আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যে কোনো দায়িত্ব পালন
সশস্ত্রবাহিনী মাঠে থাকায় ভোটারদের আস্থা বাড়বে : সিইসি
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা মাঠে নামায় ভোটারদের আস্থা বাড়বে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
সোমবার ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটের মহড়া (মক ভোটিং) পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
এক প্রশ্নে সিইসি বলেন, “সেনাবাহিনী মোতায়েনের উদ্দেশ্যই হল- ভোটারদের মনে আস্থা তৈরি করা। সেনাবাহিনী মোতায়েনের ফলে ভোটারদের মনে আস্থা বাড়বে”।
সংঘাত পরিহার করতে দলগুলোর প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটের উৎসবে মেতে উঠবে দেশ। ওইদিন ২৯৯টি সংসদীয় আসনে ভোট দেবেন ভোটাররা।
এ ভোটকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপি, গ্রাম পুলিশসহ সংশ্লিষ্টবাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনী এলাকায় মোতায়েন থাকছে।
ভোট উপলক্ষ্যে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১০ দিনের জন্য সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন থাকবে।
সিইসি বলেন, “এ সুযোগে আমি সব রাজনৈতিক দলের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করি- নির্বাচন যেন নির্বাচনের মতো হয়। সহিংসতা, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি, তর্ক-বিতর্ক, হাঙ্গামা পরিহার করে কেবল মাত্র নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে নির্বাচনে নিবদ্ধ থাকার জন্য অনুরোধ করি।”
সেনাবাহিনী সব ধরনের দায়িত্ব পালন করবে বলে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, “আইন-শৃঙ্খলারক্ষার জন্য সেনাবাহিনী যে কোনো দায়িত্ব পালন করবে। সেনাবাহিনীর সামনে যদি এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন- তখন তারা স্বউদ্যোগে সেখানে গিয়ে সে পরিস্থিতি সংযত করবে। এগুলোর আইন আছে, ‘এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আলোকে তারা ব্যবস্থা নেবে।”
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি জানান, ইলেকট্রোনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারাই। তাদেরকে সহযোগিতা করতে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চৌকস কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করবেন।
ইভিএমের প্রশিক্ষণ সম্পর্কে সিইসি বলেন, “প্রত্যেকেই সুন্দরভাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ৬টি আসনের প্রতিটি কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর প্রত্যেকেই এখন জানেন, কীভাবে ইভিএমে ভোট নিতে হয়। ”
ইভিএমে ভোট নিয়ে সন্দেহ দূর করতে মক ভোটিংয়ে আসার আহ্বান জানান কে এম নূরুল হুদা।
“ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সন্দেহ ছিল। সেই সন্দেহ গুরুত্ব দিতে গিয়েই ইসি সীমিত সংখ্যায় মাত্র ৬টি আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এখনও যারা ইভিএম নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন তাদেরকে বলি, আপনারা ৬টি আসনে চলমান প্রশিক্ষণে আসুন। সব কিছু ভালোভাবে জানুন, বুঝুন। ”
একাদশ সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘ভোটের আগে, ভোটের দিন ও ভোটের পরে আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে ২৪ ডিসেম্বর হতে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সশস্ত্রবাহিনী নির্বাচন কমিশন বা অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করবে।’
সশস্ত্রবাহিনীর এ মোতায়েন ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় হবে।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা, উপজেলা, মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসারের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এতে আরও বলা হয়, উপকূলীয় ১৮টি উপজেলা ও সীমান্তবর্তী ৮৭টি উপজেলা ব্যতীত অন্যান্য ৩৮৯টি উপজেলায় সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
উপকূলীয় ১৮টি উপজেলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং সীমান্তবর্তী ৮৭টি উপজেলায় বিজিবি অন্যান্য দায়িত্বপূর্ণ এলাকার পাশাপাশি কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্তৃক জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান নির্বাচনী সহায়তা দিতে প্রস্তুত রাখা হবে বলে আইএসপিআর থেকে জানানো হয়।
পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী বা নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বা মহাসড়কসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সশস্ত্রবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
সশস্ত্রবাহিনী বিভাগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জয়েন্ট কো-আর্ডিনেশন সেল স্থাপন করা হবে।
প্রথমবারের মত জাতীয় সংসদের ৬টি আসনের ভোট কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হবে। ইতিমধ্যে দুই পর্যায়ে ইভিএমের উপর সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে এবং তৃতীয় পর্যায়ে নির্বাচন কমিশন জনসচেতনতা ও প্রচারণা কার্যক্রমে ইভিএমের উপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা কারিগরী দক্ষ হিসেবে অংশ নিচ্ছেন।
ছয়টি নির্বাচনী আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় কারিগরী সহায়তা দিতে প্রতিটি কেন্দ্রে তিনজন করে সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়াও ওইসব আসনে ইভিএম সংক্রান্ত কারিগরী সহায়তা দিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য প্রস্তুত থাকবেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন