দেখে নিন বিপিএলের সেরা পারফরম্যান্স
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৬ষ্ঠ আসর শেষ হয়েছে। তামিম ইকবাল এর মহাকাব্যিক ইনিংসের উপর ভর করে দ্বিতীয় বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা।
ঘরোয়া ক্রিকেটের জমজমাট এ আসর শেষ হলেও চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। এছাড়াও চলছে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্টগুলো নিয়ে।
ব্যাটে-বলে এবারের বিপিএলে অনেকটাই সফল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের তালিকায় প্রথম স্থানে বিদেশি ক্রিকেটার থাকলেও উইকেট সংগ্রহের তালিকায় সেরা পাঁচে নেই কোনো বিদেশি বলার।
এছাড়াও কথা হচ্ছে ফ্রাঞ্চাইজির বিদেশি খেলোয়াড়দের নিয়েও। সর্বোপরি এবারের বিপিএলে কার ব্যাটে-বলে বেশ মিলেছে তা নিয়ে হচ্ছে পর্যালোচনা। এরইমধ্যে টুর্নামেন্টের সেরা ব্যাটিং, বোলিং ও ক্যাচগুলো বাছাই করেছে ইএসপিএন-ক্রিকইনফো ।
আসুন দেখে নিই ইএসপিএন-ক্রিকইনফোর চোখে বিপিএলের সেরা পারফরম্যান্সগুলো –
ব্যাটিং
তামিম ইকবাল : পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে মারকুটে ভুমিকায় দেখা যায়নি বাংলাদেশ দলের নির্ভরযোগ্য ওপেনার তামিম ইকবালকে। এবারের আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দলের হয়ে খেলেছেন তামিম। তবে ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’ কথাটি যেন তামিমের বেলাতেই প্রযোজ্য। ফাইনালে নিজের জাত চেনালেন তামিম। ক্যারিয়ারের প্রথম বিপিএল ফাইনালে মাত্র ৬১ বলে করেন অপরাজিত ১৪১ রান। আর তামিমের সেই অবিস্মরণীয় ইনিংসের ওপর ভর করেই দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপার স্বাদ পেল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। ইএসপিএন-ক্রিকইনফোর মতে, পুরো আসরে এটাই সেরাদের সেরা ইনিংস।
মুশফিকুর রহিম : বিপিএল থেকে ছিটকে পড়ার আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই ভালো খেলেছেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
তবে সবগুলো ম্যাচের মধ্যে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে তার অপরাজিত ৬৪ রানের ইনিংসকে সেরা বলছে ক্রিকইনফো। এদিন রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে চিটাগং ভাইকিংসের জয়ের লক্ষ্য ছিল ১৫৯ রান।
আর সে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চার উইকেট হারিয়ে বসে ভাইকিংসরা। হাল ধরেন মি. ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। পঞ্চম উইকেট জুটিতে মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে স্কোরবোর্ডে ৮৮ রান তুলে দলের জন্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।
লরি ইভান্স : প্রথম দিকে ইংলিশ ব্যাটসম্যান লরি ইভান্সের পারফরম্যান্সে হতাশ হয়েছিল রাজশাহী ফ্রাঞ্চাইজি। পাঁচ ম্যাচে করেছিলেন মোট ১৩ রান।
কিন্তু সময়মতো জ্বলে ওঠে তার ব্যাট। খেলাটি ছিল কুমিল্লার বিপক্ষে লিগপর্বে। শুরুতেই ওপেনিং ব্যাটসম্যানদের হারিয়ে চাপে পড়ে যায় রাজশাহী কিংস। দলের হাল ধরেন লরি ইভান্স। নিজের সেই ম্যাচে বিপিএলের এবারের আসরে প্রথম শতরান (অপরাজিত) করেন তিনি। তার অসাধারণ ইনিংসের ওপর ভর করে কুমিল্লাকে হারায় রাজশাহী কিংস।
বোলিং
রবি ফ্রাইলিঙ্ক: বিপিএলের শুরু থেকেই দাপুটে বোলিং করেছেন চিটাগং ভাইকিংসের বোলার রবি ফ্রাইলিঙ্ক। আসরের প্রথম ম্যাচেই মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে তাক লাগিয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই মিডিয়াম পেসার।
তার দুর্দান্ত বলিংয়ে রংপুর রাইডার্সকে মাত্র ৯৮ রানে অলআউট করে দেয় ভাইকিংসরা। এদিন আগের আসরের চ্যাম্পিয়নরা চিটাগাং ভাইকিংসের কাছে যেন পাত্তাই পায়নি।
মাশরাফি বিন মুর্তজা : প্রথমপর্বে কুমিল্লার বিপক্ষে জ্বলে উঠেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ম্যাচ শুরুর মাত্র ৬.৪ ওভারেই মাশরাফি গুড়িয়ে দেন কুমিল্লা শিবিরের প্রথম সারির ব্যাটসম্যানদের। একে একে তুলে নেন তামিম, ইমরুল, এভিন লুইস ও স্টিভেন স্মিথের উইকেট। মাশরাফির বিধ্বংসী বলিংয়ে মাত্র ৬৩ রানে অলআউট হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। ১১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন মাশরাফি।
অ্যালিস আল ইসলাম : অভিষেক ম্যাচেই বাজিমাত করেছেন ঢাকা ডায়নামাইটসের স্পিনার অ্যালিস আল ইসলাম। এদিন হ্যাট্রিক করেন তিনি। অ্যালিস ওই হ্যাট্রিকসহ ২৬ রানে ৪ উইকেট নিলে রংপুর রাইডার্স আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি।
ক্যাচ
জেসন রয়: বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে দুটো অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরেছেন সিলেট সিক্সার্সের ইংলিশ খেলোয়াড় জেসন রয়।
চিটাগং ভাইকিংসের ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলির ক্যাচটির কথা মনে রাখবে ক্রিকেটপ্রেমীরা। অলক কাপালির বল উড়িয়ে মারেন ইয়াসির। নিশ্চিত ছক্কা হতে যাওয়া বলটি বাজপাখির মতো উড়ে গিয়ে এক হাতে ধরে ফেলেন রয়।
ক্যাচটিকে বিপিএলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ক্যাচের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
আন্দ্রে রাসেল ও কায়রন পোলার্ড: দুজন মিলে একটি ক্যাচ। ক্রিকেটের এমন ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটে। তেমনটাই ঘটেছিলে এই ম্যাচে।
রংপুর রাইডার্সের ক্রিস গেইল নিশ্চিত ছয় হাঁকানো বলটি বাউন্ডারির বাইরে উড়ে গিয়ে ধরেন আন্দ্রে রাসেল। তিনি নিজেই বাউন্ডারি হয়ে যাচ্ছেন দেখে মাঠে ছুড়ে মারেন সেই বল।
এসময় লংঅন থেকে দৌড়ে গিয়ে বল তালুবন্দি করেন কায়রন পোলার্ড। এ যেন বিপিএলে ঘটে যাওয়া অসাধারণ এক নৈপূণ্য।
আফিফ হোসেন : খেলা চলছিল সিলেট সিক্সার্স বনাম রাজশাহী কিংস। সোহেল তানভিরের বলে সুইপার কভার দিয়ে উড়িয়ে মেরে নিশ্চিত ছয়ের আশায় পপিং ক্রিজেই দাঁড়িয়েছিলেন লরি ইভান্স।
কিন্তু তরুণ আফিফ হোসেন সেটা হতে দেননি। উল্টো লরিকে পাঠিয়ে দেন সাজঘরে। উড়ে গিয়ে প্রথমে বলটি ধরে ফেলেন। ভারসাম্য রাখতে না পেরে বলটি মাঠের ভেতরে ছুড়ে মারেন। ফের নিজেই দৌড়ে গিয়ে সেই বল তালুবন্দি করে ক্যাচ নিশ্চিত করেন। যে কারণে এটিও টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা এক ক্যাচ ধরে নেয়া হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
কলারোয়ায় ফুটবল টুর্নামেন্টে ফাইম একাদশ, গদখালি ও পাথরঘাটা সেমিতে
কলারোয়ায় ৮দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ১ম, ২য় ও ৩য় খেলায় ফাইমবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার কেঁড়াগাছিতে প্রীতি ফুটবল ম্যাচে মাধবকাটিকে হারালো স্বাগতিকরা
কলারোয়ার কেঁড়াগাছিতে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচে সাতক্ষীরা সদরের মাধবকাটি ফুটবলবিস্তারিত পড়ুন
সাতক্ষীরায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ
সাতক্ষীরায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখবিস্তারিত পড়ুন