কলারোয়ার খোরদো এলাকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কামার শিল্প
কলারোয়ার দেয়াড়া এলাকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কর্মকার বা কামার শিল্প। লৌহ পিটিয়ে প্রয়োজনীয় কৃষি জিনিসপত্র বানানো পেশাদার কামারদের অনেকে পেশা পাল্টিয়ে ফেলায় এ শিল্প হারানোর পথে। আর কিছু কর্মকার ধরে রেখেছেন পৈত্রিক পেশা।
দেয়াড়া ও কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের খোরদো বাজার, পাটুলিয়া, কুশোডাঙ্গা, শাকদাহ, গোয়ালচাতর, রায়টা বাজারসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার কয়েক শতাব্দীর পৈতৃক পেশা ধরে রাখলেও লোহা পেটানো কাজে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকেই।
ইতিপূর্বে দেয়াড়া ইউনিয়নে ১৫/১০টা কামারশালা থাকলেও বর্তমানে খোরদো বাজার পর্যায়ে তার পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে হাতে গোনা কয়েকটি। কামারশালার কামাররা বংশানুক্রমে কয়েক শতাব্দীর ঐতিহ্য ধরে রাখলেও আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া লাগেনি তাদের।
খোজ নিয়ে জানা গেছে- কামারপাড়ার কামারশালায় লোহা পেটানো আর শান দেয়ার কাজে রাতদিন অবিরাম খেটেও স্বচ্ছলতা আসেনি অনেকের। হাতেটানা হাপর, উন্মুক্ত চুলা, হাতুড়ি, ছেনি আর রেতি দিয়ে কাজ করে থাকেন কামারগণ। তাদের হাতে বানানো দাঁ, ছুরি, শাপল, কোদাল, কাস্তে (কাচি) বটি ইত্যাদি লৌহ অস্ত্রের কার্যকারিতা গুরুত্বপূর্ণ হলেও বর্তমানে যেন কামর শিল্প মলিন হয়ে যাচ্ছে।
খোরদো বাজারের কামার শ্রী আনন্দ পদ কর্মকার জানান- ‘ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে কামারশিল্প। অনেক কামারই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন।’
শ্রী আনন্দ কর্মকারসহ কয়েকজন কামার জানান- ‘গ্রাহকদের চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী তৈরি করা হতো বাসাবাড়ির জন্য দেশিয় লোহার অস্ত্র সরঞ্জমাদি।’
তারা আরো জানান- ‘বিগত সময়ে এ পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন জেলার হাজারো লোক। বিভিন্ন হাটে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হতো সেগুলো। তবে সেটা এখন হ্রাস পেয়েছে। কমেছে কামার, কামারশালা আর এগুলোর বিকিকিনি।
আকারভেদে একেকটি চাপাতি ৪৫০- ৫০০ টাকা কেজি, ছুরি ৪০০-৫০০ টাকা পিস, ছোট ছুরি ৭০-৯০ টাকা পিস, বটি ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি, একটি কাস্তে ১৭০-২২০ টাকা, এমনকি নিম্ন ৮০- ১০০/২০০ টাকা বিক্রি হয় কাস্তি।’
তারা জানান- ‘কয়লাসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বেশি হওয়াতে তৈরি করা জিনিসের বেচাবিক্রি করতে বেশি পরিমাণ টাকা নিতে হয়। যাতে গ্রাহকদের চাহিদা কম লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া খোরদো বাজার থেকে অনেকেই বিদায় নিয়েছেন আর গুটি কয়েক ব্যক্তি পৈতৃক ব্যবসাটি ধরে রেখেছেন।’
খোরদো বাজারস্থ নিজ বাড়িতেই কাজে নিয়োজিত লৌহ কর্মকার দেবু বিশ্বাস জানান- ‘তার বাপ-দাদাদের ছিলো এ পেশা। তিনিও ছোটবেলা থেকে এ কাজ করেন। বিধায় স্কুলে যেতে না পেরে শিক্ষাগত যৌগ্যতাও কম। একজন দক্ষ কর্মকার দিনে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা এবং একজন সহযোগী কর্মকার/ কামার ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা রোজগার করতে পারেন বলে জানান তিনি।’
সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে স্থানীয় কামারদের তৈরি জিনিস পত্রের দাম বেশি ভাল ও চাহিদা দিন দিন কমে যাওয়ায় এ পেশায় আয়রোজগার কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে জানান অনেক কর্মকার। গ্রামবাংলার হস্তশিল্প ধরে রাখতে হলে সরকারি উদ্যোগ ও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেক কর্মকার।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন