জেলা নেতৃবৃন্দ অবরুদ্ধ!
তালা উপজেলা পরিষদের প্রার্থীতা তৃণমূলের ভোটে
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে হৈ-হট্টোগোল, ধাক্কা-ধাক্কি ও জেলা নেতৃবৃন্দদের অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্র জানায়,সমাবেশস্থলের সামনে উপজেলা পরিষদ-তালা প্রেসক্লাব রোডে শনিবার দুপুর ১টা ২০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘন্টাব্যাপী বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
সর্বশেষ জেলা পুলিশ সুুুুপারের মাধ্যমে নেতৃবৃন্দ প্রত্যক্ষ ভোটে প্রার্থী মনোনয়নের প্রতিশ্রুতি দিলে নেতা-কর্মীরা তাদের অবরোধ তুলে নেয়।
দলীয় একাধিক সূূত্র জানায়,আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী মনোনয়নের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে শনিবার সকালে তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে স্থানীয় শিল্পকলা একাডেমীতে এক বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়।
এতে তালা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আ.লীগের সভাপতি মুনছুর আহম্মেদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ্ব নজরুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ঐ সভায়।
সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে তাদের যার যার মতামত তুলে ধরেন।
এসময় সভার শেষ পর্যায়ে দুপুর ১টার দিকে সভার সভাপতি শেখ নূরুল ইসলাম তার সমাপনী বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোন তৃণমূলের ভোট নয়, জেলা নেতৃবৃন্দের মতামতকে সর্বাধীক গুরুত্ব দিলে সভয় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে হই-হট্টগোল ও ধাক্কা-ধাক্কি শুরু হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সভার অতিথিরা দ্রুত সভাস্থল ত্যাগ করে গাড়িতে উঠলে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল সহকারে তাদের গাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখে। কেউ কেউ তাদের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকে প্রায় আড়াই ঘন্টা। সকাল থেকে সভাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় থানা পুলিশ উপস্থিত থাকলেও পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রের বাইরে চলে গেলে বেলা ৩টার দিকে পাটকেলঘাটা থানার ওসি রেজাউল ইসলাম রেজার নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
বর্ধিত সভায় তালা উপজেলা কমিটিসহ ১২টি ইউনিয়ন এবং ১০৮টি ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক অংশ নেন।
সভায় আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা প্রার্থী বাঁছায়ের ক্ষেত্রে (গোপন ব্যালটের মাধ্যমে) ভোটের পক্ষে অবস্থান নেন। কিন্তু কয়েকজন প্রার্থী, কর্মী ও তাদের সমর্থকেরা ভোটের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এনিয়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনসুর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বেলা দেড়টার দিকে সভা কক্ষ ছেড়ে নিজ নিজ গাড়িতে চড়ে সভা স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। এ সময় নেতা-কর্মীরা তাদের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে এবং তাদেরকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। অবরুদ্ধকারীরা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী চুড়ান্ত করার দাবীতে শ্লোগান দিতে থাকে। এভাবে চলে থাকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত।
পরে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান জেলা নেতৃবৃন্দের উদ্বৃতি দিয়ে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উপজেলা নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নে তৃণমূলের সরাসরি ভোটাধিকারের বিষয়টি সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তুলে ধরলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিকেল ৪টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেন রোববার বেলা ১১টায় তালা শিল্পকলা একাডেমীতে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের প্রার্থী চুড়ান্ত করা হবে। এই ঘোষনা দেওয়ার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা অবরোধ তুলে নেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে স্থান ত্যাগ করার সুযোগ করে দেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্ধিত সভায় একপক্ষ চায় ভোটের মাধ্যমে উপজেলা প্রার্থী চুড়ান্ত করতে, আর অপর একটি পক্ষ চায় ভোট ছাড়াই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থীতা চুড়ান্ত করতে। আমরা সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম সাতক্ষীরায় ফিরে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে আলোচনা করে এ ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত তাদেরকে জানিয়ে দিবো। কিন্তু আমরা সভাস্থল থেকে গাড়িতে উঠার সাথে সাথে যে পক্ষ ভোট চায় তাদের সমর্থকেরা গাড়ির চারিপাশ ঘিরে ফেলে এবং আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। বেলা দেড়টা থেকে বিকেল প্রায় ৪ টা পর্যন্ত আমরা অবরুদ্ধ ছিলাম। পরবর্তীতে ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী চুড়ান্ত করার ঘোষণা দিয়ে তারা সাতক্ষীরায় ফিরে এসেছেন।
সর্বশেষ জেলা নেতৃবৃন্দর উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তৃণমূলের ভোটের মাধমে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে বক্তব্য দেন। এসময় তারা সরাসরি ভোটে প্রথম ৩ জনের নাম কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানোর কথা বলেন।
এর আগে অবরোধ চলাকালে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের অনেকেই শারীরীকভাবে দূর্বল হয়ে রাজপথেই শুয়ে পড়েন। এসময় জরুরীভাবে তাদের কারো কারো স্থানীয়ভাবে সেবা-শুশ্রুসা করলে তারা সুস্থ্য হয়ে উঠেন।
এব্যাপারে তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে শান্ত রয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন