রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়েছে সন্দেহভাজন লোকদের আনাগোনা
অপহরণ, চুরি, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, ইয়াবা পাচারসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার জন্য অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের আগে থেকেই দায়ী করে আসছে স্থানীয় লোকজন। সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে বিপুল রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশে এ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা করছেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কমিটির নেতাকর্মীরা।
ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্দেহভাজন লোকদের আনাগোনা বেড়েছে। এমনকি নব্য জেএমবির বেশ কিছু সদস্য থাকার সন্দেহ করা হচ্ছে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন বলছেন, অল্প সময়ের মধ্যে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা এ দেশে ঢুকেছে। তাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঢুকানো সম্ভব হয়নি। তাছাড়া কে কোথায় আশ্রয় নিয়েছে বা ত্রাণসামগ্রী বিতরণের আড়ালে কী করা হচ্ছে তাও নজরদারির বাইরে থেকে গেছে।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ব্যাপারে যে একেবারে মনোযোগহীন, তা নয়। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু সন্দেহভাজন লোকজনকে আটক করা ঘটনা ঘটেছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের বলেন, চলমান রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত তাবলিগ জামায়াত বা অন্য কোনো নামে লোকজন এসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সাহায্যের পাশাপাশি রাতে ক্যাম্প এলাকায় অবস্থান করছে। ফলে সন্দেহভাজন লোকজনের আনাগোনা বেড়ে গেছে। ক্যাম্প এলাকায় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিকেল ৫টার মধ্যে বহিরাগত লোকজনকে ক্যাম্প এলাকা ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য মাইকিং করা হয়েছে বরে জানান তিনি।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাতে ক্যাম্পে সন্দেহজনক ঘুরাফেরার করার সময় পুলিশ ৫ জন তাবলিগ জামায়াত বেশি লোককে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর ভবিষ্যতে ক্যাম্পে না আসার মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের একটি দল গত সেপ্টেম্বরে উখিয়া টেকনাফ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের তথ্য সংগ্রহ ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। ওই দলের একজন সদস্য স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, এখানে আইএসপন্থী নব্য জেএমবির দুই শ থেকে আড়াই শ সদস্য রয়েছে। তা ছাড়া আরএসও, আল ইয়াকিনের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো রোহিঙ্গা ইস্যুকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।
রোহিঙ্গা নেতা ডা. জাফর আলম বলেন, বালুখালী ক্যাম্পে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তি ত্রাণসামগ্রী বিতরণের আড়ালে সন্দেহজনক কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় সংগ্রহ করা কঠিন।
কুতুপালং বস্তির সভাপতি আবু ছিদ্দিক বলেন, তাদের কথামতো না চললে আল ইয়াকিনের সশস্ত্র একটি গ্রুপ রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে থাকে। তিনি জানান, গত ১৭ জুন রাত ১২টায় বস্তিতে হামলা চালিয়ে আয়ুব মাঝি (৪৫) ও সেলিম (২৫) নামের দুজন রোহিঙ্গাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরদিন মধুর ছড়ার জঙ্গল থেকে তাদের জবাই করা লাশ উদ্ধার করে উখিয়া থানা পুলিশ।
ওই রোহিঙ্গা নেতা আরো জানান, আল ইয়াকিনের সদস্যরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
লেদা ক্যাম্পে সেক্রেটারি আমির হোসেন দাবি করেন, তাকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা তার পরিবার থেকে ১৫ লাখ টাকা আদায় করেছে। এ ঘটনায় জড়িত আরসার নেতা আতাউল্লাহ, আবু আম্মার আলী ও রশিদ উল্লাহসহ ১৮-২০ জনকে আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই আসামিরা টেকনাফ শরণার্থী ক্যাম্পের অস্ত্র লুট ও আনসার কমান্ডারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
উখিয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ন নুর মোহাম্মদ সিকদার সতর্ক করে বলেন, তাবলিগ জামায়াতের বেশে যারা রোহিঙ্গাদের টাকা দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন