তীব্র শীতে অসহায় সাতক্ষীরা জেলার ছিন্নমুল মানুষেরা, বাড়ছে রোগ
ছোট বেলায় নানী-দাদীরা শীত আসলে একটি প্রবাদ বলতো ‘মাঘের শীতে বাঘও কাপে’। এ প্রবাদটি যেন বাংলাদেশের জন্য সত্যি হল। এমন শীত এর আগে কেউ দেখিনি। এরই প্রভাবে সাতক্ষীরায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে।
জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। সন্ধার পর যেন হাট-বাজার শহর অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। সকালেও শহরে মানুষের উপস্হিতি অনেক কম।
বৃহস্পতিবার ছিল সাতক্ষীরার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে এটিই ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।
এরপর প্রতিবছর তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলেও জেলায় এর নিচে তাপমাত্রা নামার তথ্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে নেই।গত ৯ দিনে শুধু সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫৬২ জন শিশু। সব মিলিয়ে প্রায় ৭ হাজার লোক শীত জনিত রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে এখানকার চিকিৎসকরা।
শীতের কারণে নানা ধরনের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে মানুষ শীতজনিত রোগ ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিতে আক্রান্ত হচ্ছে বেশী। এসব রোগের কারণে ১ জানুয়ারী থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫৬২ জন। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে আক্রান্তরা বেশীর ভাগই নবজাতক, শিশু কিশোর ও বৃদ্ধ। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে আরও শতাধিক ব্যক্তি। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। কলারোয়, তালা, আশাশুনি, দেবহাটা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরো শতাধিক শিশু কিশোর ও বৃদ্ধারা চিকিৎসা নিয়েছে।
ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে বোরো ধানের বীজতলা হলুদ বর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে। আলুর খেতে লেটব্রাইট রোগসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক আব্দুল মান্নান বলেন, আলু ক্ষেত লেটব্রাইট রোগ থেকে রক্ষা করতে কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, শীত পড়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর একটি হলো সাইবেরিয়ার বাতাস। তবে বাংলাদেশে পৌঁছানোর আগেই এই বাতাসে শীতের মাত্রা কমে যায়। কিন্তু এ সময় সাইবেরিয়ার বাতাসে যে মাত্রার ঠান্ডা থাকে সেটি এ মানুষের কাছে সহনীয় নয়। জেলায় শীতের তীব্রতা এতটাই বেশি যে রাতের বেলায় আকাশ থেকে ঝরছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। দিনের বেলায়ও কুয়াশার রেশ কাটেনি। এর সঙ্গে উত্তর দিক থেকে আসছে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। তাই গ্রামের স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসা এখন আগুনের কুন্ডলী। শীতের ছোবল থেকে বাঁচতে দিনরাত সব সময়ই তাঁরা আগুনের কাছে দাঁড়িয়ে নিজেদের রক্ষা করছেন। হাড়–কাঁপানো শীতে এখানকার জীবনযাত্রা এখন অনেকটাই স্থবির হয়ে গেছে।
চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দরিদ্র, ছিন্নমূল, ভাসমান ও স্বল্প আয়ের মানুষ। সকাল ও বিকালে শহরে সাধারণ মানুষ ও রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল কম করছে। লেপ-তোশক ও শীতবস্ত্রের দোকানগুলোয় ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে গেছে আজও যেন সারা দেশেই শীত জেঁকে বসেছে। আর কাঁপন ধরানো শীতের মাত্রা তুলনামূলক বেশি। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শীতের তীব্রতা আগামী কাল থেকে কিছুটা কমতে পারে।
তবে জেলাতে ছিন্নমুল মানুষের অবস্থা অসহনীয়। লক্ষাধীক ছিন্নমুল মনুষ গরম কাপড়ের অভাবে প্রচন্ড শীত ভোগ করছে। মধ্য রাত থেকে লতা পাতা জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে। সরকারী এবং বেসরকারী পর্যায়ে এখনো শীর্তার্থদের মাঝে তেমন গরম কাপড় বিতরণ করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের দাবী শীত নিবারণে গরম কাপড় বিতরণে বিন্তবানদের এগিয়ে আসা দরকার।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন