শুকনা মৌসুমে কলারোয়ার দলুইপুর বাওড়ে চাষাবাদে সস্তিতে হাজারো কৃষক
কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের বৃহত্তম বাওড়ের মধ্যে দলুইপুর বাওড় অন্যতম। দলুইপুর-খোরদো-পাকুড়িয়া-দেয়াড়া গ্রামের একাংশ ও মিরডাঙ্গা মধ্যবর্তী বৃহত্তম এ বাওড়ে চাষাবাদের সুযোগে সস্তি ফিরতে শুরু হয়েছে গরীব কৃষকদের মাঝে। যে বাওড় দীর্ঘদিন ধরে পানিতে প্লাবিত ছিল, ছিল ব্যক্তি দখলে পুকুর, সেই বিশাল বাওড় হয়ে উঠেছে কৃষিযোগ্য ফসলী জমি।
বর্ষা মৌসুমে ওই বাওড় মাছ চাষের জন্য গুটি কয়েক ব্যক্তিদের কাছে ইজারা দেয়া থাকলেও বাওড় পার্শ্ববর্তী ফসলি ক্ষেত পানিতে ডুবে থাকায় শতশত কৃষকরা ফসল ফলাতে পারতেন না। বর্ষা মৌসুম শেষে ভরা শুকনা মৌসুমেও নিষ্কাষনের উদ্যোগ না নেয়ায় ওই সকল জমিতে পানি জমে থাকায় মাছ চাষও যেমন করা যেতো না আবার ফসল ফলানো তো অসম্ভব ছিলো। এমনই অবস্থায় চলতি শুকনা মৌসুমে সেখানকার পানি পাশের কপোতাক্ষে নিষ্কাষন হওয়ায় জেগেে উঠেছে বাওড়ের কিছু অংশ ও বাওড় পার্শ্ববর্তী জমি। আর জেগে ওঠা সেই জমিতে ফসলি আবাদ শুরু করতে পেরে মহাখুশি স্থানীয় হাজারো কৃষক।
স্থানীয়রা জানান- ২০০০ সাল বা তার আগে থেকেই ওই বাওড়ের পার্শ্ববর্তী মানুষের মৎস্য ঘের, পুকুরসহ ফসল করার উপযুক্ত জায়গা-জমি পানির নিচে মাসের পর মাস ডুবে থাকে। আনুমানিক ২০-২২ বছর ধরে স্থানীয়রা ওই বাওড় থেকে চাষাবাদ করতে না পেরে উপরোন্ত ভোগান্তিতে পড়তো। বিশেষ করে স্বল্প জমির মালিকদের অনেক কষ্টে জীবন যাপন করতে হয়েছে। বিনাশ্রম ও বিনা খরচে বাড়তি উপার্জনের সুযোগ হারিয়ে ফেলেছে সেখানকার গরীব মানুষেরা। সম্প্রতি সময়ে সেই সমস্ত স্থান থেকে পানি শুকিয়ে বা কপোতাক্ষ নদীতে ওই বাওড়ের পানি অপসারণের মাধ্যমে ফসল ও মৎস্য চাষ করার উপযোগি হয়ে উঠেছে। যদিও এখনও সম্পূর্ণরূপে সেটা হয়ে উঠেনি। তবু আশার আলো দেখনে বাওড়ের আংশিক কিছু ও বাওড় পার্শ্ববর্তী এলাকায় ধান বা অন্যান্য ফসল ফলানো সম্ভাবনায়।
স্থানীয়রা মনে করছেন- যদি দলুইপুর বাওড় পুনরায় প্লাবিত না হয় তাহলে শুষ্ক মৌসুমে সেখানে ফিরে পাবে পুরানো দিনের ফসলি ক্ষেত।
দলুইপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর আলী গাজী, তৌফিকুল ইসলামসহ কয়েকজনকে দেখা যায় ওই বাওড়ের চর এলাকায় জেগে ওঠা তাদের কিছু জমিতে ধান চাষ করতে।
পার্শ্ববর্তী এলাকার অনেকেই চাষাবাদের উৎসাহ নিয়ে চাষবাদ শুরু করেছেন।
এমনই একজন মুক্তিযোদ্ধা গাজী জানান- এলাকার বৃহত্তম বাওড়ের চারদিকে মালিকানা জমি রয়েছে কয়েক হাজার বিঘা। বাওড়ের মধ্য দিয়ে সরকারি জমি সেই তুলনায় অনেক কম। বাওড়ের পানিতে তার কয়েক শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ডুবে থাকায় চাষাবাদ করা সম্ভব ছিলো না। পৈতৃক সম্পত্তি অনুযায়ী ছোট থেকেই বিভিন্ন রকম চাষাবাদ করে সংসার চালিয়েছেন তিনি। ধান, পাট, গম, ভুট্টা, পিয়াজ, রসুন, শাক-সবজীসহ অন্যান্য ফসল, এমনকি পুকুরে মাছ চাষ করে অনেক সুখে শান্তিতে বসবাস করতেন বলে জানান তিনি।
শুকনো মৌসুমে বাওড়ের পানি নিষ্কাষন হওয়ায় শুধু সে নয় পার্শ্ববর্তী এলাকার বিভিন্ন পেশার হাজারো মানুষের উপকার হয়েছে। এমনকি বাওড়ের ফসলী জমিতে ফসল করতে খুব বেশি খরচ হয়না বলেও তিনি জানান।
বর্তমান সরকার কপোতাক্ষ নদ খনন করার পর ওই বাওড়ের পানি অপসারণ বা নিষ্কাষন হচ্ছে এবং এভাবেই যদি বাওড় কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাষনের ব্যবস্থা করে তাহলে বর্ষা মৌসুমে মাছ আর ভরা শুকনা মৌসুমে ফসল আবাদ করতে পারবেন বাওড় পার্শ্ববর্তী জনপদের মানুষ।
ভূক্তভোগিরা জানান- কপোতাক্ষের পানি স্লুইজ গেট দিয়ে যদি বাওড়ে না ঢুকতে পারে তবে বোরো আবাদ মৌসুমে ধান, শাক-সবজীসহ অন্য ফসল ফলাতে কৃষকদের বেগ পেতে হবে না। ফলে সস্তি ফিরে আসবে হাজারো মানুষের সংসারে।
পাশাপাশি তারা দলুইপুর বৃহত্তম এ বাওড়ে বিলীন হওয়া ফসলি ক্ষেত সংরক্ষণে এগিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন