সাতক্ষীরায় কোন রাজনৈতিক দলের নিজস্ব জেলা অফিস নেই
সাতক্ষীরায় জামায়াত ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলের জেলা অফিস নেই। নিবন্ধন বাতিল হলে দলটির জেলা অফিসের সাইনবোর্ডও খুলে ফেলা হয়। যদিও প্রায় দশ বছর ধরে অফিসটির জানালা-দরজা বন্ধ রয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জেলা অফিসের ঠিকানা নেই। তবে শহরের প্রাণসায়র এলাকায় জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়া দলীয় জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা তাদের ব্যক্তিগত অফিসে ও বাসভবনে বসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং সভা-সমাবেশ করেন।
দলীয় সূত্র জানায়, ১০-১২ বছর আগে পলাশপোল এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের দোতলা ভাড়া নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের অফিস খোলা হয়। কিন্তু সেটিও পরে বন্ধ হয়ে যায়।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির কোনো কার্যালয়ের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর শহরের ইটাগাছা হাটের মোড় এলাকায় সড়কের জায়গায় গড়ে তোলা হয় দলটির জেলা অফিস। ১/১১-তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসে গুঁড়িয়ে দেয় সব অবৈধ স্থাপনা। তাতে জেলা বিএনপির অফিসটিও পড়ে। এরপর জেলা বিএনপির অফিস আর হয়নি। মাঝে মাঝে দলটির নেতাকর্মীদের বাসায় বসে মেটানো হয় দলীয় কাজ।
একই অবস্থা জাতীয় পাটিরও। তাদেরও নেই জেলা অফিস। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি এম এ জব্বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার বাড়িটিই দলীয় অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এরপর পার্টির জেলা সভাপতি শেখ আজহার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশুর পৃথক ব্যক্তিগত অফিসে বসে পরিচালনা করা হয় দলীয় কাজকর্ম।
শহরের মুন্সিপাড়া এলাকায় জেলা জামায়াতে ইসলামীর অফিস রয়েছে। কিন্তু অফিসটি প্রায় একযুগ ধরে তালাবদ্ধ। আশপাশের লোকজন ও ব্যবসায়ীরা জানান, ২০০৮ সালের পর মাঝে মধ্যে খোলা হতো অফিসটি। ২০১৩-১৪ সালে জেলায় জামায়াতে ইসলামী ব্যাপক তান্ডব চালায়। হত্যা, গাছ কাটা, রাস্তা কাটা, ঘর-বাড়ি জ্বালানো, ভাঙচুর, লুটপাটসহ নানা অভিযোগ ওঠে দলটির বিরেিদ্ধ। এরপর থেকে এলাকাবাসী আর জেলা জামায়াতে ইসলামীর অফিস খুলতে দেখেননি।
জেলা জাসদের দলীয় অধিকাংশ কাজকর্ম পরিচালিত হয় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় থেকে।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সাতক্ষীরা জেলা শাখারও অফিস নেই। তবে শহরের মিনি মার্কেটে ‘ঈষিকা আর্ট’ নামক একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময় মতবিনিময়ে মিলিত হন। এছাড়া আরো যেসব রাজনৈতিক দল আছে তাদের জেলা কমিটি থাকলেও নেই জেলা অফিস।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জেলা আওয়ামী লীগের স্থায়ী অফিস না থাকলেও দলটির উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটির পাশাপাশি অফিস আছে। ফলে জেলা অফিস না থাকলেও কোনো সমস্যা হয় না। যেকোনো সমস্যায় দলের জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের কাছে পাওয়া যায়। তারাও নেতাকর্মীদের সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে দেখেন।
সাতক্ষীরা জেলা শহর থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে সাগরপারে সুন্দরবনের কোলে অবস্থিত শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের বাসিন্দা মনির হোসেন জানান, রমজাননগর, কৈখালি, মুন্সিগঞ্জ, গাবুরা, পদ্মপুকুরসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে রয়েছে আওয়ামী লীগের অফিস। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয় অফিসগুলো। এছাড়াও ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতেও রয়েছে ওয়ার্ড কার্যালয়। সেখানেও সকাল-সন্ধ্যা নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে গমগম করে করে।
এক প্রশ্নের জবাবে মনির হোসেন বলেন, এখানে জামায়াত-বিএনপির কোনো অফিস চোখে পড়ে না। ২০০১ সালের পর অনেক অফিস ছিল। ২০০৮ সালের পর সেসব অফিসের অস্তিত্ব নেই।
এ অবস্থা শুধু শ্যামনগরে নয়, জেলার প্রত্যেকটি উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের অফিসগুলো ভোটার ও সাধারণ নেতাকর্মীতে ভরা থাকলেও অন্যান্য রাজনৈতিক অফিস না থাকায় শূন্যতা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স ম শহিদুল ইসলাম বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে শহরের ইটাগাছা এলাকায় জেলা অফিস ছিল। এছাড়া জেলার সব উপজেলায়ও অফিস ছিল। ২০০৮ সালের পর কিছু কিছু অফিসে নেতাকর্মীরা ওঠাবসা করতেন। ২০০৬-০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জেলা বিএনপির অফিস ভেঙে দেয়। এরপর আর কোনো অফিস জেলা বিএনপি করেনি।
জেলা জাতীয় পার্টির এক নেতা বলেন, জেলা জাতীয় পার্টির স্থায়ী কোনো অফিস না থাকলেও কার্যক্রম থেমে নেই। পার্টির কার্যক্রম পরিচালনা করতে অফিস লাগে না, লাগে ভালোবাসা। জাতীয় পার্টির প্রতি সাধারণ মানুষের রয়েছে অগাধ ভালোবাসা। সেই ভালোবাসায় আজো গ্রামের মানুষ লাঙল খুঁজে বেড়ায়। গ্রামের মাঠই জাতীয় পার্টির অফিস।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন