হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগেও সময় কমেছে মাত্র একটি ট্রেনে
ভৈরব ও তিতাস নদীর ওপর প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি রেলসেতু উদ্বোধন করা হয়েছে গত মাসে। সেতু দুটির কারণে স্বাভাবিকভাবেই এ রুটে চলাচলকারী সব ট্রেনের গতি বাড়ার কথা। যদিও সেতু চালুর পরও টাইম টেবিল সংশোধন না করায় সময় কমেছে মাত্র একটি ট্রেনের। আগের সময়েই চলছে বাকি ট্রেনগুলো।
এর আগে টঙ্গী-ভৈরববাজার ডাবল লাইন চালুর সময় সমালোচনার মুখে সব ধরনের ট্রেনের সময় কিছুটা কমিয়ে আনে রেলওয়ে। ওই সময়ই রেল কর্তৃপক্ষ ভৈরব ও তিতাস সেতুর কাজ শেষ হলে ট্রেনের পরিচালন সময় আরো ১০-১৫ মিনিট কমিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছিল।
রেলের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রকৌশলীরা জানান, পুরনো সেতুতে এর আগে ৪৮ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করত। সেতুগুলো সিঙ্গেল লাইনের ও দীর্ঘদিনের পুরনো হওয়ায় সেতুতে প্রবেশের কয়েক কিলোমিটার আগেই ট্রেনের গতি কমিয়ে আনতে হতো। ফলে প্রায় দুই কিলোমিটারের সেতু পেরোতে ট্রেনের সময় ব্যয় হতো অনেক বেশি। নতুন দুটি সেতু চালু হওয়ার পাশাপাশি সেতুতে প্রবেশে ডাবল লাইনের কারণে সেতুর ওপর সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার ও সেতুতে প্রবেশের আগে ডাবল লাইনে প্রায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। কিন্তু সেতু দুটি চালু হওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ট্রেনের গতি বাড়ানোর কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।
জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ও সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. আবদুল হাই বণিক বার্তাকে বলেন, পুরনো টাইম টেবিলের কারণে এখনই সব ট্রেনের রানিং সময় কমানো সম্ভব হচ্ছে না। আমরা পরিচালন সময় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছি। সিঙ্গেল লাইনের কারণে দুই সেতুর উভয় পাশে যে সময়ক্ষেপণ হতো, তা দূর হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ট্রেনগুলোর পরিচালন সময় কমানোর বিষয়েও কাজ শুরু করেছে রেলওয়ে। এর মধ্যে বিরতিহীন দুটি ট্রেনের সময় ৫ ঘণ্টা ১০ মিনিট থেকে কমিয়ে ৪ ঘণ্টা ৫০ মিনিটে নামিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে। আগামী বছরের প্রথম দিকে নতুন টাইম টেবিল কার্যকরের পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ের।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের রেলের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কর্তৃপক্ষ চাইলে উদ্বোধনের দিন থেকেই বিভিন্ন ট্রেনের পরিচালন সময় কমানো সম্ভব ছিল। শুধু টাইম টেবিলের অজুহাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পরিচালন সময় কমাতে অনীহা দেখাচ্ছে রেলওয়ে। প্রতি বছর এপ্রিলে টাইম টেবিল সংশোধনের কথা থাকলেও তাতে কয়েক মাস বিলম্ব হয়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালীসহ পূর্বাঞ্চলীয় জোনে সরাসরি রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে ১৯৩৭ সালে মেঘনা নদীতে প্রথম সেতু নির্মিত হয়। দীর্ঘ ৮০ বছর পর ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ডাবল লাইন নির্মাণের সুফল তুলতে দ্বিতীয় ভৈরব সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। পুরনো ও নতুন দুটি সেতু দিয়েই ট্রেন চলাচল করবে। একটি দিয়ে ডাউন ট্রেন, অন্যটিতে আপ ট্রেন চলাচল করবে। সেতুগুলো যাতে ডুয়াল গেজ হিসেবে ব্যবহার করা যায়, এজন্য সেতুর ওপর ডুয়াল রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের মাঝামাঝিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের বেশকিছু ট্রেনের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়। ওই সময় এ রুটের বিশেষায়িত নন-স্টপ ট্রেন সুবর্ণ ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের সময় কমিয়ে ৫ ঘণ্টা ১০ মিনিটে নামিয়ে আনা হয়। সে সময় রেল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছিল, ভৈরব ও তিতাস সেতু চালু হলে ট্রেনগুলোর সময় আরো ১০ মিনিট কমিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি পূর্বাঞ্চলের অধিকাংশ ট্রেনের সময় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এমনকি সেতু প্রকল্পের কার্যকারিতার ঘোষণাপত্রেও এ রুটে প্রায় সব ট্রেনের সময় ন্যূনতম ১০ মিনিট কমে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন