একজন আদর্শ শিক্ষকের কথা…
১৯৬১ সালে কলারোয়া উপজেলার ৮নং কেরালকাতা ইউনিয়নের হুলহুলিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারমরহুম আব্দুল জব্বার খাঁর ঘরে জন্ম গ্রহন করেন কাজীরহাট হাইস্কুলের এই বরেন্য শিক্ষক আব্দুল গফ্ফার খাঁন।
১৯৭৯ সালে বাগআঁচড়া হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও ১৯৮১ সালে যশোর এমএম কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচ এসসি পাশ করে কাজীরহাট হাইস্কুলে শিক্ষকতার পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং পরবর্তিতে খুলনার কৃষি কলেজ থেকে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি।
শিক্ষক হিসাবে তিনি নিজেকে এলাকার সর্বসাধারন মানুষের কাছে গ্রহন যোগ্য করে তুলেছিলেন খুব অল্প সময়ে। তিনি চলাফেরা করতেন কাজীরহাট তথা এই এলাকার সকল পেশার মানুষের সাথে।
এলাকার প্রতিটি ছাত্র/ছাত্রী গফ্ফার স্যারের হাতের ছোয়া পেয়েছে। শিক্ষকতার সুবাধে জমি ক্রয় করে বাড়ি করেন কাজীরহাট বাজারে । সেই সময়ে বাড়িটি ভাড়া দিলেও প্রায় মাসে দুইহাজার টাকা পাওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তুু ভাড়া না দিয়ে চালু করেন বিনাভাড়া ও বিনা বেতনে এলাকার গরীব ও মেধাবী ছাত্র নিজ বাড়িতে রেখে পড়ানোর পদ্ধতি।
স্যারের হাত থেকে বেরিয়েছে অনেক দেশ বরেন্য ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার,বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ নানা পেশার মানুষ।
বরেন্য এই শিক্ষককে দেখেছি অনেক কাছথেকে, থেকেছি উনার ছায়াতলে, দেওয়ার চেষ্টা করেছে অনেক, নিয়েছি অল্প, দিতে পারিনি কিছুই। ছাত্রজীবনে দেখেছি একদিন কোন ছাত্র/ছাত্রী ক্লাসে না আসলে বিকালে বা রাতে বাড়িতে চলে যেতেনে এই শিক্ষক এবং খোঁজ খবর নিতেন পরিবার সম্পর্কে। শিক্ষক হিসাবে স্যারের জীবনে যা জানতেন তার চেয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের দেওয়ার চেষ্ঠা ছিল অনেক বেশি।কখনো ভাবিনি নিজেকে নিয়ে, ভেবেছে সবসময় ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে।
এভাবেই কেটেছে স্যারের দীর্ঘ জীবন। হঠাৎ চলে আসে ২০১৫ সালের ২৪ জুলাই রাত তখন ১.১৫ মিনিট । নিজের ফোনটি বন্ধ করে ঘুমাচ্ছিলাম হঠাৎ স্যারের এক প্রিয় ছাত্র প্রভাষক রেজাউল ইসলাম আমার বাড়িতে যেয়ে ডাকছে সাইফুল ওঠ গফ্ফার স্যার আর নেই। তখন ছাত্র হিসাবে আমার মনে হয়েছিল পৃথিবীর সকল শিক্ষক বুঝি চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
বরেন্য এই শিক্ষকের মৃত্যুতে সেদিন এলাকায় নেমেছিল শোকের ছায়া। ২৪ জুলাই বিকাল ৩টায় কাজীরহাট হাইস্কুলের ফুটবলমাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল স্যারের জানাযা । সেখানে ঢল নেমেছিল সর্ব সাধারন মানুষের। শুধু মুসলিমরা নয় অন্য ধর্মের মানুষেরও ঢল নামে সেখানে। অত্র এলাকার অনেক জনপ্রতিনিধি ও অর্থসম্পদের মালিকের জানাযায়ও এত মানুষ আর কখনো দেখা যায়নি । জানাযা শেষে স্যারের রেখে যাওয়া সম্পত্তির উপরে কাজীরহাটে দাপন করা হয়েছিল এই বরেন্য আব্দুল গফ্ফার স্যারকে।
মৃত্যুর সময় রেখে যান স্ত্রী শাহানাজ পারভীন, যিনি কেকেইপি সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসাবে কর্মরত আছেন। রেখে যান একমাত্র মেয়ে আনিকা তাসনিম নিশি-কে। নিশি বর্তমানে বাবার কর্মস্থল কাজীরহাট হাইস্কুলে ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্রী। সে সমাপনী পরীক্ষায় বেগম রোকেয়া এডাস স্কুল থেকে বৃত্তি লাভ করে। নিশি তার বাবার মতো একজন আদর্শবান মানুষ হতে চায়। এজন্য সে সকলের দোয়া কামনা করেছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন