‘শুধু বান্ধবীই নয়, পেশাদার যৌনকর্মীদেরও তিনি ডাকতেন’
প্রেমের ফাঁদে ফেলে সুন্দরী যুবতীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন ছিল ফুয়াদের নেশা। শুধু নেশা বললে ভুল হবে, এটা ছিল তার পেশাও। গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত যৌন দৃশ্য দেখিয়ে ওই সব যুবতীকে দিনের পর দিন ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন তিনি। পুরো নাম ফুয়াদ বিন সুলতান (৩৩)। বাবা মৃত. সুলতান আহমেদ পুলিশের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরে তার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতারের পর র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই ফুয়াদ দিয়েছেন চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
গ্রেফতারের পর ফুয়াদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই বাসা থেকেই অনেক অশ্লীল পর্নো সিডি ও গোপন ক্যামেরা ও এডিটিংয়ের কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করে র্যাব।
র্যাব বলছ- শুধু বান্ধবীই নয়, পেশাদার সুন্দরী যৌন কর্মীদেরও তিনি অর্থের বিনিময়ে ডেকে নিত নিজ ফ্ল্যাটে। গোপন ক্যামেরা বসিয়ে ধারণ করতেন সঙ্গম দৃশ্য। আপত্তিকর এসব দৃশ্য দেখিয়ে দিনের পর দিন ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন ওই নারীদের। অন্যদিকে, ফুয়াদের ছিল যৌনসঙ্গী সরবরাহ করার একটি বিশেষায়িত ওয়েব সাইট। ওই সাইটে প্রবেশ করতে হতো ডলার খরচ করে। ওয়েব সাইটে দেওয়া সুন্দরী মেয়েদের ছবি দেখে পছন্দ হওয়ার পর রেট অনুযায়ী সরবরাহ করা হতো। তবে ভেন্যু ছিল তার নিজের দুটি ফ্ল্যাট।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম প্রতিবেদককে বলেন- ফুয়াদের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন এমন অনেক ব্যক্তির সেক্স দৃশ্য ধারণ করে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের অর্থ। অনেকের দৃশ্য তিনি ইন্টারনেটেও ছেড়ে দিয়েছিলেন। আবার অনেকগুলো ভিডিও দিয়ে তিনি তৈরি করেছেন পর্নো ছবি। অর্থের বিনিময়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সাইটে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করতেন তিনি। কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গোয়েন্দা নজরদারি চালানোর পর নিশ্চিত হয়ে ফুয়াদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে- ফুয়াদ রাজধানীর তিতুমীর কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স পাস করার পর শুরুতে কয়েকটি দেশি ও বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করেছেন। ছাত্রাবস্থায়ই তিনি প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনেক মেয়ের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন। হঠাৎ করে চাকরি ছেড়ে দিয়ে যৌন ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ে জড়িয়ে পড়ে।
২০১১ সালের শুরুতে উত্তরা এলাকায় বাসা ভাড়া করে যৌন কাজের জন্য ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া দিতেন।
২০১৪ সালের দিকে তিনি ইন্টারনেটের ব্যবসা শুরু করেন। ওই সময়ই তিনি তার যৌন নেশাকে পেশায় পরিণত করেন। বিভিন্ন সময় ধারণ করা ভিডিও এডিট করে টার্গেটকৃত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নিতেন মোটা অঙ্কের অর্থ। আবার অনেক ভুক্তভোগীকে দিয়ে অর্থের বিনিময়ে খদ্দেরদের মনোরঞ্জন করাতেন।
২০১৬ সালে ২টি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তিনি পর্নোগ্রাফির ব্যবসা শুরু করেন। এই দুটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তিনি বিভিন্নভাবে সংগৃহীত মেয়েদের আপত্তিকর ছবি, মোবাইল নম্বর এবং দৈহিক মিলনের বিনিময়ে নির্ধারিত মূল্য উল্লেখ করে বিভিন্ন জনকে আকৃষ্ট করতেন। বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে নিজে মুখোশ পরে অশালীন অবস্থায় মেয়েদের পাশে বসিয়ে ফেসবুকে লাইভ স্ট্রিমিং করে তার পর্নো সাইটকে জনপ্রিয় করতেন। তার ফ্ল্যাটে আসা নারী-পুরুষদের ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সরবরাহ করতেন ফুয়াদ।
সূত্র আরও জানায়- ফুয়াদ তাদের উত্তরাস্থ বাড়ির দুটি ফ্ল্যাটে দেহ ব্যবসা করালেও তার পরিবারের কেউ বিষয়টি জানত না। দুটি ফ্ল্যাটের ভাড়া হিসেবে তার মাকে তিনি প্রতি মাসে ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে আসছিলেন।
গ্রেফতারের পর ফুয়াদের দাবি- বিদেশি এমন লক্ষাধিক পর্নো সাইট থাকলেও বাংলাদেশে তিনি-ই প্রথম বাণিজ্যিক আকারে নিজেকে এই পেশায় নিয়োজিত করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন