‘১৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস’
আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন/খুঁজি তারে আমি আপনায়/আমি শুনি যেন তার চরণের ধ্বনি/আমারি পিয়াসী বাসনায়।’ কবি নজরুলের এই আবেগমাখা অনুভূতি আজ ছুঁয়ে আছে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়। মনের মনিকোঠায় আজ আলোর নাচন। বহুদিনের সুপ্ত বাসনাগুলো আজ ঠিকরে বেরিয়ে আসতে করছে উথালপাতাল। প্রিয় মানুষটার চোখে চোখ রেখে বলতে সাধ হয়, ‘ভালোবাসি, তোমাকেই ভালোবাসি।’ কারণ, আজ ভালোবাসার দিন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস।
ফাল্গুনের দ্বিতীয় দিনে চারদিকে আজ রঙের মেলা। গাছে গাছে ফুটেছে শিমুল-পলাশ। বাহারি ফুলের রঙে মনটাকেও রাঙিয়ে নিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম।
আজকের এ ভালোবাসা শুধুই প্রেমিক আর প্রেমিকার জন্য নয়। মা-বাবা, স্বামী-স্ত্রী, ভাইবোন, প্রিয় সন্তান এমনকি বন্ধুর জন্যও ভালোবাসার জয়গানে আপ্লুত হতে পারে সবাই। চলবে উপহার দেয়া-নেয়া। উৎসবের এই আমেজ সহসাই শেষ হওয়ার নয়। বেলা ফুরাবে, তবু রেশ রয়ে যাবে দীর্ঘদিন।
অনেকের মতে, ফেব্রুয়ারির এ সময়ে পাখিরা তাদের জুটি খুঁজে বাসা বাঁধে। নিরাভরণ বৃক্ষে কচি কিশলয় জেগে ওঠে। তীব্র সৌরভ ছড়িয়ে ফুল সৌন্দর্যবিভায়। পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়। এই তো ভালোবাসা। প্রকৃতির এই ভালোবাসা মানুষের মাঝে ছড়াবে না তাই কী হয়! এমন ভাবনা থেকেই হয়তো ভালোবাসার ছড়াছড়ি!
তবে ইতিহাস বলে অন্য কথা। ভালোবাসা দিবসের পেছনের গল্পটা মধুর নয়, সে এক আত্মদানের হৃদয়বিদারক ঘটনা। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার তথ্য এমন, রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস-২ (মে ২১৩-জানুয়ারি ২৭০) সেনাবাহিনীতে লোকবল বাড়াচ্ছেন। হঠাৎ তিনি ঘোষণা দিলেন, কোনো যুবক আর বিয়ে করতে পারবেন না। এই অদ্ভুত ঘোষণার বিরোধিতা করে সন্ত ভ্যালেন্টাইন গোপনে যুবকদের বিয়ের আয়োজন চালিয়ে যেতে লাগলেন। একসময় ধরা পড়ে গেলেন ভ্যালেন্টাইন, নিক্ষিপ্ত হলেন কারাগারে। এর মধ্যে ভ্যালেন্টাইন মনে মনে ভালোবেসে ফেলেছেন কারারক্ষীর মেয়েটিকে। এর কিছুদিন পর ১৪ ফেব্রুয়ারি সম্রাটের নির্দেশে ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করা হয়। কথিত আছে, ওই দিনই প্রথম তিনি মেয়েটিকে এক চিঠিতে জানান তাঁর ভালোবাসার কথা। চিঠির নিচে লেখেন, ‘ইতি, তোমারই ভ্যালেন্টাইন’।
দিনটিকে ইউরোপে পরিচিত করে তোলেন জিওফ্রে চসার চতুর্দশ শতকে। পরে এর ব্যাপ্তি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে পৌঁছায় চীন, জাপান, ভারত ও বাংলাদেশের মতো এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও।
বাংলাদেশে দিনটিতে ফুলের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। এ দিনে চকোলেট, পারফিউম, গ্রিটিংস কার্ড, ই-মেইল, মুঠোফোনের এসএমএস-এমএমএসে প্রেমবার্তা, হীরার আংটি, প্রিয় পোশাক, জড়াজড়ি করা খেলনা মার্জার অথবা বই ইত্যাদি শৌখিন উপঢৌকন প্রিয়জনকে উপহার দেয়া হয়। নীল খামে হালকা লিপস্টিকের দাগ, একটা গোলাপ ফুল, চকোলেট, ক্যান্ডি, ছোট্ট চিরকুট আর তাতে দু`ছত্র গদ্য অথবা পদ্য হয়ে উঠতে পারে উপহারের অনুষঙ্গ।
কথায় বলে, মনের মানুষ পাশে থাকলে রোজই ভালোবাসা দিবস। তবে তাই হোক। ভালোবাসা দিবসে জেগে ওঠা মানবতার আবেগ শুধু একদিন নয়, বয়ে চলুক সারাবছর।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
পাকিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ১৯ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী ৫ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে ১৯বিস্তারিত পড়ুন
২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হিক্কা
ধেয়ে আসছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিক্কা। এর ফলে ঝড়ের পাশাপাশি ভারীবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন