্য একটি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর প্রচার কৌশলের প্রয়োজন। প্রচারকার্য চালানোর জন্য একটি প্রচার প্রকাশনা কমিটি গঠন করা হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী নূতন কৌশল গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন