রোহিঙ্গা তরুণীরা কি দেহ ব্যবসায় জড়াতে বাধ্য হচ্ছেন?
জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা তরুণীদের জোরপূর্বক স্থানীয় একটি চক্র দেহ ব্যবসায় বাধ্য করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে এসব তরুণীদের আশ্রয়ের নামে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে দেহ ব্যবসার জন্য। বিবিসির সাংবাদিক রিতা চক্রবর্তীর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব ভয়াবহ চিত্র।
রিতা চক্রবর্তী কক্সবাজারে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা তরুণীর সঙ্গে কথা বলে তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন: এক তরুণী জানায়, ক্যাম্পের বদলে তাকে একটি হোটেলে রাখা হয়। সেখানে তার সঙ্গে দাসের মতো আচরণ করা হয়।
‘তারা আমাকে খেতে দেয়, বিনিময়ে আমি কাজ করি। রাতে যখন ঘুমাতে যাই, তখন আমাকে ডাকা হয়। কে যেন ডেকে উঠায়। মুখ ঢাকা থাকায় তাদের চিনতে পারি না। সেসময় কান্না করলে তারা আমাকে মারধর করে। ছুরি দিয়ে ভয় দেখায়, মুখ চেপে ধরে। এক রোহিঙ্গা পুরুষ দেহ ব্যবসার জন্য আমাকে বিক্রি করে দেয়। কিন্তু আমি কোন টাকা পাইনি। এখন আমি কী করবো, কার কাছে বলবো? আমার তো কেউ নেই যে তাকে বলবো’, বলেন ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা তরুণী।
আরেক রোহিঙ্গা তরুণী জানায়, ‘আমার মাকে মিয়ানমারে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে এক মাঝির সহযোগিতায় আমি বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছি। এজন্য সেই মাঝি আমার সঙ্গে সবকিছু করেছে। মাঝিকে টাকা দিয়েছি, আবার নৌকায় তোলার পর সে আমার স্বর্ণালঙ্কার কেড়ে নিয়েছে, এরপরও সে আমাকে নির্যাতন করেছে।’
রোহিঙ্গাএই তরুণী জানায়, ‘আমি তাকে নিষেধ করেছি, কিন্তু সে কোন কথা শোনেনি। উল্টো সে বলেছে, তুই আমার সঙ্গে এসেছিস, আমি যা বলি তোকে তাই করতে হবে। আমি কান্না করি, এরপরও সে আমাকে ধর্ষণ করে।’
সে আরও জানায়, ‘এই ঘটনার পর আমি যখন বাংলাদেশে আসি, তখন স্থানীয় এক নারী আমাকে গ্রহণ করার প্রস্তাব দেয়। ওই নারীও পরে অনেক পুরুষের সঙ্গে আমাকে রাত কাটাতে বলে। ওইসব লোক আমাকে আশ্রয় দেয়া স্থানীয় নারীকে টাকা দিয়েছিল, কিন্তু সে আমাকে কোন টাকা দেয়নি। ওইসব লোক আমাকে ওষুধ দেয় এবং খেতে বলে। ওষুধ খাওয়ার পর আমি কোন ব্যথা অনুভব করিনি।’
বিবিসির সাংবাদিক রিতা চক্রবর্তী জানান, বর্তমানে স্থানীয় একটি গোষ্ঠী নির্যাতনের শিকার এই তরুণীদের সহযোগিতা করছে। কিন্তু তাদের মতো আরও অনেকেই এই অবস্থায় আছে, বিভিন্ন কারণে তাদের সবাইকে সহযোগিতা করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন বলেন, আমাদের কাছে এ ধরণের কোন তথ্য নেই। আমরা এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবো। যদি এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটে থাকে তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন