এমপিও’র দাবিতে সরগরম সংসদ
গত দশম সংসদের ধারাবাহিকতায় একাদশ জাতীয় সংসদের শুরুতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভূক্তির (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) জোরালো দাবি উঠেছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি না করে তালিকাভূক্ত দুই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভূক্তির প্রতিশ্রতি বাস্তবায়ন করার দাবি তুলেছেন সিনিয়র সংসদ সংসদরা।
সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় সিনিয়র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ও জাসদের সভাপতি ও সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপিভুক্তির দাবি তোলেন।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এমপিওভূক্তির বিষয়ে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে অর্থ ও শিক্ষামন্ত্রীদের উদ্দেশ্য করে তারা বলেছেন, ‘আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি না করে এমপিওভূক্তির প্রতিশ্রতি বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে জনগণের কাছে দেয়া ওয়াদা আমরা ভঙ্গ করবো।’
শিক্ষকেরা বিগত নির্বাচনগুলোতে সরকারকে নানাভাবে সহেযাগিতা করেছেন বলেও তারা বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।
এমপিওভুক্ত হলে সরকারি স্কেলের মূল বেতনের শতভাগসহ অন্যান্য কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। বাংলাদেশের শতকরা ৯৭ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি।
সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সংসদে সম্পুরক কার্যসূচিভূক্ত সংসদীয় কমিটি গঠনের পর মোহাম্মদ নাসিম ফ্লোর নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভূক্তি নিয়ে নাসিম বলেন, ‘এমপিওভূক্তির জন্য বাংলাদেশে লাখ লাখ শিক্ষক কিছুদিন আগে আন্দোলন করেছেন। শিক্ষকদের এমপিওভূক্তির বিষয়ে আমরা এমপিরা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম। আমাদের সেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সময় এসে গেছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় শিক্ষকেরা অনেক পরিশ্রম করেছেন। আন্তরিকতার সাথে নির্বাচনে আমাদের সাহায্য করেছেন। এটা ভুলে গেছে চলবে না।
নাসিম বলেন, এমপিওভূক্তির জন্য বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা দেয়া হয়েছে। এর জরিপও হয়ে গেছে। এমপিওভূক্তির জন্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা লাগবে। অর্থমন্ত্রী এখাতে ৪৩২ কোটি টাকা দিয়েছিলেন যারজন্য এটা হয়নি। নতুন অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করবো কথা বাস্তবায়ন করেন। চলতি অর্থ বছরে সম্পূরক বাজেটের মাধ্যমেই বরাদ্ধ দিয়ে এটি বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে জনগণের কাছে আমরা ওয়াদা ভঙ্গ করবো।
তিনি বলেন, সরকারি বিরোধী দল সকল এমপি স্বীকার করবেন এমপিভূক্তির কোন বিকল্প হতে পারে না। দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভূক্তি বন্ধ ছিলো। এখন এটা করার সময় এসে গেছে। এটা আমাদের করতে হবে।
শিক্ষকেরা জীর্ণ-শীর্ণ, তারা অভূক্ত আছেন উল্লেখ করে নাসিম বলেন, এমপিওভূক্তির জন্য শিক্ষক আন্দোলনের সময় আমরা এমপিওভূক্তি করবো বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। নির্বাচন হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সদয় হবেন। সদয় হয়ে তারা পদক্ষেপ নেবেন। অনুরোধ করবো এই এমপিওভূক্তি ঝুলিয়ে না রেখে তাদের প্রতিশ্রুতির মধ্যে না রেখে এটি বাস্তবায়ন করেন। না হলে আমাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হবে। যে ওয়াদা করেছি তার থেকে আমরা সরে যাব।
অর্থ ও শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি না করে তালিকাভূক্ত দুই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভূক্তির প্রতিশ্রতি বাস্তবায়ন করুন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, শিক্ষকদের এমপিওভূক্তির দাবি শিক্ষাখাতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অভূতপূর্ব বিস্তার হয়েছে। শিক্ষার ব্যাপক সম্প্রসারণ হয়েছে। জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে একটি স্কুল ও একটি কলেজ সরকারিকরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকে লক্ষাধিক শিক্ষকদের জাতীয়করণ হয়েছে। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষকদের এমপিওভূক্তি দাবিটি উপেক্ষিত রয়েছে।
শিক্ষকদের এমপিওভূক্তির দাবি তুলে তিনি বলেন, আমরা গত ৫ বছরে আমরা সংসদ সদস্যরা যতবার দাঁড়িয়েছি শিক্ষকদের এমপিওভূক্তির কথা বলেছি। কিন্তু অর্থমন্ত্রী টাকা বরাদ্দ করেননি। গত নির্বাচনের আগে যে টাকা বরাদ্দ হয়েছে তা বিলিবন্টন করা সম্ভব হয়নি। কাজেই এমপিওভূক্তি হয়নি। এরকম একটি পর্যায়ে এই মুহুর্তে নজর দেয়ার সময় এসেছে শিক্ষারগুণগত মান উন্নয়নের জন্য। শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে নজর দেয়ার সময় এসেছে। তাদের জীবনমান উন্নয়ন করতে হলে এমপিওভূক্তি হচ্ছে প্রাথমিক পদক্ষেপ। শিক্ষকদের মর্যাদা প্রদান করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য। সংবিধানের দিক নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হলে তাদের এমপিওভূক্তি জরুরী প্রয়োজন। মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকার জন্য শিক্ষকদের এমপিওভূক্তি হবে না। এটা হতে পারে না। আমার দেশের সরকার এখন সম্পদশালী ও দক্ষ।
সর্বশেস ২০১০ খ্রিস্টাব্দে দেড় হাজারের কিছু বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন