সাতক্ষীরায় আউশ ধানের বাম্পার ফলন
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরায় চলতি মৌসুমে আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষীরা আউশ ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছে। অন্য বছরের তুলনায় এবছর জেলায় আউশ ধানের ফলন ভালো হয়েছে। জেলায় গত কয়েক দিন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও বৃষ্টি না হওয়ায় চাষীরা দ্রুত ধান কাটার পর মাড়াই করে তা বস্তায় করে সংরক্ষণসহ বাজারে বিক্রি করতে পেরে খুশি চাষীরা। চলতি বছর বাজারে আউশ ধানের দামও ভালো পাওয়ায় বেশ খুশি চাষীরা। কম খরচ, অল্প পরিচর্যা,বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ প্রদানসহ সীমিত সময়ে ধান তুলতে পারায় সাতক্ষীরায় দিন দিন আউশের আবাদ বাঁড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার ও সেচ সহায়তা প্রদান করা হয়। একই জমিতে আবার আমনের চাষ ও করবে অনেক কৃষক। ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সুষ্টি, খাদ্য ঘাটতি হ্রাস এবং দারিদ্রতা হ্রাস পাচ্ছে জেলাতে। চলতি মৌসুমে জেলাতে ১৭ হাজার ২৩৪ মে.টন আউশ ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে সদরে ৭২২৪ মে.টন, কলারোয়ায় ৪৪৯৬ মে.টন, তালায় ৩১৬৩মে.টন, দেবহাটায় ৮৯৩ মে.টন, কালিগঞ্জে ৯১৯ মে.টন, আশাশুনিতে ১৬৯ মে.টন ও শ্যামনগরে ৩৭০ মে.টন ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা সরকারিভাবে বীজ, সার ও নগদ টাকা দেয়ার কারণে জেলাতে আউশের আবাদ ও উৎপাদন বেড়েছে।সাতক্ষীরায় খরিপ-১/২০১৮-১৯ মৌসুমে উফশী আউশ ও নেরিকা আউশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৩৪৫০ জন আউশ চাষীকে বিনামূল্যে বীজ, রাসায়নিক সার, সেচ সহায়তা ও আগাছা দমন সহায়তা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১১০ জন, কলারোয়ায় ৭৯০ জন, তালাতে ৮১০ জন, দেবহাটায় ২শ জন, কালিগঞ্জে ২৫০ জন, আশাশুনিতে ১৪০ জন এবং ও শ্যামনগর উপজেলাতে ১৫০ জন কৃষককে কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। সূত্রটি আরো জানায়, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় ৬ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ২ হাজার ৯২০ হেক্টর, কলারোয়ায় ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর, তালায় ১ হাজার ৪০ হেক্টর, দেবহাটায় ২৫০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৩১০ হেক্টর, আশাশুনিতে ১০০ হেক্টর ও শ্যামনগরে ২০০ হেক্টর। যেখানে গত মৌসুমে জেলায় আউশ আবাদ হয়েছিল ৬ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। সে হিসাবে চলতি মৌসুমে ৫৭০ হেক্টর বেশি জমিতে আউশের চাষ হয়েছে।
কৃষকেরা জানান, বোরোর তুলনায় আউশ চাষে খরচ অনেক কম। জমি চাষ, রোপণ, সেচ, সার ও কীটনাশক বাবদ বিঘাপ্রতি সর্বোচ্চ ছয় হাজার টাকা খরচ হয়। এ কারণে প্রান্তিক কৃষকরাও আউশ চাষে ঝুঁকছেন। তবে সরকারি প্রণোদনা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক কৃষক। তাদের দাবি যারা আউশ চাষ করেনি এমন লোকও সরকারি বীজ, সার ও নগদ টাকা পেয়েছে।
চাষীদের অভিযোগ প্রতি বছর আউশ ধান ঘরে তুলতে তাদের ব্যাপক বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। পানির মধ্য থেকে আউশ ধান কাটতে হয়। এতে খরচ হয় দ্বিগুণ। সরকারের দেয়া আউশের প্রণোদনা প্রান্তিক আউশ চাষীদের মাঝে বিতরণ করা হয় না। যদি আউশের প্রণোদনা উপযুক্ত চাষীদের মাঝে বিতরণ করা হয় তা হলে উৎপাদন বাড়বে দ্বিগুণ বলে কৃষকদের অভিমত।
সাতক্ষীরা জেলার কৃষকরা এবার ব্রি-ধান ৪৮, ৪৩, হাইব্রিড শক্তি-২ ও জামাইবাবু জাতের আউশ চাষ করেছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ব্রি-ধান ও হাইব্রিড শক্তি-২ জাতের আউশ চাষ হয়েছে চলতি মৌসুমে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজি আব্দুল মান্নান জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় আউশ ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বিশেষ করে সরকারের পক্ষ থেকে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের বিনা মুল্যে বীজ, সার ও সেচ সহায়তা প্রদান করায় জেলায় আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন