ফুল ফুটুক আর না ফুুটুক আজ বসন্ত..
ইট-কাঠের জঙ্গল আর খোড়াখুড়ির যন্ত্রণায় রাজধানীবাসীর মনে বসন্তের পরশ বোলাতে কোথাও কোথাও ফুল ফোটাচ্ছে ফাল্গুন।
নগরে ফুলেল-সৌরভ পেতে চাইলে পরিব্রাজক ফারুখ আহমেদের সাথে বেড়িয়ে আসুন শহরের আনাচে-কানাচে।
ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, পঞ্জিকা অনুসারে আজ ফাগুন মাসের প্রথম দিন। ঋতুটা বসন্ত। নগরের সর্বত্র না হলেও কোথাও না কোথাও পাওয়া যাবে ঋতুরাজের আঁচ।
গ্রাম থেকে শহরের পথে এক চক্কর ঘুড়লেই উত্তর মিলবে। বাসন্তি দুনিয়া চোখেও পড়বে। ভোরবেলায় রাস্তায় বের হয়ে গায়ে মাখুন সুমিষ্ট বাতাস।
কবি গুরুর ভাষায়, ‘বসন্ত প্রাণের অজস্রতা বিকাশের উৎসব। আত্মদানের উচ্ছ্বাসে তরুলতা পাগল হয়ে উঠে।’
বসন্তের প্রকৃত সৌন্দর্য অনন্য-সাধারণ। এ সময় প্রকৃতি হয়ে ওঠে রঙিন। কাঠবিড়ালী মহুয়া ফুলে কুটকুট করছে। শ্বেতশিমুলে বুলবুলি আর টিয়া পাখির নাচনও বেশ লাগল।
পলাশ ফুটেছে, রক্তরাঙা পলাশ ফুলে কাঠ শালিক দলের ছোটাছুটি আর তাদের খুনসুটি মন ভোলানো। রমনা কিংবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কান পাতলে যানজটের আওয়াজ ছাপিয়ে কোকিলের গানও শুনবেন। বসন্ত মানেই কোকিলের গান, তা না হলে মনেই হয় না, ‘বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।’
গানের কথাই বলে দেয় পলাশ মানেই বসন্ত। ফাগুনের প্রথম দিনে এই ফুল দেখতে চাইলে চলে যেতে পারেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে। এ যেন পলাশ রাঙা কার্জন হল। গাছ থেকে গাছে পলাশ আর পলাশ।
বসন্তের এই সময় রাজধানী ঢাকার রমনা উদ্যানে না গেলেই নয়। গোল্ডেন শাওয়ার বা সোনাঝুরি ফুটেছে, ফুটেছে কাঞ্চন। এই নগরে আপনি চার রকমের কাঞ্চনের দেখা পাবেন। দেবকাঞ্চন, রক্তকাঞ্চন, শ্বেতকাঞ্চন ও হলুদ কাঞ্চন। বসন্তের আরেক ফুল গ্লিরিসিডিয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অপরাজেয় বাংলার কাছে গ্লিরিসিডিয়া ফুল তার মনভোলানো হালকা বেগুনি বা গোলাপি রঙা বাহার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এটা একদম ঠিক যে, গ্লিরিসিডিয়া বসন্ত উৎসবকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে চারটি গ্লিরিসিডিয়া গাছ আছে, আর আছে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে। বসন্তের শুরুতে গ্লিরিসিডিয়া তার পুস্প সৌন্দর্য মেলে ধরে থাকে অনেকদিন।
এই শহরে আরও পাবেন ব্রুনফেলসিয়া’র মেলা। যার বেশির ভাগ এখন রমনা উদ্যানে। ব্রুনফেলসিয়া তার গন্ধ আর বর্ণে মাতিয়ে রেখেছে পুরো রমনা উদ্যান। এত ভালো লাগবে যে বলে বোঝানো যাবে না। বেগুনি রংয়ে ফোটা এই ফুল পুরান হলে সাদা হয়ে ঝরে পড়ে। এর প্রচলিত ইংরেজী নামটি খুব মজার ‘ইয়েস্টার ডে, টু ডে অ্যান্ড টুমরো’।
বসন্তের অন্যতম নামকরা ফুল নীলমনি-লতা। রমনায় গেলে দেখা হয়ে যাবে। কার্জন হল, বলধা বাগান, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানসহ কোথায় নেই নীলমনিলতা। মাধবী লতা সে অর্থে খুব কম এই নগরে। রমনা উদ্যানে মাধবীলতার তিনটি গাছ আছে। আর আছে বলধাবাগান ও জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে।
অনেকে মাধবীলতার সঙ্গে মধুমঞ্জুরীকে গুলিয়ে ফেলেন। দুটি কিন্তু আলাদা ফুল। মধুমঞ্জুরী এই নগরে অনেক দেখা পাবেন, সে অর্থে মাধবীলতা খুব কম।
আরেকটা ফুলের কথা বসন্তে না বললেই নয়, সে হল সজনে ফুল। অনেকটা আড়ালে থাকলেও সজনে ফুলের সৌন্দর্য বসন্ত বাহারকে নীরবে রূপবতি করে তোলে।
বসন্তের দূত প্রানবন্ত উদাল। উদাল আছে বোটানিক্যাল গার্ডেনে, আর আছে কার্জন হলে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন