যৌন হয়রানির অভিযোগ কোথায় দিতে হবে, জানেন না ৮৭% শিক্ষার্থী’
২০০৯ সালে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। এরপর দেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কমিটি গঠিত হলেও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে কর্মক্ষেত্রগুলো। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ৮৭ ভাগ শিক্ষার্থী এবং কর্মক্ষেত্রের ৬৪.৫ ভাগ কর্মজীবী জানেন না যৌন হয়রানির শিকার হলে বিচার চাওয়ার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনায় তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে কমিটি রয়েছে অথবা কমিটি গঠনের নির্দেশনা রয়েছে।
একশনএইড বাংলাদেশের ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ: হাইকোর্টের ২০০৯ সালের নির্দেশনার প্রয়োগ ও কার্যকারিতা’ শীর্ষক গবেষণায় এ চিত্র ফুটে উঠেছে।
সোমবার (৭ মে) রাজধানীর স্পেক্ট্রা সেন্টারে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসলিমা ইয়াসমিন।
তিনি বলেন, ‘গবেষণাটি করতে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়। এতে দেখো গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটির কথা জানেন না। আর বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান,উন্নয়ন সংস্থা, পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান, সংবাদ মাধ্যমের ২০ জন ব্যক্তির উপরও গবেষণাটি করা হয়। এদের মধ্যে ৬৪.৫ শতাংশ হাইকোর্টের নির্দেশনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। ১৪ শতাংশ নির্দেশনাটি সম্পর্কে জানলেও তাদের এ বিষয়ে কোনও পরিষ্কার ধারণা নেই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা বলেন,‘দেশের বাস্তবতা হলো হয়রানি বা নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রবণতা খুবই কম। কর্মক্ষেত্রেও একই অবস্থা। কিন্তু এ পরিস্থিতি থেকে বের হতে হলে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। পাশাপাশি হয়রানি বা নির্যাতনকারীকে আইনের আওতায় এনে পর্যাপ্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
মানবাধিকারকর্মী ও নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশি কবির বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশনা মানা খুবই দরকার। এটি মানা হলে আমাদের দেশে নির্যাতনের মাত্রা কমে যেতো। তবে বাস্তবতা হলো স্বীকৃত বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন নির্যাতন হলে তার বিচার সঠিকভাবে হয় না।’
একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশনা মানে সেটি আইন। তবে সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। ফলে নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিকার বা প্রতিরোধ হচ্ছে না। যেটির ভয়াবহতা আমরা বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি।’
এ বিষয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশনা পুরোপুরি মানা গেলে কর্মক্ষেত্রে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্যাতন নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে। সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে। নির্যাতন প্রতিরোধে সরকারি-বেসরকারি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
এর আগে একই অনুষ্ঠানে ‘নাসরীন স্মৃতিপদক ২০১৮’ দেয় একশনএইড বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রয়াত নারীনেত্রী নাসরীন পারভীন হকের উদ্যম,আদর্শ ও বিশ্বাসকে ছড়িয়ে দিতে প্রতিষ্ঠানটি ২০০৭ সাল থেকে এ পদক দিচ্ছে। এ বছর ৪ বিভাগে ৪ জন এ পদক পেয়েছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন