কলারোয়ায় বিলুপ্তির পথে ধানের গোলা…
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় এখনো কিছু গোলা চোখে পড়ে-যেগুলো পূর্বপুরুষের স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছেন কৃষকেরা বসতভিটা বা বাড়ির উঠানে।
গ্রামে-গঞ্জে এক সময় অবস্থা সম্পন্ন কৃষকের বাড়িতে শোভা পেতো ধানের জন্য বিশেষ উপকরণ-বাশঁ, বেত, তাঁর বা চিকন প্লাস্টিক সূতো দিয়ে বাঁধানো /ব্যবহার উপযোগী তৈরিকৃত গোলা (গোলাকৃত হওয়ায় গোলা নাম উঠে এসেছে বলে অনেকের অভিমত)।
আকার অনুযায়ী ওসব ধানের গোলায় ১০০ থেকে ১৫০ মণ ধান সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। প্রথমে বাঁশ-কঞ্চি দিয়ে গোল আকৃতির কাঠামো তৈরি করা হতো। এঁটেল মাটির কাদা তৈরি করে ভেতরে ও বাইরে আস্তরণ লাগিয়ে উপরে টিনের চালা দিয়ে বিশেষ উপায়ে তৈরি করা হতো ওই ধানের গোলা। ধানের গোলা বসানো হতো ২/২.৫ ফুট মত উঁচুতে। প্রবেশপথ রাখা হতো বেশ ওপরে, এমনকি একেবারেই গোলার উপরিভাগের দিকে ছোট্ট ফোকড় রেখে, যেন চোর বা ডাকাতে ধান নিতে না পারে। বিশেষ ব্যবস্থার জন্য ধানের গোলায় ঢুকে ক্ষতি করতে পারতো না ইঁদুর পর্যন্ত। গোলায় শুকানো ভেজা ধানের চাল হতো শক্ত ও গন্ধহীন। একসময় কৃষকের কাছে এটিই ছিলো ধান রাখার আদর্শ পন্থা।
উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এখনও চোখে পড়ে ওইসব ধানের গোলা। কিছু মোটামুটি ব্যবহারে, আবার কিছু পরিত্যক্ত অবস্থায় স্মৃতি হিসেবে পড়ে আছে কৃষকদের উঠানে।
যাদের জমির পরিমাণ একটু বেশি তারা ধান সংরক্ষণের জন্য ওই গোলা ব্যবহার করতেন। আর সল্প জমির কৃষক সচরাচর চাচ মোড়ানো আঞ্চলিক ভাষা আউড়ি কিংবা বস্তা ব্যবহার করে ধান রেখে আসছেন অনেকেই। তবে গ্রমাবাংলার সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা খুবই উপযোগী। ধানের মৌসুমে ধান কেটে ঝেড়ে শুকিয়ে গোলায় রাখা হতো বা হয়।
প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে পুনরায় রোদে শুকিয়ে ধান ভাঙানো এবং বিক্রি করা হয়ে থাকে। বর্তমানে অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে ওই ধান রাখার বিশেষ পন্থা বা নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা ‘গোলা’। তবুও পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বাড়ির উঠানে এখনো কেউ কেউ ওই ধানের গোলা রেখে দিয়েছেন।
গ্রামাঞ্চলের অনেকে জানান- এখনো কেউ কেউ কমবেশি গোলা ব্যবহার করে গেলেও হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ে গেরস্থের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা। আগামী নতুন প্রজন্মের কাছে হবে ইতিহাস। সময়ের বিবর্তনে গোলাতে ধান সংরক্ষণ হ্রাস হয়ে বস্তায়, ড্রামে করে গোডাউন বা ঘরের মধ্যে রাখার ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে।
আক্ষেপ করে কয়েকজন কৃষক জানান- একটি ধানের মৌসুমে যে ধান পাই তা বিক্রি করে আর খেতেই ফুরিয়ে যায়। গোলায় রাখবো কী? তাছাড়া ফসলে তেমন কোন লাভ হচ্ছে না, খাটুনী-খরচের তুলনায় ফসলে দাম কমের কারণে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন