আশাশুনিতে আনন্দ মিছিল
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পূণ:নির্ধারণে আ.লীগ নেতার লিখিত আপত্তি
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পূণ:নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রস্তাবনার বিপক্ষে লিখিত আপত্তি জানিয়েছে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের শ্যামনগরের এক নেতা।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ৩৮টি সংসদীয় আসনের সীমানা পূণ:নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রস্তাবনার মধ্যে সাতক্ষীরা-৪ আসনের পূণ:নির্ধারণের বিপক্ষে লিখিত আপত্তি জানিয়েছে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল হক দোলন।
প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর তিনি লিখিতভাবে তার আপত্তির কথা জানিয়েছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ১৪ মার্চ ১৬টি জেলার ৩৮টি সংসদীয় আসন পরিবর্তন এনে খসড়া চূড়ান্ত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। উক্ত ৩৮টি আসনের মধ্যে আশাশুনি, দেবহাটা ও কালিগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৩ এবং শ্যামনগর ও কালিগঞ্জের অবশিষ্ঠ ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পূণ:নির্ধারণ করে আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলা নিয়ে সাতক্ষীরা-৩ এবং কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলা নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন পুনর্গঠনের প্রস্তাব করা হয়।
ইতোমধ্যে এই তালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান- তালিকার বিরুদ্ধে কারও কোনো দাবি বা আপত্তি থাকলে ১ এপ্রিল বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। কমিশন দাবি বা আপত্তি শেষে ৩০ এপ্রিল সংসদীয় আসনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে বলেও জানান সচিব।
এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা আতাউল হক দোলন তার আবেদনে উল্লেখ করেছেন, ১৯৭০, ১৯৭৩, ১৯৭৯, ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬ এর ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ১৯৯৬ এর ১২ জুন এবং ২০০১ সালের নির্বাচন পর্যন্ত শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে জাতীয় সংসদের ১০৯ সাতক্ষীরা-৫ আসনটি একটি স্বতন্ত্র সংসদীয় আসন ছিল। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এই আসনটি পুনর্গঠন করা হয়। সাতক্ষীরা জেলার ৫টি আসনের একটি কমিয়ে ৪টি আসন করা হয়। শ্যামনগর উপজেলার সাথে কালিগঞ্জের কাকশিয়ালি নদীর ওপারের ৮টি ইউনিয়ন যুক্ত করে ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠন করা হয়। অপরদিকে কালিগঞ্জের কাকশিয়ালি নদীর উত্তর পাশের ৪টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলা ও আশাশুনি উপজেলা নিয়ে গঠন করা হয় সাতক্ষীরা-৩ আসন।
আতাউল হক দোলন তার আবেদনে বলেছেন- বর্তমানে শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ভোটার সংখ্যা ২,৫৮,৪৫৮ জন। অপরদিকে কালিগঞ্জের ৮টি ইউনিয়নের ভোটার সংখ্যা ১,৪৩,১৯৪ জন। বর্তমান সাতক্ষীরা-৪ আসনের মোট ভোটার ৪,০১,৬৫২ জন। এর সাথে কালিগঞ্জের আরো ৪টি ইউনিয়ন যুক্ত হলে এই আসনের ভোটার বাড়বে ৭৮,২৮৯ জন। অর্থাৎ মোট ভোটার হবে ৪,৭৯,৯৪১ জন।
অপরদিকে আশাশুনির ১১টি ইউনিয়নের বর্তমান ভোটার ২,১৪,৬৩০ জন। আর দেবহাটার ৫টি ইউনিয়নের ভোটার রয়েছে ৯৭,৯৭৯ জন। অর্থাৎ প্রস্তাবিত সাতক্ষীরা-৩ আসনের ভোটার হবে ৩,১২,৫০৯ জন। সেক্ষেত্রে দুটি আসনের ভোটার ব্যবধান হবে ১,৬৭,৪৩২ জন।
আতাউল হক দোলন উপজেলার অখন্ডতাকে প্রাধান্য না দিয়ে ভোটার ও জনসংখ্যা প্রধান্য দিয়ে ২০০৮ সালের অর্থাৎ পূর্বের সীমানা বহাল রাখার জন্য আবেদনে উল্লেখ করেছেন।
সাতক্ষীরা -৩ আশাশুনি আসনের সীমানা পুনঃ নির্ধারণে গেজেট প্রকাশ হওয়ায় আনন্দ মিছিল
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সাতক্ষীরা -৩ ও ৪ নং আসনের সীমানা পুনঃ নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করায় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার রাজনীতিবীদসহ সর্বস্তরের মানুষ আনন্দ মিছিল সহ মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি বিতরন করা হয়। মুহুর্তের মধ্যে আশাশুনিতে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা জেলার ৭টি উপজেলাকে ৫ ভাগে বিভক্ত করে কলারোয়া ও তালাকে ১নং আসন, সাতক্ষীরা সদরকে ২নং আসন, আশাশুনিকে ৩নং আসন, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা নিয়ে ৪ নং আসন ও শ্যামনগরকে ৫ নং আসন হিসাবে বিভাজন করে সংসদ নির্বাচন হয়ে আসছিল।
গত দু’টি জাতীয় নির্বাচনে সাতক্ষীরার ৫টি আসনকে ৪টি আসনে পুনঃ বিভাজন করে অন্য আসনগুলো ঠিক রাখা হলেও ৩ ও ৪ আসনে আশাশুনির ১১ ইউনিয়ন, দেবহাটার ৫টি ও কালিগঞ্জ উপজেলার (আংশিক) ৪টি ইউনিয়ন মোট ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে (সাতক্ষীরা-৩) এবং শ্যামনগরের ১৩টি ও কালিগঞ্জের ৩টি মোট ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে (সাতক্ষীরা-৪) আসন বিভাজন করা হয়েছিল। এই বিভাজনকৃত আসনে গত দু’টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এই বিভাজনের বিরুদ্ধে আশাশুনির মানুষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছিল এবং আইনী লড়াইয়েও কোন কোন রাজনীতিবীদ নেমেছিলেন। গত ১৪ মার্চ বাংলাদেশ গেজেটে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সাতক্ষীরার ৩ ও ৪নং আসনকে বিভাজন করেছে।
এতে আশাশুনির ১১ ও দেবহাটার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে নির্বাচনী এলাকা ১০৭ সাতক্ষীরা-৩ এবং শ্যামনগেরর ১৩ ও কালিগঞ্জের ৭টি মোট ২০ ইউনিয়ন নিয়ে নির্বাচনী এলাকা ১০৮ সাতক্ষীরা-৪ নং আসন বিভাজন করা হয়েছে। গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর আশাশুনির সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আনন্দ ও স্বস্তি ফিরে এসেছে।
উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ মিষ্টি বিতরণ করেছেন। এই বিভাজনের মাধ্যমে আসন দুটির সকল ইউনিয়নে উন্নয়নের সমন্বয় সাধিত হবে এবং ভোটাররা তাদের অধিকার আদায়ে সহজভাবে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে ধারনা এ উপজেলার রাজনৈতিকবীদদের।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন