বাংলাদেশে এই প্রথম লোহার খনির সন্ধান
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপুর গ্রামে উন্নতমানের লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনির সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)।
মঙ্গলবার জিএসবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দুই মাস ধরে কূপ খনন করে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সেখানে ভূগর্ভের ১ হাজার ৭৫০ ফুট নিচে ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার একটি স্তর পাওয়া গেছে, যা দেশের জন্য একটি বিশাল সম্ভাবনার বিষয়। বাংলাদেশে প্রথম এই লোহার খনির সন্ধান পাওয়া গেল।
খননকাজে নিয়োজিত জিএসবির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম জানান, বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে লোহার খনির সন্ধান পাওয়া গেছে, সেসব খনির লোহার মান ৫০ শতাংশের নিচে। বাংলাদেশের লোহার ৬৫ শতাংশের ওপর। জয়পুরহাট বিসিএসআইআর পরীক্ষাগারে পরীক্ষায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। ইসবপুরে লোহার খনির সন্ধান বাংলাদেশে এটিই প্রথম, যার ব্যাপ্তি ৬-১০ স্কয়ার কিলোমিটার পর্যন্ত। এখানে কপার, নিকেল ও ক্রুমিয়ামেরও উপস্থিতি রয়েছে। ১,১৫০ ফুট গভীরতায় চুনাপাথরের সন্ধানও মিলেছে।
তিনি আরও জানান, এর আগে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর ২০১৩ সালে এই গ্রামের ৩ কিলোমিটার পূর্বে মুশিদপুর এলাকায় কূপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছিল। সেই গবেষণার সূত্র ধরেই দীর্ঘ ৬ বছর পর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। এরপর ১,৩৮০-১,৫০০ ফুট গভীরতা পর্যন্ত খননকালে সেখানে আশার আলো দেখতে পাওয়া যায়। এই খবর পেয়ে ২৬ মে জিএসবির মহাপরিচালক জিল্লুর রহমান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখানে পরিদর্শনে আসেন।
তখন সাংবাদিকদের সু-খবর না দিলেও লোহার খনির সন্ধান পাওয়া যেতে পারে এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মহাপরিচালক। অবশেষে দীর্ঘ চেষ্টার ফলে ১,৭৫০ ফুট গভীরে খনন করে লোহার খনির সন্ধান পাওয়া যায়। সেখানে প্রায় ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার আকরিকের এই স্তরটি পাওয়া গেছে। এ অঞ্চলে ৬০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল। সে কারণে এখানে জমাট বাঁধা আদী শীলার ভেতরে লোহার আকরিকের এ সন্ধান পাওয়া যায়।
উপজেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইসবপুর গ্রাম। এ গ্রামের কৃষক ইছাহাক আলীর কাছ থেকে ৫০ শতক জমি ৪ মাসের জন্য ৪৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে খনিজ পদার্থের অনুসন্ধানে কূপ খনন শুরু করে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর।
জিএসবির উপ-পরিচালক, (ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ার) মো. মাসুদ রানা জানান, গত ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। ৩০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ একটি দল ৩ শিফটে এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
ইসবপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, আমরা জানতে পারলাম, এখানে লোহার খনি পাওয়া গেছে। এখান থেকে লোহা উত্তোলন করা হলে, এখানকার মানুষদের জীবনমান পাল্টে যাবে। কর্মসংস্থান হবে এখানকার মানুষদের। দেশের জন্যও লাভজনক হবে। এমনই আশায় বুক বাঁধছেন এখানকার সর্বস্তরের মানুষ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন