সাতক্ষীরায় ধর্ষন ও পাচারের তিনটি মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড
সাতক্ষীরায় ধর্ষন ও পাচারের পৃথক তিনটি মামলায় পৃথক তিন জনের সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদন্ড, এক লাখ জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত।
বুধবার বিকালে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা গ্রামের কাজী গিয়াস উদ্দীনের ছেলে ধর্ষন মামলার আসামী হাফিজুর রহমান (২৪) ও একই মামলার অপর আসামী তালা উপজেলার আঠারই গ্রামের মোকাম মোড়লের ছেলে নুর ইসলাম মোড়ল (২৫) এবং পাচার মামলার আসামী জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের জগদীশপুর গ্রামের কাশেম আলী গাইনের ছেলে গোলাম রসুল গাইন (১২)।
মামলার বিবরণে জানা যায়- ধর্ষন মামলার আসামী হাফিজুর রহমান তার প্রতিবেশী কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা গ্রামের শেখ মারুফ আহমেদের বাড়িতে কর্মরত ১৭ বছরের এক কাজের মেয়েকে প্রায়ই কু-প্রস্তাব দিতো। এরই জের ধরে ২০০৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ওই কাজের মেয়ের ঘরে আসামী হাফিজুর জোর পূর্বক ঢুকে তাকে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষন করে। ধর্ষনের পর সে তাকে আর বিয়ে না করে টালবাহানা করতে থাকে। একপর্যায়ে ওই কাজের মেয়ে ৫ মাসের অন্তস্বত্তা হয়ে পড়ে। কোন উপায় না পেয়ে সে নিজেই বাদী হয়ে ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ দিন পর এ মামলায় ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনান্তে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামিকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, এক লাখ জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন।
এদিকে, ধর্ষনের অপর একটি মামলার আসামী তালা উপজেলার আঠারই গ্রামের নুর ইসলাম মোড়ল তার প্রতিবেশী ২০ বছরের এক প্রতিবন্ধী নারীকে ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারী রাত ১০ টার দিকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। তার এ ধর্ষন কাজে সহযোগিতা করে একই গ্রামের খায়রুল মোড়ল ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম। ঘটনার পরদিন ১৮ জানুয়ারী ধর্ষিতা ওই প্রতিবন্ধীর ভাই মাহবুব মোড়ল বাদী হয়ে থানায় একটি ধর্ষনের মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ দিন পর এ মামলায় ৭ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনান্তে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামিকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিনমাসের কারাদন্ড প্রদান করেন। এ মামলায় বিচারক অপর দুই আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেন।
অপরদিকে, পাচার মামলার আসামী জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের জগদীশপুর গ্রামের গোলাম রসুল গাইন একই উপজেলার পূর্বনারয়নপুর গ্রামের আব্দুল করিম মল্লিকের মালিকানাধীন কালিগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ডের একটি হোটেলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। কাজ করার সুবাদে ২০০৫ সালের ২৯ জুলাই তার ছেলে শহিদুল ইসলামকে (৪) পাচারের উদ্দেশ্যে অপহরন করে ফরিদপুর নিয়ে যায় আসামী গোলাম রসুল। ৩০ জুলাই সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনগনের সহায়তায় পুলিশ অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং আসামী গোলাম রসুল আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করে। পরে আসামী উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয়। এ মামলায় ৯ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনান্তে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক উক্ত আসামিকে পাচারের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, এক লাখ জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন।
সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান- পৃথক এই তিনটি মামলার রায়ের সময় আসামিরা সবাই পলাতক ছিলো।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন