কলারোয়া বাজারে নিষিদ্ধ নোট-গাইড বইয়ের ছড়াছড়ি
শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনেক আগেই নোট ও গাইড বই নিষিদ্ধ করেছে। উদ্দেশ্য মূল পাঠ্যবই পড়েই শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। জাতির কল্যাণ বিবেচনায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতও এ নিষেধাজ্ঞার পক্ষে রায় দিয়েছেন। কিন্তু তার সত্ত্বেও উপেক্ষা করে কলারোয়ার বইয়ের বাজারগুলিতে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ নোট ও গাইড বই। অথচ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নেই কোন নজরদারী।
ঢাকার বাংলা বাজারের কিছু অসাধু প্রকাশনা সংস্থার মাধ্যমে এ সব নোট ও গাইড বই ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে। এ অবস্থা বহু বছর ধরে চলে আসলেও বর্তমানে তা বেড়ে গেছে সৃজনশীল পদ্ধতির কারণে। এ পদ্ধতিতে পাঠদানে শিক্ষকরা যথেষ্ট দক্ষ নন বলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হচ্ছে নোট ও গাইড বই উপর। এ ভাবেই তারা বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত শিক্ষা থেকে অপর দিকে লাভবান হচ্ছেন অসাধু নোট-গাইড ব্যবসায়ীরা। আর সেই সাথে শিক্ষকরাও পিছিয়ে থাকবেন কেনো ব্যবসায়ীদের সেই কাঁচা টাকা পকেটস্থ করতে সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে সে সব বই পাঠ্য তালিকা ভূক্তও করছেন তারা।
নতুন বছরের শুরুতেই এবার কলারোয়া উপজেলা পৌর সদরের লাইব্রেরিগুলোতে প্রশাসনের নাকের ডগায় দেদারছে বিক্রি হচ্ছে দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে শুরু করে দশম শ্রেণীর নিষিদ্ধ ঘোষিত নোট-গাইড বই। কৌশলে পাল্টে ফেলা হয়েছে নাম আর মলাট। নোট বই বিক্রি হচ্ছে সৃজনশীল অথবা একের ভিতরে সব।
এ সব কর্মকান্ডে একদিকে মেধাশূন্য হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা, অন্যদিকে নিষিদ্ধ বাহানায় ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের কাছে বেশি দামে এ সব নোট-গাইড বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন অসাধু লাইব্রেরী মালিকরা। আর একই কায়দায় চলছে ইংরেজি গ্রামার ও বাংলা ব্যাকরণের ব্যবসা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সরকারি-বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা বই কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ সব নিন্মমানের নোট-গাইড ও গ্রামার বইয়ের নাম প্রেসক্রাইব করছেন। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যার অনুপাতে পরিমাপ হয় প্রকাশনীগুলোর ঘুষের টাকার। যত বেশি ছাত্রছাত্রী তত বেশি টাকা, অফার, উপহার।
বুধবার সকালে ইয়াসমির আরা নামের এক শিক্ষার্থীর পিতা জানান, তার সন্তান এক স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে। ক্লাসের প্রথম দিনেই শিক্ষকরা তার হাতে ধরিয়ে দিয়েছে নোট-গাইডের তালিকা।
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় তিনি বললেন, সরকার আমার সন্তানের সব বই বিনামূল্যে দিল, আর স্কুলের স্যারদের কথা অনুযায়ী পাঞ্জেরী ইংরেজি মডেল, পাঞ্জেরী গণিত মডেলসহ আমাকে ৩টি বই কিনতে ১২শত ৯০ টাকা খরচ করতে হল, কি বা করার আছে? আমরা তো জিম্মি !
প্রশাসনের উদাসীনতা আর নীরবতায় বিপাকে পড়া অভিভাবকরা সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের।
সরেজমিনে বিভিন্ন লাইব্রেরিতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কলারোয়ার লাইব্রেরি মালিকরা আগের মতো আর গোপনে নোট ও গাইড বই বিক্রি করছেন না। প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে আর শিক্ষকদের প্রেসক্রিপশনে (লেখা তালিকা অনুযায়ী) প্রকাশ্যেই চড়া দামে বিক্রি করছেন নিষিদ্ধ গাইড নোট ও গ্রামার বই। এতে বিক্রেতাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক সাংবাদিকদের জানান, আমরা কি করব, লাইব্রেরিগুলোতে বিভিন্ন প্রকাশনীর নোট ও গাইড বই বিক্রি করা হচ্ছে। আর আমরাও নোট-গাইড বইয়ের তালিকা ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে ধরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি। এর জন্য দায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ প্রকাশনীগুলোর লোভনীয় অফারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) অনুমোদিত লেখক ও প্রকাশনীর ইংরেজী গ্রামার, দ্রুত পঠন ও ব্যাকরণের তালিকা ছাত্র-ছাত্রীদের না দিয়ে লাইব্রেরি মালিকদের ইচ্ছেই চাপিয়ে দিচ্ছেন ছাত্রছাত্রীদের ওপর।
এদিকে পাঞ্জেরী গাইড কোম্পানীর কলারোয়া প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার সত্তে জানান, সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে অনেক স্কুলের কর্তাদের সাথে পৃথক মিটিং করে তাদের চাহিদা মোতাবেক এ গাইড বই কলারোয়ায় নিয়ে আসা হয়েছে। সে মোতাবেক বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পত্র পত্রিকায় লেখা লেখি করে কোন লাভ হবে না।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন