একজন কমিশনার ভিন্নভাবে নির্দেশ দিতে পারেন না : এইচটি ইমাম
নির্বাচন কমিশনের একজন কমিশনার এককভাবে কোনো নির্দেশ দিতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম।
বুধবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।
বুধবার দুপুরে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকার। এরপর বিকেলে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করে।
সাক্ষাত শেষে এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন মানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য চার কমিশনার। সকলে মিলে বিবেচনা করবেন সেটি। কোন বিশেষ একজন কমিশনার ভিন্নভাবে কোনো নির্দেশ দিতে পারেন না। দেয়া উচিতও নয়। এটি মানুষের মনে দ্বিধার সৃষ্টি করে,অনেক সময় ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করে।
একজন কমিশনার ব্যক্তিগত মত দিতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নোট অব ডিসেন্ট দিতেই পারেন, তবে সেটা পাবলিকলি নয়।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, প্রতিটি কমিশনের মূল আইন হচ্ছে একজন কমিশনার ব্যক্তিগতভাবে কোনো নির্দেশনা দিতে পারেন না। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতেই সবকিছু হয়। কমিশন যদি তাকে ক্ষমতা দিয়ে থাকে এটা আমাদের জানা নেই। কোনো কমিশনার ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশনা দিতে পারেন না। এটা আইনের লঙ্ঘন।
এককভাবে কেউ যেন নির্দেশনা না দেন এজন্য কমিশনকে বলেছেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কমিশনারের নাম বলিনি। কিন্তু পত্রপত্রিকায় যা এসেছে তাতে হচকিত হয়েছি। যা কিছু বলবেন কমিশনের নামে সেটি প্রচারিত হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবেন কমিশন। নির্দেশ দেবেন কমিশন। আমরা সবসময় দেখি সিইসি নিজে কথা বলেন। কিংবা কাউকে দায়িত্ব দিলে কমিশনের পক্ষে বলবেন। কিন্তু কমিশন থেকে বের হয়ে আরেকজন ব্যক্তিগতভাবে মন্তব্য করবেন এটা উচিত নয়। আমরা চেইন অব কমান্ড গুরুত্বপূর্ণ। একেকজন যদি একেকরকম বক্তব্য দেন তা উচিত নয়।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীদের ওপর আক্রমণ, হামলার বিবরণ ইসির কাছে দেয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান এইচটি ইমাম। তিনি বলেন, সিলেটের গোলাপগঞ্জে রাস্তার ওপরে একজন প্রার্থী পথসভা করছিলেন। বাধা দিলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলা করা হয়। তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। এসব উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্টরা নির্বাচন সুন্দর করতে চান। এ ধরনের প্ররোচনা, আক্রমণের ভয় তারা করে না।
সিইসির সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বাকবিতন্ডা প্রসঙ্গে এইচ টি ইমাম বলেন, আমরা বারবার বলছি নির্বাচন কমিশনকে ভালোভাবে কাজ করতে দেয়া হোক। সরকারি দল হিসেবে নির্দেশ না দিয়ে কমিশনের কাছে আসি বারবার। সকলেরই তাই করা উচিত। নির্বাচন কমিশনই আমাদের ভরসাস্থল। এই জিনিসটা অনেকে পালন করে ন না। এমনকি নির্বাচন কমিশনকে শুধু হেয় নয়, নির্বাচন কমিশনের সামনে এমনভাবে বক্তব্য দেন, কথা বলেন যেগুলো আচরণবিধির মধ্যে পড়ে না। নির্বাচন কমিশনের সামনে যখন কেউ টেবিল চাপড়ে কথা বলেন, তাদের সামনে অশোভন উক্তি করেন সেটি ভাল দেখা যায় না। যারা বলেন তারা তো হনই, আমরা ছোট হয়ে যাই। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সিইসির সাক্ষাতের প্রসঙ্গে জানতেই চাইলে বলেন, যেহেতু বিষয়টি সংবেদনশীল তাই যত কম বলা যায় তত ভাল। আমরা কমিশনকে বলেছি আপনারা সবচাইতে উঁচু প্রতিষ্ঠান। আমরা যা বলার বলব। আমরা ধমকও দেবো না, টেবিলও চাপড়াবো না।
সুস্পষ্ট প্রস্তাবের মধ্যে যান চলাচলে বিধিনিষেধ শিথিল করতে বলেছি। সাংবাদিকদের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহারে অনুমতির কথা বলেছি। সাংবাদিকদের যেন বিঘ্ন না ঘটে। প্রার্থী ও দলের দায়িত্বপ্রাপ্তদের জন্য যান চলাচলের অনুমতি দিতে হবে। কোনো রকম অসুবিধার যেন সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে আমরা বলেছি।
আওয়ামী লীগ সব সময় চেষ্টা করে এসেছে নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য করতে হলে অর্থ ও পেশি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সর্বাত্মক ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যস্ত, তারা বিষয়টি দেখভাল করবে। অর্থের অনেক চালানের মধ্যে একটি ধরা পড়েছে। কালো টাকার প্রভাবের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি। নির্বাচনের দিন, অনলাইন মানি ট্রান্সফার বা মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ করার বিষয়ে কমিশনের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি। বেশ কয়েকটি এনজিওর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান এইচটি ইমাম।
তিনি বলেন, ১১৯টির মধ্যে ৭৫টি সংস্থা এনজিও ব্যুরোতে নিবন্ধিত। বাকিগুলোর নিবন্ধন নেই। অ্যানফ্রেলের লোকাল চ্যাপ্টার অধিকার। তারা যে সমস্ত রিপোর্ট ও কথাবার্তা রয়েছে। তাদের জন্য এত মাথাব্যাথা কেন? অধিকার নিবন্ধিত নয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলাও আছে। আরপিও’র ৯১/সি ধারায়, কথাবার্তায়, আচরণে পক্ষপাতিত্বে, বিকৃত ও একপেশে তথ্য দিয়েছেন। তারা এমন কিছু বক্তব্য রেখেছেন শুধু কমিশন নয়, সরকার রাষ্ট্রের জন্য অপমানজনক।
দুঃখ প্রকাশ করে এইচটি ইমাম বলেন, কোনো কোনো পত্রিকায় প্রকৃত তথ্য না দিয়ে এমন সব তথ্য দিয়েছেন যেন তারা সব জানেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিজেই বলেছেন অ্যানফ্রেলের লোকাল চ্যাপ্টার অধিকার। অধিকারের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন আদিলুর রহমান খান। যিনি এর আগে অভিযুক্ত শুধু নন, দন্ডপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তারও আগে উনি অ্যানফ্রেলের একজন সিনিয়র মেম্বার। যদিও তিনি ঢাকায় থাকেন এখান থেকে উনিই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। কাজেই অ্যানফ্রেল ও অধিকার এক ও অদ্বিতীয়।
প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট নজিবুল্রাহ হিরু, অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার ও ড. সেলিম মাহমুদ প্রমূখ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন