সাতক্ষীরায় নোনা পানিতে ৯টি বিল
নোনা পানিতে ভাসছে সদরের ৯টি বিল। এতে করে হাবুডুবু খাচ্ছে ৩৭টি গ্রামের কৃষকের স্বপ্ন। নোনা পানিতে থৈ থৈ করছে বিলগুলো। পরিকল্পিতভাবে বিলগুলো নোনা পানি তুলে ডুবানো হয়েছে বলে অভিযোগ হাজারো কৃষকের। ফলে অজানা আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।
নোনা পানি তোলার কারণে এ বছর আমন চাষ করতে পারবেন না বলে সংশয় প্রকাশ করেছেন শতশত কৃষক। নোনা পানির কারণে এ জনপদের কৃষকরা শুনতে পাচ্ছেন আগাম জলাবদ্ধতার পদধ্বনী।
কৃষকরা জানান, পরিকল্পিতভাবে মরিচ্চাপ নদীকে হত্যা করা হয়েছে। নদীকে খাল বানানো হয়েছে। পানি নিস্কাশনের পথ নেই। যে সব বিলের পানি মরিচ্চাপ নদীতে নিস্কাশন হতো সেই সব বিলের পানি বিকল্প পথে বেতনা নদীতে নিস্কাশন করা হয়। কিন্তু সে পথও সংকীর্ণ। বর্ষাকাল সমাগত। জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় কৃষকের বুক দুরুদুরু করছে। যে বিলগুলোর বুক ছিল ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা সেই বিলে এখন পানি থৈ থৈ করছে। তবে এ পানি বৃষ্টির পানি নয়।
কৃত্রিমভাবে প্রভাবশালীরা মাছের ঘেরে নদীর নোনা পানি তুলতে যেয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। নোনা পানি ঢুকিয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বুড়ামারা, পালিচাঁদ, ঢেপুরবিল, চেলারবিল, জোড়দিয়ার বিল, খড়িলের বিলসহ ৯টি বিল ডুবানো হয়েছে। তারা এখন কৃত্রিম জলাবদ্ধতার শিকার। বেতনা নদীর আমোদখালি স্লুইস গেট দিয়ে ঈদের দুদিন আগে থেকেই এভাবে নোনা পানি ঢুকাচ্ছে প্রভাবশালীরা। এতে করে এলাকার অন্তত ৩৭টি গ্রামের কৃষকদের বুক অজানা আতঙ্কে কেঁপে উঠছে।
এ ব্যাপারে আমোদখালি স্লুইস গেট ও ব্লুগোল্ডের সভাপতি এবং ফিংড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সামছুর রহমান বলেন, ‘আমি তুলেছি নোনা পানি। নদীর জোয়ার ভাটা খেলাতে এটি করতে হয়। যখন ভারী বর্ষা হবে তখন আবার বের করে দেওয়া হবে। নদীর জোয়ার ভাটা খেলাতে কুল্যা, ধুলিহরসহ ৪জন চেয়ারম্যান আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এতে কোন কৃষকের কোন ক্ষতি হবে না, বরং উপকার হবে। ফসলী জমিতে নোনা পানি তোলার অনুমতি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে নেওয়া লাগে কীনা এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেন নি। তাছাড়া বর্ষাকাল ও আমন মৌসুম সমাগত। এমন সময় নোনা পানি তোলার কারণে বিলগুলো পানিতে ডুবে গেছে। এখন যদি পানি নিস্কাশন না হয় তাহলে লক্ষ কৃষকের কী অবস্থা হবে এবং এর দায় কে নিবে এমন প্রশ্নের কোন উত্তরও দেননি ফিংড়ির এই চেয়ারম্যান।
জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, ঈদের ছুটির ফাঁদে নদীর নোনা পানি তুলেছে ঘের মালিকরা। যখন পানি উত্তোলন করা হচ্ছিল তখন একটি মানুষও কী আমাকে জানাতে পারেনি? ঘের মালিকরা নোনা পানি তুলবে আর হাজার হাজার কৃষক ডুবে মরবে তা তো হতে পারে না। নোনা পানিতে হাজারো কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে বিষয়টি শুনলাম। আমোদখালি স্লুইস গেট বন্ধ ছিল এবং তা খুলতে মানা ছিল।
কিন্তু প্রভাবশালীরা গেট খুলে পানি উত্তোলনের এক সপ্তাহ অতিক্রান্ত হতে যাচ্ছে। পানি উত্তোলনের বিষয়টি সাথে সাথে জানতে পারলে ব্যবস্থা নেওয়া যেতো। এখন স্লুইস গেট দিয়ে আর যাতে পানি না ওঠে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কৃষকরা বলছেন সর্বনাশ যা হবার তা হয়েছে। এখন পানি না সরলে ডুবে মরতে হবে। দু’জন ঘের মালিকের জন্য হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্ন ডুবিয়েছে স্লুইস গেটের সভাপতি।
কৃষকরা এ ব্যাপারে এলাকার শতশত কৃষক তদন্তপূর্বক ফসলী জমিতে নোনা পানি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন