আরো খবর...
কেশবপুরে কোরবানীর পশুর হাটে পশু আছে, দাম কম, ক্রেতা নেই
যশোরের কেশবপুরে কোরবানী উপলক্ষে পশু হাটে পশু আছে দাম কম ক্রেতা না থাকায় লোকশানের আশঙ্কায় খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কৃষকরা হাট এজারাদারদের হয়রানীর আতঙ্কে তাদের উৎপাদিত পশু হাটে আমদানী করছে না।
কোরবানীর আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। কেশবপুর সপ্তাহে সোম ও বুধবার পশুর হাট বসে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কেশবপুরে পশু হাটে গরু ও ছাগলের আমদানী হয়েছে প্রচুর। কয়েকজন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, চলতি বছর কেশবপুরে পশুর উৎপাদন ব্যাপক হারে বেড়েছে যার কারণে ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশুর আমদানীও হয়েছে প্রচুর। দেশের বৃহৎ অঞ্চল বন্যায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে বাইরের বেপারির আগমন না ঘটায় বিক্রি খুব কম। এদিকে কেশবপুরে ধানের মূল্য কম থাকায় ক্রেতার আগমনো খুব কম। গরু ব্যবসায়ী মজিদপুর গ্রামের আজিজুর রহমান জানান, চলতি বছর গরু হাটে কোন বেচা বিক্রি নাই। দুই এক জন যাও আছে তারাও পশু হাট থেকে পশু না কিনে গ্রামের খামারিদের কাছ থেকে পশু ক্রয় করছেন। পাশ্ববর্তি মণিরামপুর উপজেলা থেকে আসা ব্যাবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, কেশবপুর পশু হাটে হাট এজারাদার দের কর্তৃক বিক্রেতারা প্রচুর নাজেহাল হওয়ার কারণে ও তাদের উৎপাদিত পশু হাটে না এনে বাড়িতে বিক্রি করছে। উপজেলার বেলোকাটি গ্রামের আব্দুল মান্নানের একটি পশু আছে যার মূল্য ৩ লাখ টাকা ও সাগরদত্তকাটি গ্রামের রজব আলীর একটি গরু আছে যার মূল্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু হাট এজারাদারদের হয়রানীর আতঙ্কে তাদের গরু বিক্রির জন্য কেশবপুরে পশু হাটে তুলবেন না। ক্রেতা যদি বাড়িতে আসেন তাহলে বিক্রি করতে রাজি আছেন বলে জানান।
কেশবপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরের সাধারণ চাষী ও ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করে ও সার্বক্ষনিক তদারকির কারণে কেশবপুরে পশু উৎপাদিত হয়েছে প্রচুর। ওই সূত্র জানান, চলতি বছর ঈদুল আযহা উপলক্ষে ষাড় উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৪ শত ২২ টি ও ছাগল উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৫ শত ৩৮ টি। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি। এদিকে কেশবপুরের বেশ কয়েকটি পশু খামার রয়েছে। এর মধ্যে গৌরিঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমানের খামারের গরুর সংখ্যা ৫২ টি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪৪ লাখ টাকা। কেশবপুর সদর ইউনিয়নের সদস্য কামাল হোসেনের সততা মৎস্য খামারের অংশ হিসাবে একটি সমবায় গরুর খামার রয়েছে। তার গরুর সংখ্যা ৩২ টি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২৫ লাখ টাকা। খামারির মালিকরা জানান, কোরবানী উপলক্ষে গরু উৎপাদনের কারণে কেশবপুরের উৎপাদিত পশু রয়েছে প্রচুর। এরপরও ভারত থেকে গরুর আমদানী ঘটায় আমাদের উৎপাদিত গরুর মূল্য খুব কম। নায্য মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কায় খামারিদের উৎপাদিত পশু কোরবানী উপলক্ষে কেউ পশু হাটে বিক্রির জন্য আমদানী করছে না।
এদিকে কেশবপুরের পশু হাট এজারাদার কেশবপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবজাল হোসেন বাবু ও সাঈদ জাবেদ হোসেন জুয়েল জানান, উচ্চ মূল্য দিয়ে আমরা কেশবপুর পশু হাট ইজারা নিয়েছি। ভারত থেকে গরু আমদানী হওয়ায় এবছর হাটে দেশী গরুর ব্যাপক আমদানী ঘটলেও কাঙ্খিত মূল্য না পেয়ে আমদানী এবং ক্রেতা কম।
কেশবপুর প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র মন্ডল জানান, কেশবপুর পশু অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ও সার্বক্ষনিক তদারকিতে কেশবপুর খামারি ও কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক পশু উৎপাদন হয়েছে। কিন্তু নায্য মূল্য না পাওয়ায় খামারি ও কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এদিকে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহিন জানান, কোরবানীর পশুর হাটে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণের যাবতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও জাল টাকা ব্যবসায়ী চক্রদেরকে সনাক্ত করতে জাল টাকা পরীক্ষার জন্য মেশিন বসানো হয়েছে।
পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়া মূর্তি নিয়ে গুঞ্জন!
যশোরের কেশবপুর উপজেলার মির্জানগর গ্রামের নবাববাড়ি পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়া দেবী মূর্তিটি কিসের তৈরী এ নিয়ে এলাকায় নানামুখী গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসির দাবি, ঐতিহাসিকভাবে নবাববাড়ি প্রত্নতত্ত্ব এলাকা হিসেবে খ্যাত হওয়ায় মূর্তিটি সোনার তৈরী এবং মোগল আমলের। মূর্তিটি উদ্ধার করে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব দপ্তরে জমা দেয়ার দাবিতে গত ২৭ জুলাই এলাকার শেখ সামজেদ আলী বিশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগটি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে কেশবপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৬৪৯ খ্রি. বাংলার সুবাদার শাহসুজা তাঁর শ্যালক পুত্র মির্জা সফসি খানকে যশোর মোগল ফৌজদারি স্থলাভিষিক্ত করেন এবং নুরুল্লাহ খান মির্জানগরে তাদের প্রশাসনিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তারাই মির্জানগর নবাববাড়ি ও কিল্লাবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন বলেই মির্জা সফসি খানের নামেই ওই গ্রামের নামকরণ করা হয় মির্জানগর। মির্জানগরের ধ্বংসাবশেষকে নওয়াব ফৌজদারের বাসভবন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। স্থাপত্য কাঠামোটি প্রকৃতপক্ষে একটি মোগল হাম্মামখানা। এ কারণেই নবাববাড়ি ঐতিহাসিকভাবে প্রততœত্ত্ব এলাকা হিসেবে পরিচিত।
এদিকে, গত ৬ মে রাত ১০টার দিকে ওই গ্রামের সন্তোষ দত্তের ছেলে গনেশ দত্ত সাতবাড়িয়া বাজার থেকে মাছের খাদ্য ক্রয় করে একই গ্রামের শেখ ওয়াজেদ আলীর ছেলে ভ্যান চালক সামজেদ আলী বিশের ভ্যানযোগে বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় গনেশ দত্ত নবাববাড়ি পুকুরে মাছের খাদ্য ছিটাতে টর্চ লাইট জ্বালানোর জন্যে সামজেদ আলী বিশেকে সাথে নিয়ে যায়। পুকুরে পানিতে নেমে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর সামজেদ আলী বিশের পায়ে কিছু একটা বেঁধে যায়। সে কৌতুহলবশত: কাদার ভেতর থেকে সেটা উদ্ধার করে পরিস্কার করলে বুঝতে পারে আসলে সেটি একটি দূর্লভ সোনার দেবদেবীর নারী মূর্তি। বিষয়টি বুঝতে পেরে গনেশ দত্ত তার কাছ থেকে মূর্তিটা ছিনিয়ে নিয়ে ছিনতাইকারী বলে চিৎকার করতে থাকে। তার ডাকচিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে সামজেদ আলী বিশেকে পিটিয়ে মারাতœক আহত করে। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার রফিকুল ইসলাম ২ দফা সালিসি বৈঠক বসালেও গনেশ দত্ত ওই মূর্তি পাবার কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। সোনার মূর্তিটি আত্মসাতের লক্ষ্যে সে সর্বশেষ সালিসে একটি পিতল/কাসার মূর্তি পেয়েছে বলে উপস্থিত সকলকে দেখালেও তার সাথে পুকুর থেকে পাওয়া মূর্তির কোন মিল নেই বলে সামজেদ আলী বিশের অভিযোগ। ফলে ওই মূর্তিটি সোনার কি পিতলের এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়। সামজেদ আলী ওই দূর্লভ সোনার দেবদেবীর নারী মূর্তিটি উদ্ধার করে সরকারের প্রতœতত্ত্ব দপ্তরে জমা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করার পর থেকে গনেশ দত্ত ওই হতদরিদ্র ভ্যান চালক সামজেদ আলী বিশেকে একের পর এক প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছেন। ফলে তিনি ভয়ে ভয়ে রাত্রি যাপন করছেন।
এ ব্যাপারে গনেশ দত্ত বলেন, বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান কয়েক দফা সালিস করে মিমাংশা করে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, নবাববাড়ির পুকুর থেকে উদ্ধার হওয়া মূর্তি নিয়ে কয়েক দফা সালিস করে বিষয়টি নিরসন করা হয়েছে।
কেশবপুর থানার ওসি মো. শাহিন বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত চলছে। সত্যতা মিললে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক বর্জন করলো সাংবাদিকরা
বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের দ্বিতীয়তলায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও স্থলবিস্তারিত পড়ুন
ঝিকরগাছায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শিশুসহ দু’জন নিহত
যশোরে বাস চাপায় এক শিশু ও এক মোটসাইকেল আরোহীর মৃত্যুবিস্তারিত পড়ুন