সুন্দরবনে ৩৫টি বাঘের মৃত্যু,বাঘের আত্রুমনে প্রান গেছে ২৬০ নারী পুরুষের
সুন্দরবনে গত দেড়যুগে কমপক্ষে ৩৫টি বাঘের বিভিন্ন কারনে মৃত্যু হয়েছে। আর বাঘের আত্রুমনে প্রান হারিয়েছে ২৬০ জন নারী-পুরুষ। আর বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় অন্তত ১৫টি বাঘ মারা পড়েছে গ্রামবাসীর হাতে। সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি বাগেরহাট মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামে আড়াই বছর বয়সী একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে পিটিয়ে হত্যা করে গ্রামবাসী। এছাড়া শিকারি, বার্ধক্যজনিত কারণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ২০টি বাঘের মৃত্যু হয়। এদিকে, বনে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬০ জন নারী-পুরুষ। এছাড়া আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ। তাদের অধিকাংশই বনজীবী, যারা বৈধ পাস নিয়ে বনজসম্পদ আহরণে গিয়ে বাঘের মুখে পড়ে। সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগের সংরক্ষিত নথি থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসান জানায়, ২০০১ সাল থেকে চলতি বছরের ২৮ জুলাই পর্যন্ত এই বিভাগে লোকালয়ে মোট ১৮টি বাঘ মারা পড়ে। এর মধ্যে বন সংলগ্ন খুলনার মংলা ও শরণখোলা উপজেলার লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় পাঁচটি বাঘকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে অন্তত চারটি বাঘের। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরের সিডরের জলোচ্ছ্বাসে একটি বাঘ মারা যায়। বাকি আটটি বাঘ চোরা শিকারিদের হাতে নিহত হয়। এই সময়ে বাঘের আক্রমণে একজন নারীসহ মোট ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানান ডিএফও। অন্যদিকে গত ১৭ বছরে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগে মোট ১৭টি বাঘ মারা পড়েছে। এর মধ্যে লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় আটটি বাঘ মানুষের গণ পিটুনিতে মারা যায়। ২০০১ থেকে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানে ২৩৪ জন নারী-পুরুষ বাঘের আক্রমণে মারা গেছে। তাদের অধিকাংশই বনজীবী ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদী-খালে চিংড়ি রেণু আহরণকারী। সুন্দরবনের বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণে সরকার ‘বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান ২০০৯-১৭’ বাস্তবায়ন করছে।
সুন্দবনের বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মদিনুল আহসান বলেন, এর অংশ হিসেবে বাঘ রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টি, বাঘের আক্রমণ থেকে বন সংলগ্ন লোকালয়ের জানমাল এবং মানুষের হাত থেকে লোকালয়ে চলে আসা বাঘ রক্ষায় ৮৯টি টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআর) গঠন করা হয়েছে। মানুষ সচেতন হচ্ছে বলে আগের তুলনায় এখন বাঘ কম মারা পড়ছে। গত দশ বছরে ৯টি বাঘ মানুষের হাতে মারা পড়ে। কিন্তু গত ২৩ জানুয়ারি গ্রামবাসীর হাতে মারা যাওয়া বাঘটি বাঁচাতে পারেনি ভিটিআর। এ ব্যাপারে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন দাবি করেন, বাঘটি রক্ষায় তারা প্রস্তুত ছিলেন।
কিন্তু বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর কারণে বাঘ শাবকটিকে বাঁচাতে পারেননি। এটি খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন এই বন কর্মকর্তা।লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার পেছনে ভোলা, বলেশ্বর ও পশুর নদীর বিভিন্ন স্থানে পলি জমে নদী ভরাট হয়ে যাওয়াকে কারণ বলছেন বশিরুল। তার ভাষ্যমতে, নদীতে পানি কমে যাওয়ায় সুন্দরবন সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকার লোকালয়ে বাঘ অবাধে ঢুকে পড়ছে। এই নদীগুলো খননের জন্য প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। ওই প্রকল্প সম্পন্ন হলে লোকালয়ে বাঘ আসার প্রবণতা কমে যাবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন