বাধ্যতামূলক হচ্ছে শুদ্ধ জাতীয় সংগীত পরিবেশন
‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি…’ আমাদের জাতীয় সংগীত। আমাদের এক অস্তিত্বের নাম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ২৫ লাইনের এই গানের ১০ লাইনকে জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
এই জাতীয় সংগীত শুদ্ধভাবে গাওয়া এবং এর চর্চায় শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে এখন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দলগত জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও প্রতিযোগিতার আয়োজন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। জেলার বিজয়ীদের নিয়ে এরপর বিভাগীয় পর্যায়ে হবে এ প্রতিযোগিতা। আর বিভাগীয় বিজয়ীদের সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়েও প্রতিযোগিতা হবে। এতে পুরস্কৃত করা হবে বিজয়ীদের। এই প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারে প্রচার করা হবে। এছাড়া প্রচার করতে হবে সব গণমাধ্যমেও।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। সবপর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও প্রতিযোগিতার আয়োজন বাধ্যতামূলক করার জন্য একটি নির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এক পরিপত্রের মাধ্যমে এই নির্দেশনা দেয়া হয়। এটি বাস্তবায়নে প্রতি জেলায় ১৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক করে অধ্যক্ষ বা তার প্রতিনিধি, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা কালচারাল কর্মকর্তা, জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্পাদক, জেলা তথ্য কর্মকর্তা, জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত সরকারি বালক-বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা তার প্রতিনিধি, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত মাদরাসার অধ্যক্ষ বা প্রতিনিধি, সংগীতে একজন বিশেষজ্ঞ, সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি ও সে এলাকার বাংলাদেশ বেতারের প্রতিনিধি এবং সহকারী কমিশনারকে (শিক্ষা) নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে।’
এছাড়া বিদেশে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে সমন্বয় করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হবে। তিনি দেশের বাইরে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজনের ব্যবস্থা নেবেন।
মন্ত্রিপরিষদের ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, চলতি বছর থেকে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করতে হবে। প্রতিযোগিতা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কি না তা সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের মাঠপর্যায় হতে তথ্য সংগ্রহ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে নিয়মিত অবহিত করতে হবে। এ প্রতিযোগিতার আয়োজনে ও পরিচালনায় মাঠপর্যায়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না সে বিষয়ে অবহিত হওয়ার জন্য বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খোঁজখবর নিতে হবে। শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়া ও পরিবেশন প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার। এছাড়া অন্যান্য ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া যাতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে প্রচার ও প্রদর্শন করে, এজন্য তথ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের তাদের ওয়েবসাইটের জাতীয় সংগীতের শুদ্ধ গীতভার্সন আপলোড করতে হবে।
কমিটির কার্যপরিধি হিসেবে বলা হয়, সিটি কর্পোরেশন এলাকার প্রতিটি স্তরের শ্রেষ্ঠ দল বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে, বিজয়ীদের গাওয়া জাতীয় সংগীত শিল্পকলা একাডেমিতে সরবরাহ ও মিউজিক ট্রাকের অনুমোদিত ভার্সন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ বলেন, শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত চর্চা ও অভ্যাস তৈরিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়াতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক ক্রিয়া অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত গাওয়া প্রতিযোগিতার আয়োজন বাধ্যতামূলক করতে নির্দেশ দেয়া হবে। জেলা পর্যায়ে বিজয়ীদের নিয়ে জাতীয়ভাবে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। সেখানে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে। তাদের গাওয়া জাতীয় সংগীত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিবেশন করা হবে।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না। অনেক শিক্ষার্থী শুদ্ধভাবে তা গাইতে পারে না। এ কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয় সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে এমন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তার আলোকে শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্র জারি করে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন