সহসাই ঢাকায় যাচ্ছে না মুক্তামনি!

চিকিৎসকদের একমাসের ছুটিতে বাড়িতে ফিরে ফিরেছিল রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামনি। বাড়িতে এক মাসের বেশি সময় কাটালেও সহসাই ঢাকায় ফেরা হচ্ছে না বলে জানিয়ে মুক্তামনির পরিবার।
মুক্তামনি জানায়, ‘ঢাকায় তো অনেক দিন কাটালাম। সেখানে থেকে তো কোন লাভ হচ্ছে না। ওখানে (ঢাকা) আর কি করতে যাবো। আর রাস্তার যা বাজে অবস্থা। বাড়ি আসতে অনেক কষ্ট হয়ে ছিল। আমি আর ঢাকা যেতে চাচ্ছি না। আর আব্বুর সাথে ডাক্তার আঙ্কেলদের কথা হয়েছে। তারাও একটু গরম পড়লে ঢাকায় যেতে বলেছেন।’
‘ডাক্তার আঙ্কেলদের সাথে মাঝে মধ্যে আমারও ফোনে কথা হয়। ঢাকায় থাকতে ডাক্তার আঙ্কেলরা প্রতিদিন খোঁজ খবর নিতেন। সেজন্য বাড়িতে আসার পর আঙ্কেলসহ সবাইকে অনেক মিস করি। সাংবাদিক আঙ্কেল ও আন্টিদের কথা খুব মনে পড়ে। অনেকে এখনও ফোন দেয়।’
সে আরও বলে, ‘মাঝে হাত অনেক ফুলে গিয়েছিল। এখন মুটামুটি ভালো আছি। মাঝে মধ্যে হাত ব্যাথা করে তুবুও বাড়িতে অনেক ভালো আছি। সবাই চেনাজানা মানুষ। শীতের সময় তো সকাল হলে বাহিরে রৌদে এসে খাটের উপর শুয়ে থাকি। তখন অনেকে এসে আমার সাথে গল্প করে। আমার খেলার সাথীরা আসে গল্প করতে। হিরার (যমজ ছোট বোন) স্কুলের বান্ধবীরাও আমার সাথে গল্প করতে আসে। দাদির সাথে গল্প করি। সময় সময় মোবাইলে ইসলামি সঙ্গীত শুনি। মাঝে মধ্যে টিভিতে কার্টুন দেখি। যখন কেউ না আসে তখন বাড়ির পোঁষা শালিকের সাথে গল্প করি। ও (শালিক পাখি) আমাকে মুক্তা বলে ডাবে। কখনও আপু বলে ডাকে। শালিকটা আমার ফুফাতো বোনেরা নিয়ে গিয়েছিল। আব্বু আবার ফিরিয়ে এনেছে’।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামের বাড়িতে খাটে শুয়ে কথাগুলো বলছিল রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত ইব্রাহিমের যমজ দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে মুক্তামনি।
মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ডাক্তারা আমাদের এক মাসের জন্য ছুটি দিয়েছিলেন। আমরা গত ডিসেম্বর মাসের ২২ তারিখে বাড়ি এসেছিলাম। ঢাকা মেডিকেলর বার্ন ইউনিটের সামন্ত লাল সেন স্যারের সাথে মাঝে মধ্যে কথা হয়। ওনি বলেছেন শীতের সময় হাসপাতালে একটু বেশী ভিড় থাকে। সেজন্য আমাদের একটু গরম পড়লে নিয়ে যেতে বলেছেন। আর ডাক্তার বলেছেন ফোন দিয়ে তারা ঢাকায় ডেকে নেবেন। আম্মুও (মুক্তামনি) ঢাকায় যেতে চাচ্ছে না। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে কোন উন্নতি তো দেখছি না। ঢামেকে যেয়েও লাভ হবে কিনা বুঝতে পারছি না। তারপরও দেখি কি করি বুঝতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, ‘শীতের সকালে রৌদের জন্য আম্মুকে (মক্তামনিকে) ঘরে বের করি। রৌদে শুয়ে থাকে। এছাড়া ঢাকা থেকে বাড়ি আসার সময় ড্রেসিং করা দেখিয়ে দিয়েছিল সেভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ডাক্তার যে সব ওষুদ লিখে দিয়েছিল সেগুলো নিয়ম মেনে খাওয়ানো হচ্ছে। ও (মুক্তমনি) ঢাকার চেয়ে বাড়ি আরও ভালো আছে। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধবীদের সাথে গল্প করে। বাড়ির পোষা শালিকের সাথে সারক্ষণ গল্প করে মুক্তামনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১২ জুলাই রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত মুক্তামনিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এর পর মুক্তামনির হাতে ৫ আগস্ট প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। তার হাতের ফোলা অংশ অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেন চিকিৎসকরা। পরে দুই পায়ের চামড়া নিয়ে দু’দফায় তার হাতে লাগানো হয়। ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালামের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ একদল চিকিৎসক মুক্তামনির স্কিন গ্রাফটিং (চামড়া লাগানো) অপারেশনে অংশ নেন। পরে মুক্তামনির হাত আবার ফুলে যাওয়ায়, ফোলা কমানোর উদ্দেশ্যে হাতে প্রেসার ব্যান্ডেজ বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর প্রায় পাঁচ মাস পর গত ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যার দিকে বাবা-মার সঙ্গে সে নিজ বাড়িতে ফেরে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)


একই রকম সংবাদ সমূহ

১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন

বর্ণিল সাজে সেজেছে সাতক্ষীরার ৫৮৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপ
সনাতন ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব (দূর্গাপূজা) কে কেন্দ্রবিস্তারিত পড়ুন

‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন