সাবেক সংসদ সদস্য এন্তাজ আলীর আজ ২০তম মৃত্যু বার্ষিকী
আজ শুক্রবার প্রবীন রাজনীতিবিদ সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এড. এ এফ এম এন্তাজ আলীর ২০তম মৃত্যু বার্ষিকী। সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী ১৯৯৮ সালের ২৬ জানুয়ারী পবিত্র শবে কদরের রাতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের ভিপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং ৭১ এর যুদ্ধকালীন সময় মুজিব বাহিনীর সাতক্ষীরার (তৎকালীন সময় সাতক্ষীরা মহকুমা) প্রধান ছিলেন। এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী ঢাকায় ৬ দফা আন্দোলনের (প্রথম দিনের আন্দোলনে) রাজধানীর প্রধান সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আন্দোলন শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওই আন্দোলনে সাবেক কেন্দ্রীয় আ’লীগ নেতা ও সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী মৃত আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক কেন্দ্রীয় আ’লীগ নেতা ও সাবেক অর্থ মন্ত্রী মৃত শাহ এস এম কিবরিয়া, সাতক্ষীরার এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী অন্যতম ছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে আন্দোলন জোরদার করতে এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী সাতক্ষীরায় চলে আসেন। এছাড়া তিনি ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সাতক্ষীরা জেলার সভাপতি ছিলেন এবং সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তা ও পিকে ইউনিয়ন ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের সময় ১৯৯০ সালে সর্ব দলীয় ও ১৯৯৬ সালে জেলার আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া তিনি সাতক্ষীরার সামাজিক, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। মরহুম এড. এ এফ এম এন্তাজ আলী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ৭১সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভারতের সাথে যোগাযোগ রেখে অস্ত্র দেশে এনে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে তুলে দিয়ে তাদের কে সংগঠিত করেছিলেন। তিনি ৭০সালে খসরু আলমগীর কে সাতক্ষীরার হাজতখানা হতে পালাতে ও ৭১সালে সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী মৃত আব্দুর রাজ্জাক কে ভারতে যেতে সাহায্য করেছিলেন। তাছাড়া ৭৫সালে বঙ্গবন্ধু কে স্ব-পরিবারে হত্যার পর তিনি বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সহযোগীতা করেন। এ নেতা আজীবনকাল দেশ ও দশের জন্য কাজ করে গেছেন। এদিকে এড. এন্তাজআলীর পরিবার অভিযোগের সুরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহযোগী এড. এন্তাজআলীর মৃত্যুর পর প্রায় ২ সপ্তাহের মাথায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে তার শহরের পলাশপোলস্থ বাস ভবনে আসেন পরিবারকে সান্তনা জানাতে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য প্রবীণ এ নেতার মৃত্যুর পর থেকে জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত সময় কোন শোক ও স্মরণ সভাও করা হয়নি। এমনকি এ নেতার নামে আজ পর্যন্ত সাতক্ষীরার কোন জায়গা তার নামে নামকরণ করা হয়নি। সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন অলিগলির বিভিন্ন সড়ক সহ বিভিন্ন স্থানের নামে নাম করণ করা হয়েছে। এমনকি এক সময়ের মুসলিম লীগ নেতার নামে নামকরণ করা হয়। সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল প্রাণ সায়ের খালের পাশের রাস্তাটি (পাকাপোল থেকে কাটিয়া বাজার ব্রীজ) এড. এন্তাজআলীর নামে নামকরণ করার কথা থাকলেও তৎকালীণ পৌর মেয়র তা না করে ওই মুসলিম লীগ নেতার নামে নামকরণ করে। যেখানে দেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের চিহৃ মূছে ফেলতে চাইলেও সাতক্ষীরা শহরের এ সড়কটির নামকরণ একজন নামকরা মুসলিম লীগ নেতার নামে করা হয়েছে। সেখানে কেন একজন আ’লীগের সাবেক সাংসদ ও বীরমুক্তিযোদ্ধার নামে সড়কের নামকরণ করা হবেনা এ আক্ষেপ ওই পরিবারের। বীরমুক্তিযোদ্ধা এড. এন্তাজ আলী স্মৃতি সংসদের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, যেখানে বীরমুক্তিযোদ্ধা এড. এন্তাজ আলীর নামে ওই সড়কটি করার কথা থাকলেও ওই মুসলীম লীগ নেতার নামে সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে। কিন্তু জেলা আ’লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের কোন সংগঠনের কেউ এ ব্যাপারে আজও পর্যন্ত কোন প্রতিবাদ করেনি। যেখানে দেশব্যাপী যুদ্ধাপরাধী ও তাদের স্বপক্ষের নেতাকর্মীদের নামে যেসব ফলক আছে তাও তুলে ফেলার কথা বলা আছে। সাথে সাথে মুক্তিযোদ্ধা সংসদও মূখে কলুপ মেখে আছেন। এমনকি জেলা আওয়ামীলীগের কোন দলীয় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও এ নেতার কথা কেউ স্মরণ করেনা। তবে গত বছরের ১২ডিসেম্বর শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক, সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক জনসভায় এড. এন্তাজ আলীর কথা স্মরণ করেন। এ নেতার স্মৃতি ও আদর্শ ধরে রাখতে সাতক্ষীরা ষ্টেডিয়াম এড. এন্তাজ আলীর নামে নামকরণের দাবী জানিয়েছে। এব্যাপারে এড. এন্তাজআলীর পরিবার ও বীরমুক্তিযোদ্ধা এড. এন্তাজ আলী স্মৃতি সংসদ জেলা আ’লীগ, সদর এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও পৌর মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন