৩২ ধারাসহ বিতর্কিত সব ধারা বাতিল করুন: সম্পাদক পরিষদ
আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাসহ বিতর্কিত সব ধারা এবং প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারাসহ বিতর্কিত ধারা বাদ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ‘সম্পাদক পরিষদ’। তাদের দাবি, তাড়াহুড়া না করে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তাবিত আইনটি চূড়ান্ত করা হোক। মঙ্গলবার বাংলাদেশের জাতীয় সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। পরিষদের পক্ষে গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠান ডেইলি স্টার সম্পাদক ও সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল মাহ্ফুজ আনাম।
বিবৃতি দেওয়ার আগে ডেইলি স্টার সেন্টারে সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে পরিষদের এক বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের হয়রানিমূলক ৫৭ ধারা বাতিল করে ওই ধারার বিতর্কিত বিষয়গুলো প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রেখে দেওয়া এবং এর পাশাপাশি আরও নতুন কয়েকটি কঠোর ধারা সংযোজন করায় পরিষদ গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। পরিষদ মনে করে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারায় ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তি প্রসঙ্গে অপরাধের ধরন ও শাস্তির যে বিধান রাখা হয়েছে, তা গণতন্ত্রের মৌলিক চেতনা এবং বাক্স্বাধীনতায় আঘাত করবে। একই সঙ্গে তা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করবে। সম্পাদক পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত আইনে সরকারি সংস্থার গোপনীয় তথ্য কেউ কম্পিউটার, ডিজিটাল যন্ত্র ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ করলে তা কম্পিউটার বা ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তি বলে সাব্যস্ত হবে। এ জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। যে শাস্তি সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড। একাধিকবার কেউ এ অপরাধ করলে তার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড। পরিষদ বলছে, আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মানহানি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর মতো বিষয়গুলো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা ছাড়াই সন্নিবেশিত ছিল।
এগুলোর ক্রমাগত অপপ্রয়োগ হতে থাকায় সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আইনটি বাতিলের জোরালো দাবি ওঠে। সে আইন পরিমার্জনার নামে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সেই চারটি বিষয়ই চার ভাগ করে প্রতিটির জন্য আলাদা শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সম্পাদক পরিষদ মনে করে, পুরোনো আইন বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের সংশ্লিষ্ট রাখা প্রয়োজন। সম্পাদক পরিষদ বলছে, আইনমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইসিটি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারা বিলুপ্তি হবে। কিন্তু ৫৭ ধারার বিষয়বস্তুগুলো প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮, ২৯ ও ৩১ ধারায় সুকৌশলে রেখে দেওয়া হয়েছে। পরিষদ মনে করে, প্রস্তাবিত এ আইন আরও কঠোর। এটি শুধু মুক্ত সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিসরকেও সংকুচিত করবে। বৈঠকে উপস্থিত আরও উপস্থিত ছিলেন মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউজ টুডের রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের এ এইচ এম মোয়াজ্জেম হোসেন, সংবাদের খন্দকার মূনিরুজ্জামান, নিউ এজের নূরুল কবীর, ভোরের কাগজের শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজাম, নয়া দিগন্তের আলমগীর মহিউদ্দিন, যুগান্তরের সাইফুল আলম, বণিকবার্তার দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ইনডিপেনডেন্টের এম শামসুর রহমান, আজাদীর এম এ মালেক, ইনকিলাবের এ এম এম বাহাউদ্দিন, করতোয়ার মো. মোজাম্মেল হক, ঢাকা ট্রিবিউনের জাফর সোবহান এবং প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন