একাদশ সংসদ নির্বাচন
সাতক্ষীরা-১ আসনে ভোটের আগে মাঠের লড়াইয়ে ওরা ২১ জন
সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের আগামী একদাশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনী প্রচারনা জমে উঠেছে। ভোটের আগে মাঠের লড়াইয়ে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেন্দ্রে লবিংসহ নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ থেকে শুরু করে উঠান বৈঠক,সভা সমাবেশ ও বিভিন্ন জাতীয় দিবসে প্যানা সেটে জানান দিচ্ছে নিজেদের অস্তিত্বের কথা। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ভ্যান স্ট্যান্ড পর্যন্ত সবখানে আলোচনার মূল বিষয় আগামী জাতীয় নির্বাচন। প্রার্থীদের তৎপরতার পাশাপাশি ভোটাররাও চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন বিভিন্ন দলের প্রার্থীতা নিয়ে। কারা হচ্ছেন কোন দলের প্রার্থী তা নিয়ে। এখন পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াতের একক প্রার্থী নির্বাচনী ময়দানে থাকলেও সরকারি দল আওয়ামীলীগ ও জোটের শরীকদের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন লড়াইয়ে মাঠ গরম রেখেছেন।
তবে এক্ষেত্রে আ’লীগ ও তার সমমনা দলগুলো এগিয়ে থাকলেও বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীদের কর্মকান্ড বিশেষভাবে চোখে পড়ছেনা। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর পক্ষে দলীয়-কর্মকান্ড দৃশ্যমান না হলেও বিএনপির একক প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব সাংগঠনিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। নেতা-কর্মীরা তাকেই দলীয় প্রার্থী দেখতে চান।
এক্ষেত্রে প্রার্থীদের মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে তৃনমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নানা হিসাব-নিকাশ শুরু হলেও মূলত ভোটারদের মধ্যে নানা বিষয় কাজ করছে। কারা প্রার্থী হচ্ছেন এবং কাদের ভোট দিলে নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে নিজেদের মেলে ধরতে পারবেন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। মহাজোট চাইছে আগামী নির্বাচনে আসনটি ধরে রাখতে আর ২০ দলীয় জোট চাইছে আসনটি পুনরুদ্ধারে। এক্ষেত্রে আ’লীগের জন্য আবারো থাকছে শরীক দল ওয়ার্কাস পার্টি। মহাজোটের পক্ষে আসনটি ধরে রাখার ব্যাপারে তারা শতভাগ নিশ্চিত হলেও বড় সমস্যা তাদের প্রার্থীতা নিয়ে। স্বাধীনতা পরবর্তী অদ্যবধি আসনটিতে আ’লীগের ভাল অবস্থান থাকলেও মোর্চার কারণে গতবার তারা শরীকদের ছাড় দিলেও এবার তারা চাইছে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে দলীয় প্রার্থী নিয়ে।
সর্বশেষ দশম সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের টিকিটে নৌকা প্রতীক নিয়ে শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী এ্যাডঃ মুস্তফা লুৎফুল্লাহ নির্বাচিত হলেও এবার আ’লীগ আর আসনটি তাদের ছাড় দিতে চাইছেননা। পক্ষান্তরে ওয়ার্কার্স পার্টি ফের জোটগত আসনটি ধরে রাখতে চায়।
এর আগে ৯ম সংসদ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে চারদলীয় জোটের প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে হারিয়ে নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান। আ’লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের দাবি, ফিরিয়ে দেয়া হোক তাদের নিজ ঘরানার প্রার্থীতা। কেননা,সর্বশেষ রাজনৈতিক অস্থীতিশীলতার মধ্যে আ’লীগ মহাজোটের ব্যানারে নির্বাচনে ক্ষমতায় আসলেও বর্তমানে তাদের অবস্থান ভাল এবং দেশ এখন উন্নয়নের সোপানে আরোহন করছে। এমন নানা দৃষ্টিকোন থেকে ঘুরে-ফিরে ভোটারদের মধ্যে একটাই প্রশ্ন কে হচ্ছেন দলীয় প্রার্থী। বর্তমান এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ? আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী না কি অপর শরীক জাতীয় পার্টির সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত নাকি অন্য কেউ?।
সাতক্ষীরার তালা ও কলারোয়া দুটি উপজেলার ২৪ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের ১০৫ (সাতক্ষীরা-১) আসনটি। সর্বশেষ তালিকানুযায়ী এখানকার ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৭ হাজার ৮৯১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ৮১৮ জন ও পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৩ হাজার ৭৩ জন। আসনটিতে স্বাধীনতা পরবর্তী জামায়াতের অ্যাডভোকেট শেখ আনছার আলী ও জাতীয় পার্টির সৈয়দ দিদার বখত একবার করে ও বিএনপির প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব দু’বার,ওয়ার্কাস পার্টি একবার ও বাকি সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মূলত ঐ সমীকরণ ও নানা কারণে সাতক্ষীরার এ আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে।
২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত শরিক দল ওয়ার্কার্স পাটির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহকে প্রার্থীতা দিলে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। ঐ নির্বাচনে অবশ্য বিএনপি-জামায়াত অংশ না নিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা সরদার মুজিবের সঙ্গে।
এর আগে গত ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিব আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমানের কাছে পরাজিত হন। জোট প্রথা শুরুর পর আসনটিতে বিএনপিকে জামায়াতের ওপর ভর করে আর ওয়ার্কার্স পার্টিকে আ’লীগের ওপর ভর করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ায় মূলত জোট নির্ভর হয়ে পড়ে আসনটি। তবে আসন্ন নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের বিএনপির প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব মামলা জটিলতায় অথবা যেকোনো কারণে প্রার্থী হতে না পারলে আর বিএনপির মিত্র জামায়াত তাদের জোটবদ্ধ থাকলে এ আসন থেকে তাদের প্রার্থী হতে পারেন,জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ। এদিকে বিএনপি-জামায়াত তাদের হৃত আসনটি পুনরুদ্ধারে গত চার বছরে দৃশ্যত দলীয় কোনো কার্যক্রম চালাতে পারেনি তারা। রাজনৈতিক অস্থীতিশীলতায় তাদের শ’ শ’ নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা মামলায় জড়িয়ে জেল-হাজতবাসসহ আত্মগোপন কিংবা মামলা এড়াতে প্রকাশ্য রাজনীতিতে নিরব রয়েছেন তারা।
অন্যদিকে পাওয়া না পাওয়া থেকে শুরু করে নানা সংকটে অন্তর্কোন্দলে জড়িয়ে আ’লীগও ভাল নেই। তালা উপজেলা আ’লীগের রয়েছেন পরষ্পর দু’গুরুপে। উপজেলা আ’লীগ ও তার অঙ্গ-সংগঠনের সঙ্গে ওয়ার্কার্স পার্টির এমপি’র দূরত্ব সেই প্রথম থেকে।
আসনের অপর উপজেলা কলারোয়ার চিত্রও অনুরুপ। সেখানকার আ’লীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপনের সঙ্গে রয়েছে সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টুর চরম দ্বন্দ্ব। সব মিলিয়ে আ’লীগের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও ওয়ার্কার্স পার্টির এমপি’র সাথে আ’লীগের দুরত্ব আসন্ন নির্বাচনে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তৃণমূল নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসন্ন নির্বাচনের আগে দলীয় কোন্দল নিরসন না হলে এ আসনটিতে একদিকে আ’লীগের জন্য পরাজয়ের অন্যতম কারণ হতে পারে,তেমনি শরিক দলের প্রভাবে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হতে পারেন আ’লীগের প্রার্থীরা। সে ক্ষেত্রে কপাল খুলতে পারে মহাজোটের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি কিংবা জাতীয় পাটির প্রার্থীদের।
নির্বাচনী এলাকা ঘুরে জানা যায়- আসন্ন নির্বাচনে আসনটি থেকে আ.লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে লবিং ও তৃণমূলের প্রচারণায় রয়েছেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের কেন্দ্রীয় সহ.সভাপতি সরদার মুজিব, জেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, তালা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম, কলারোয়া উপজেলা আ.লীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন, সুপ্রীম কোর্টের আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা মোহাম্মদ হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ.সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, স.ম আলাউদ্দীন মেয়ে জেলা মহিলা আ.লীগের সভাপতি লাইলা পারভিন সেজুতি, বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক কামরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম আমজাদ হোসেন, আ.লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান সোহাগ, কলারোয়া উপজেলা আ.লীগ নেতা অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মন্ময় মনির।
শরীক দলগুলোর মধ্যে রয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জাতীয় পার্টির সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা শেখ ওবায়েদুস সুলতান বাবলু, কেন্দ্রীয় জাসদের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, জেএসডি’র কেন্দ্রীয় নেতা মীর জিল্লুর রহমান ও জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা দেবাশীষ দাস।
অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট থেকে যাদের নাম প্রচার পাচ্ছে তারা হলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র প্রকাশনা সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ।
এছাড়াও আছেন নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় থাকা বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহাসচিব এড.ইয়ারুল ইসলাম।
ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ জানান, ২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী খুনসহ যে তাণ্ডব চালিয়েছিল সে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য কঠোর ভুমিকা পালন করেছেন তিনি। এমপি হওয়ার পর তালা-কলারোয়ার প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে কপোতাক্ষ নদ খনন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে অন্য বারের তুলনায় সরকার এ আসনে বেশি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে। দলীয় কোন্দল, দলবাজি, টেন্ডারবাজির সাথে নিজে না থাকা এবং এটাকে স্বাভাবিকভাবে করতে দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা চাঁদামুক্তভাবে ব্যবসা করছে, কোনো হয়রানির শিকার হয়নি।
এর আগে তালা-করারোয়ায় কালো টাকা নিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা হতো। এসব অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবোকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে। একটি সুষ্ঠু রাজনীতির ধারা ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম অব্যাহত রাখা হয়েছে। এসব কারণেই তিনি আবারও মহাজোটের মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব জানান, আগামী সংসদ নির্বাচনে তালা-কলারোয়া থেকে তিনি বিএনপি মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী। বর্তমান সরকার তাকেসহ তার নেতাকর্মীদের একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার ও হয়রানি করে এলাকা ছাড়া করেছে।
বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজতে রেখেছে সরকার। বেগম জিয়াকে জেলে রেখে কখনই নির্বাচন সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে বাংলার জনগণ ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে দাঁতভাঙা জবাব দেবে। আর সে নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত জানান, তিনি মন্ত্রী থাকা কালীন সময়ে তালা-কলারোয়ায় সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের অনুমতি নিয়েই আগামী সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মনোনয়ন পেলে তিনি আবারও নির্বাচিত হবেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী তালা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ত্যাগী নেতা শেখ নূরুল ইসলাম বলেন, এ আসনটি আ.লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের দখলে আসলেও বর্তমান ওয়ার্কাসপার্টিও এমপির কাছে উন্নয়ন নিয়ে প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির ঘাটতি আছে অনেক। এবার আর শরীক নয়, আ.লীগের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। শহীদ পরিবারের সন্তান ও আ.লীগের ত্যাগী নেতা হিসেবে সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, ১৯৭৯ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে ছাত্র রাজনীতি শুরু করি। ১৯৮৩ সালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ১৯৮৮ সালে তালা উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। ১৯৯৩ সালে জেলা কমিটির সদস্য এবং ২০০৪ সালে তালা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি হয়ে আজও সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।
২০১৪ সালে দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীক বরাদ্দের চিঠিও পান। কিন্তু ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় এবং জাতীয় পার্টি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে শেষ মুহূর্তে জোটের স্বার্থে ওয়ার্কার্স পার্টির দাবিতে দলীয় সভানেত্রী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহকে মনোনয়ন দেন। এরপর তিনি শেখ হাসিনার সাথে দেখা করলে নেত্রী তাকে আসন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে এ আসনটিতে জয় ছিনিয়ে এনে শেখ হাসিনার হাতে উপহার দিতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ নুরুল ইসলাম।
এদিকে আ.লীগের নতুন মুখ হিসেবে মাঠে কাজ করে ব্যাপক সাড়া ছেলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী (বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ) অ্যাড. মোহাম্মদ হোসেন। শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক ব্যানার ফেস্টুনে শুধু তালা-কলারোয়ার নির্বাচনী এলাকা নয় ছেয়ে ফেলেছেন পুরো জেলা। তিনি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাতক্ষীরা ঢাকাস্থ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি। বর্তমান তালা উপজেলা আইনজীবী সমিতির ঢাকাস্থ সভাপতি। ইতোমধ্যে তিনি ব্যাপক গণসংযোগ, সুধীসমাবেশ ও মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে নতুন মুখ হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের মামলা-মকদ্দমাও বিনামূল্যে দেখাশুনা করছেন।
প্রতিনিয়ত উঠোন বৈঠকের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনসম্মুখে তুলে ধরছেন। শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী যিনিই হোন তাকেই ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।
দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি আলহাজ ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান জানান, ২০০০ সালে তিনি সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে একটানা ১৫ বছর জেলা আ.লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ সালে এ আসন থেকে তিনি বিজয়ী হন। তিনি এমপি হওয়ার পর কপোতাক্ষ খনন ও শালিকা নদী খনন করেন, ১৩টি সাইক্লোন সেন্টার ভবন নির্মাণ, পাকা রাস্তা, স্কুল কলেজের নতুন ভবনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রয়াত এমপি সৈয়দ কামাল বখত সাকির একমাত্র পুত্র জেলা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কাজ করছেন। প্রতিটা দলীয় কর্মকাণ্ডে রয়েছে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ। সার্বক্ষণিক দলীয় নেতা-কর্মীদের বিপদে-আপদে খোঁজ খবর রাখেন। ২০১৩ সালে জামায়াত-শিবিরের নাশকতার সময়ও সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র রাজপথে থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন। তার দাদা ছিলেন অবিভক্ত বাংলার ডেপুটি স্পিকার। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসাবে বংশীয়ভাবে রয়েছে তাদের সুপরিচিতি ও সুক্ষাতি। সৎ ও নির্লভ মানুষ হিসাবে তালা-করারোয়ার মানুষ তাকে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগে অভিভাবক হিসাবে দেখতে চায় বলে তিনি মনোনয়নের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি বলে জানিয়েছেন।
আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন বলেন, তিনি ১৯৮১ সাল থেকে ছাত্র রাজনীতি শুরু করে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান কলারোয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন। ২০১৩ সালে জামায়াত-বিএনপির নাশকতা তিনি একক নেতৃত্বে জনগনকে সাথে নিয়ে প্রতিহত করেছেন। তরুণদের সম্পৃক্ত করে সু-সংগঠিত ও গতিশীল করেছি। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে এই সর্বপ্রথম তার নেতৃত্বে রাজনৈতিক কৌশল ও মেধা-বুদ্ধি দিয়ে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের দলীয় চেয়ারম্যান ও পৌরসভার ১২টি কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে অদ্যাবধি তালা-কলারোয়ার সকল নেতাকর্মীদের সাথে তার আত্মার বন্ধন তৈরি হয়েছে। যা আগামী নির্বাচনে নেত্রী সদয় হয়ে তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি বিজয়ী হবেন বলে মনে করেন।
দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় সৈনিক লীগের বর্তমান সহ-সভাপতি ও জেলা আ.লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সরদার মজিব বলেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। দীর্ঘদিন ধরে নিজ উদ্যোগে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সেবা করে যাচ্ছেন। উন্নয়নমূলক বিভিন্ন উদ্যোগে তার অংশগ্রহণ রয়েছে। দলের পরীক্ষিত ও বঞ্চিত নেতা-কর্মীদের সুখ-দুঃখে সব সময় পাশে আছেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ৩০ হাজার ভোট পান। নির্বাচন নিয়ে নানামুখি আলোচনা থাকলেও তালা-কলারোয়ার ২৪টি ইউনিয়নে এককভাবে তিনিই নিজস্ব সুদক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের সাথে তার আত্মার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আগামী নির্বাচনে দলের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা উন্নয়নের নেত্রী শেখ হাসিনা দল থেকে মূল্যায়ণ করবেন বলে তিনি মনে করেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন