রোহিঙ্গা সমাধান না হলে বিশ্বে আরেক ফিলিস্তিন সৃষ্টি হবে
রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক বিশ্ব কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নিতে পারলে এ সমস্যা বিশ্বে আরেকটি ফিলিস্তিনের জন্ম দেবে। মঙ্গলবার স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে আলজেরিয়ার এক প্রতিনিধি দল সাক্ষাতে একথা জানায়।
মিডিল ইস্ট মনিটর এ খবর দিয়ে বলছে, রোহিঙ্গা সংকট জরুরি সতর্ক বার্তা দিচ্ছে এবং তা হচ্ছে ফিলিস্তিন সমস্যার অনেক উপাদানই এক্ষেত্রে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ সমস্যার দিকে দ্রুত নজর না দিলে তা বড় ধরনের মানব বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন, আলজেরিয়ার শীর্ষ দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও রাজনীতিবিদ। স্পিকার শিরিন শারমিন এ প্রতিনিধিদলের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন। এদের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল রিলিফ অর্গানাইজেশন (আইআরও)’এর চেয়ারম্যান মাহমুদ কামাল আলী বাদাবি যিনি একজন ফিলিস্তিনি, আলজেরিয়ার সাংসদ ইউসেফ আদজিসা যিনি পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন অব ওআইসি’র সদস্য স্পিকারের কাছে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আইআরও প্রথম কোনো আরব দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে ত্রাণ দিচ্ছে। স্পিকারকে বাদাবি বলেন, রোহিঙ্গাদের দেখলে আমার ফিলিস্তিনের কথা মনে পড়ে। বাদাবির পরিবার থাকেন গাজায়। তবে তিনি জার্মানির নাগরিক। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি সংকটের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকটের অনেক মিল আছে। তবে বাংলাদেশে তারা আশ্রয় পেয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধদের অব্যাহত হত্যাযজ্ঞ, নির্বিচারে গণধর্ষণ ও লুটপাট থেকে রক্ষা পেয়েছে। ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলিদের হাতে এখনো নির্যাতনের শিকার। তবে যতক্ষণ না রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নিবে ততক্ষণ এ পরিস্থিতি আরো বড় ধরনের বিপর্যয়ের দিকে মোড় নিতে পারে। যা ফিলিস্তিনে হয়েছিল। আলজেরিয়ার সাংসদ বলেন, আমি ভীত এ কারণে যে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান শীঘ্রই হচ্ছে না। এজন্যেই এ সংকট ফিলিস্তিনি সংকটের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। তা যাতে না হয় সে জন্যে বিশ্ববাসীর দ্রুত এগিয়ে আসা উচিত। তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ভূমি দখল করে ইসরায়েল ক্রমাগত আধিপত্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদ প্রতিষ্ঠার পরও বিশ্ববাসী এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি, ফলে ফিলিস্তিনিরা শরণার্থী শিবিরে আটকে থেকেছে, কারো পক্ষে অভিবাসী হিসেবে অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে।
এধরনের ঘটনা রোহিঙ্গাদের নিয়ে পুনরায় ঘটতে দেওয়া যায় না। আলজেরিয়ার সাংসদ ইউসেফ আদজিসা ঢাকায় বিভিন্ন দেশের সংসদীয় দলের মধ্যে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত। তিনি এজন্যে আইআরও’কে আইনগত উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানান। আইআরও ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা নারীদের নির্বিচারে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ওপর তথ্য সংগ্রহে বিভিন্ন এনজিও’র সঙ্গে কাজ করছে। তাদের আইনগত সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মিডিল ইস্ট মনিটরের এ প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধদের নির্যাতন সম্পর্কে ভয়ংকর তথ্য পাওয়া গেছে। হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন থেকে রোহিঙ্গা শিশুরা পর্যন্ত রক্ষা পায়নি। আইআরও চেয়ারম্যান বাদাবি বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের যে সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে তা তাদের আইনী লড়াইয়ে সহায়ক হবে। আন্তর্জাতিক আদালত বা যে কোনো স্থানে আইনী লড়াইয়ে এসব তথ্য প্রমাণ দেবে যে মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। সার্বজনীন বিচার ব্যবস্থায় তাদের এ অমূল্য তথ্যাবলী প্রমাণ করা উচিত। শুধু তাদের ত্রাণ, ওষুধ ও সাহায্য দেওয়াই যথেষ্ট নয়, একই সঙ্গে এটাও জরুরি যে তারা যাতে তাদের ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতন ও যুদ্ধাপরাধের বিচার পায়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন