জয় দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু টাইগারদের
ত্রিদেশীয় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট উইন্ডিজের ছুড়ে দেওয়া ২৬২ রানের লক্ষ্যে মাঠে নেমে তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে ভর করে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
পেছনে আইরিশদের ‘এ’ দলের কাছে হারের স্মৃতি। সঙ্গী আইরিশ কন্ডিশনের ছোবল। সামনে উড়ন্ত জয়ে শুরু করা ক্যারিবিয়ানদের দাপট। চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক। ম্যাচের আগে মাশরাফি বিন মুর্তজা বললেন, মনের জোর আছে না! যেমন কথা, তেমন কাজ। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া স্পেলে অধিনায়কই দেখালেন পথ। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের আলোতে সাকিব আল হাসান সহজ করে দিল পথচলা। তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের রেকর্ড জুটি দলকে এগিয়ে নিল জয়ের সীমানায়। সব বাঁধা গুঁড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ।
দুর্দান্ত জয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে আইরিশদের বড় ব্যবধানে হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাশরাফির দল হারিয়েছে ৮ উইকেটে।
ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট মাঠে মঙ্গলবার ক্যারিবিয়ানদের ২৬১ রানে আটকে রেখে বাংলাদেশ জিতেছে ৫ ওভার বাকি রেখেই।
শুধু জয় বা জয়ের ব্যবধানই নয়, এই ম্যাচের প্রাপ্তি ব্যাটে-বলের পারফরম্যান্স ও শরীরী ভাষার দাপটও। আয়ারল্যান্ড সফর দিয়ে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ অভিযানের পথে আত্মবিশ্বাসী শুরু।
প্রথম ম্যাচের উইকেটেই খেলা। প্রথম জুটিতে আবার দুর্দান্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেই হোপ করলেন টানা দ্বিতীয় আর বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক সেঞ্চুরি। কিন্তু এবার আর রানের পাহাড় গড়তে পারল না ক্যারিবিয়ানরা। দারুণ বোলিংয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে রাখলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আর হাসান।
নতুন বলে মাশরাফি ছিলেন নিয়ন্ত্রিত। পুরোনো বলে তিন উইকেট নিয়ে ঘুরিয়ে দিয়েছেন ইনিংসের মোড়। স্পেল জুড়েই সাকিব ছিলেন আঁটসাঁট। সম্ভাবনা জাগিয়েও তাই খুব বড় রান করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ডাবলিনে মঙ্গলবার ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যারিবিয়ানরা তুলেছে ৫০ ওভারে ২৬১ রান।
এক দিন আগে ব্যবহার হওয়া উইকেট ছিল একটু মন্থর। বল এসেছে থেমে। দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিনাররা সহায়তা পেতে পারেন আরেকটু বেশি। এরপরও লক্ষ্য আছে বাংলাদেশের নাগালেই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বড় ধাক্কা খেয়েছে ম্যাচের আগে। আগের ম্যাচে বিশ্বরেকর্ড গড়া জুটির অংশীদার জন ক্যাম্পবেল ছিটকে যান পিঠের সমস্যায়। টস জয়ের পর হোপের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন সুনিল আমব্রিস।
বাংলাদেশ উইকেট পেতে পারত ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই। মাশরাফির ওভারে দুইবার জোরালো আবেদন থেকে বেঁচে যান আমব্রিস। মাশরাফির বলেই আবার বেঁচে যান তিনি ৫ রানে ক্যাচ মতো উঠিয়ে। থিতু হওয়ার পর কিছুটা ফিরে পান আত্মবিশ্বাস।
হোপ শুরু থেকেই ছিলেন স্বচ্ছন্দ। গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে শেষ দুই ওয়ানডেতে করেছিলেন অপরাজিত ১৪৬ ও অপরাজিত ১০৮। এই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে আইরিশদের বিপক্ষে করেছেন ১৭০। এই ম্যাচে শুরু করেন যেন সেখান থেকেই।
৮৫ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই অফ স্পিনারের প্রথম ওভারে মাহমুদউল্লাহর দারুণ ক্যাচে ফেরেন ৩৮ রান করা আমব্রিস। পরের ওভারে ড্যারেন ব্রাভোকে ফেরান সাকিব।
মিরাজ ও সাকিবের দারুণ বোলিং অনেকটাই দমিয়ে রাখে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের। ২০ রানে রোস্টন চেইসকে ফেরানোর সুযোগও এসেছিল। কিন্তু সাকিবের বলে ক্যাচ ছাড়েন মুশফিক। ৫৩ রানে মিরাজের বলে আউট হতে হতে বেঁচে যান হোপও। সময়ের সঙ্গে মানিয়ে দুজনই এগিয়ে নেন দলকে। গড়ে ওঠে শতরানের জুটি।
১২৬ বলে ষষ্ঠ ওয়ানডে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন হোপ। ইনিংসের পথে দ্রুততম ক্যারিবিয়ান হিসেবে স্পর্শ করেন ২ হাজার ওয়ানডে রান (৪৭ ইনিংস)। চেইস পান প্রথম ওয়ানডে ফিফটি। তিনশ রান তখন মনে হচ্ছিল খুবই সম্ভব। তা হতে দেননি মাশরাফি।
৫১ রানে চেইসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক ভাঙেন ১১৫ রানের জুটি। নিজের শেষ ওভারে ফিরিয়ে দেন সেঞ্চুরিয়ান হোপ ও প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হোল্ডারকেও। পথ হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।
মাশরাফির স্পেল শেষে পুরোনো বলে দারুণ বোলিং করেছেন সাইফ উদ্দিনও। তবে একদমই নিষ্প্রভ ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। শেষ দিকে দুটি উইকেট যদিও পেয়েছেন, যার একটি সীমানায় সাকিবের অসাধারণ ক্যাচে। তবে বাঁহাতি পেসার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রান বিলিয়েছেন অকাতরে। চোট কাটিয়ে এক মাস পর ম্যাচ খেলেছেন, হতে পারে সে কারণেই ছিলেন ছন্দহীন।
মুস্তাফিজ বিবর্ণ ছিলেন বলেই শেষ পর্যন্ত আড়াইশ ছাড়াতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ইনিংস শুরুর আগে ২৬২ রানের লক্ষ্য বললে হয়তো মেনেই নিত বাংলাদেশ!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৬১/৯ (হোপ ১০৯, আমব্রিস ৩৮, ব্রাভো ১, চেইস ৫১, কার্টার ১১, হোল্ডার ৪, ডাওরিচ ৬, নার্স ১৯, রোচ ১, কটরেল ৪*, গ্যাব্রিয়েল ০; সাইফ ২/৪৭, মাশরাফি ৩/৪৯, মুস্তাফিজ ২/৮৪, সাকিব ১/৩৩, মিরাজ ১/৩৮)
বাংলাদেশ: ৪৫ ওভারে ২৬৪/২ (তামিম ৮০, সৌম্য ৭৩, সাকিব ৬১*, মুশফিক ৩২*; কটরেল ০/৪৭, রোচ ০/৩০, গ্যাব্রিয়েল ১/৫৮, হোল্ডার ০/২৭, নার্স ০/৪৬, চেইস ১/৫১)
ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
কলারোয়ায় ফুটবল টুর্নামেন্টে ফাইম একাদশ, গদখালি ও পাথরঘাটা সেমিতে
কলারোয়ায় ৮দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ১ম, ২য় ও ৩য় খেলায় ফাইমবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার কেঁড়াগাছিতে প্রীতি ফুটবল ম্যাচে মাধবকাটিকে হারালো স্বাগতিকরা
কলারোয়ার কেঁড়াগাছিতে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচে সাতক্ষীরা সদরের মাধবকাটি ফুটবলবিস্তারিত পড়ুন
সাতক্ষীরায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ
সাতক্ষীরায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখবিস্তারিত পড়ুন