লোকাল বাসের অপেক্ষায় ফুটপথে দাড়িয়ে একজন সাবেক মন্ত্রী!
রাজধানী ঢাকার একটি ফুটপথ। সেই ফুটপথ দিয়ে অনেকে হেটে যাচ্ছেন, দাড়িয়ে আছেন কেউ কেউ- বাসের অপেক্ষায়। হ্যা, লোকাল বাসের অপেক্ষায় ফুটপথে দাড়িয়ে থাকা স্বাভাবিক-ই বটে। বাসে ওঠার জন্য সাধারণ মানুষ দাড়িয়ে আছেন, অনেকের মতো সেখানেও ‘একজন ব্যক্তি’ দাড়িয়ে আছেন। তবে সেটা স্বাভাবিক হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ‘অনেকটা অস্বাভাবিক ও আশ্চার্যজনক’। সেই দাড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি যদি হয় একজন সাবেক মন্ত্রী তবে তো ‘অস্বাভাবিক ও আশ্চার্যজনক’ হবেই।
দিলীপ বড়ুয়ার কথা বলা হচ্ছে। যিনি সাবেক শিল্প মন্ত্রী। বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) সাধারণ সম্পাদক।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুক’এ এমনই একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে। অনেকের ফেসবুকের টাইম লাইনে এমন একটি ‘বিরল(!)’ ছবি প্রকাশিত-প্রচারিত হওয়ায় অনেকে বিস্মিতও হয়েছেন। অনেকে ইতিবাচক-নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন-করছেন। নেতিবাচক অনেক কথাই বলা যেতে পারে বা বলা হচ্ছে। তবে ইতিবাচক কথাও আছে যেটা কিছুটা কম বলা হচ্ছে।
কয়েকটি ফেসবুক আইডিতে লেখা হয়েছে- ‘একটি লোকাল বাসের অপেক্ষায় একজন সাবেক মন্ত্রী। পুরো ৫ বছর তিনি বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রনালয়ের পূর্ন মন্ত্রীর দায়ীত্বে ছিলেন। অথচ বাংলাদেশে এক মেয়াদের একজন ইউপি চেয়ারম্যানের ঢাকায় বাড়ি গাড়ি হয়ে যায়।
শিক্ষা নিন সবাই’।
হ্যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমপি-মন্ত্রী তো বটেই সামান্য ইউপি চেয়ারম্যানরাও একবার ক্ষমতা পেলে-চেয়ারে বসলে যেন তাদের বংশ পরম্পরা পায়ের উপর পা তুলে খেতে পারে। সেখানে প্রভাবশালী মন্ত্রণালয়ের সাবেক একজন মন্ত্রী লোকাল বাসের জন্য ফুটপথে দাড়িয়ে আছেন! যেখানে এমপিরা বিলাশবহুল একাধিক গাড়ির মালিক বনে যান অতি স্বল্প সময়ে সেখানে ৫বছরের সাবেক মন্ত্রী লোকাল বাসের জন্য দাড়িয়ে!
দিলীপ বড়ুয়া সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক। এই দলটি বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, এগার দল এবং মহাজোটের অংশ। এই দলের নির্বাচনী প্রতীক চেয়ার। ১৯৯৫ সালে সাম্যবাদী দলের ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় এবং দিলীপ বড়ুয়া দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পুরোনো সাম্যবাদী পিকিংপন্থী দলের অনেক নেতাই ততদিনে পরলোক গমন করেন; তাঁদের মধ্যে নগেন সরকার, সুখেন্দু দস্তিদার, দেবেন শিকদার, মোহাম্মদ তোয়াহা, আলী আব্বাস, আবদুল হক প্রমুখ। ফলে দলটি তার লক্ষ্য আধা পুঁজিবাদী আধা সামন্তবাদী সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা নির্মাণের রাজনীতি আপাতত স্থগিত রাখে এবং দলের নেতা দিলীপ বড়ুয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বুর্জোয়া দল আওয়ামী লীগ সরকারের শিল্পমন্ত্রী হিসেবে ২০০৯-১৩ সালে ব্যক্তি মালিকানাধীন শিল্প বিকাশের দায়িত্ব পালন করেন।
বিভিন্ন সময়ের আলোচিত-সমালোচিত দিলীপ বড়ুয়া ৯ম সংসদে টেকনোক্রাট কোটায় শিল্পমন্ত্রী হন। গত দুই দশকে তিনটি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনবারই জামানত হারিয়েছেন। জামানত হারানোর হ্যাটট্রিক করেছেন। এর মধ্যে একবার মাত্র দেড় হাজার ভোট পেলেও বাকি দুবার মিলিয়ে এক হাজার ভোটও পাননি, দুই দফায় পেয়েছেন মাত্র ৮১১ ভোট। যে কারণে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে তাকে প্রার্থী হিসেবেই মনোনয়ন দেয়নি ক্ষমতাসীন মহাজোট।
তবে সাবেক মন্ত্রী হিসেবে ফুটপথে লোকাল বাসের জন্য দাড়িয়ে থাকা দিলীপ বড়ুয়াকে নানান কারণে সাধুবাদ জানানো যেতে পারে, যদি নূন্যতম ইতিবাচক মানসিকতা পোষন করার ইচ্ছা থাকে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন