সাতক্ষীরায় ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে ধর্ষকের যাবজ্জীবন
সাতক্ষীরায় ৫ম শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় রানা সরদার (৩৫) নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই মামলায় ওই আসামীকে অপহরণের দায়ে তাকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। তবে রায়ের সময় আসামী পলাতক ছিল। সাজাপ্রাপ্ত আসামী রানা সরদার নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বিলগঞ্জ গ্রামের পাঁচু সরদারের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়- ২০০৫ সালের ৮ জুলাই সকাল আনুমানিক সাতটার দিকে বাদির বোন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের এক দিন মজুরের মেয়ে খোরদো ব্রাক স্কুলের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়। দুপুর একটা বেজে গেলে সে বাড়ি না আসায় বাদি ও তার স্বজনরা খুঁজতে যেয়ে জানতে পারেন যে তার এক সহপাঠী খোরদো গ্রামের এক মেয়েকে একটি মোটর সাইকেলে করে নিয়ে গেছে এক ব্যক্তি। পরদিন সকাল ৯টার দিকে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চাকলা খেয়াঘাটে কপোতাক্ষ নদ পার হওয়ার সময় স্থানীয় জনতা দু’ স্কুল ছাত্রীসহ নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার রানা সরদারকে আটক করে। পরে রানাকে গণধালাই দেওয়া হয়। এ সময় দু’ স্কুল ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ২০০৫ সালের ৮ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদেরকে ভারতে ভাল কাজের প্রলোভন দেখিয়ে খোরদো বাজার থেকে মোটর সাইকেলে তুলে চাকলা খেয়াঘাট পার হয়ে যশোরের চাঁচড়ায় নিয়ে যায় রানা। পরে তাদেরকে মনিহার সিনেমা হলে সিনেমা দেখানোর পর রাতে একটি আবাসিক হোটেলে তোলা হয়। হোটেলে বাদির বোনকে স্ত্রী ও তার সহপাঠীকে শালিকা পরিচয় দিয়ে একই কক্ষে রাত্রিযাপন করে রানা সরদার। সহপাঠীকে চুলকানির ঔষধের নামে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে বাদির বোনকে গভীর রাতে ধর্ষণ করে রানা। পরদিন তাদেরকে চাকলা খেয়াঘাট হয়ে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এ ঘটনায় ওই সালের ৯ জুলাই পাকুড়িয়া গ্রামের ওই ধর্ষিতার ভাই বাদি হয়ে রানা সরদারের নাম উল্লেখ করে কলারোয়া থানায় মানব পাচার এর ৫(১) ধারা ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সালের সংশোধিত ২০০৩ এর ৯(১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রী ১০ জুলাই নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইব্রাহীম খলিলের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক সামছুল হুদা ২০০৫ সালের ২৫ আগষ্ট আদালতে এজাহারভুক্ত আসামীর নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা শেষে আসামী রানা সরদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক দু’ শিশুকে অপহরণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭(১) ধারায় ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। একইসাথে ধর্ষণের অভিযোগে ৯(১) ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। দু’টি কারাদণ্ড একইসাথে চলবে বলে আদেশে বলা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি অ্যাড. এসএম জহুরুল হায়দার বাবু।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন