যেভাবে জন্ম হয়েছিল ‘ব্লু হোয়েল’ গেমটির
নেটদুনিয়ায় আপনার সরব উপস্থিতি থাকলে ইতিমধ্যে জেনে গেছেন ব্লু হোয়েল গেম সম্পর্কে বিস্তারিত অনেক কিছু। কিন্তু কেন এবং কিভাবে এই গেমের জন্ম হয়েছিল সেটা এখনও অনেকের কাছে অজানা।
বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার গেম হিসেবে পরিচিতি পাওয়া গেমটি মূলত তৈরি করা হয়েছিল হতাশাগ্রস্ত মানুষের পৃথিবী থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় করে দেওয়ার জন্য। নির্মাতার সেই উদ্দেশ্য অনুযায়ী হতাশ, বিষণ্ণতা যাদের নিত্যসঙ্গী তারাই এখন এই গেমের প্রধান শিকার।
গত কয়েক মাসে সারা বিশ্বের শত শত কিশোর-কিশোরীর আত্মহত্যার পেছনের কুশীলব ব্লু হোয়েল গেমটির উদ্ভাবক ফিলিপ বুদেকিন (ফক্স) নামের এক রাশিয়ান তরুণ। মাত্র ১৮ বছর বয়সে এফ-৫৭ নামে একটি গ্রুপ তৈরি করেন তিনি। যা সামাজিক মাধ্যম ‘ভিকে’ তে খোলা হয়েছিল। আর এই গ্রুপ থেকে প্রথমে বুদেকিন ও তার অন্যান্য অ্যাডমিনদের মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত হতাশাগ্রস্ত এবং দুর্বলচিত্তের টিনএজারদের শনাক্ত করত। এরপর নিজের পাতানো ফাঁদে ফেলে তাদের আত্মহত্যার পথে এগিয়ে নিয়ে যেত।
বুদেকিন সেইন্ট পিটার্সবার্গ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি তার উদ্ভাবিত খেলার মধ্য দিয়ে সমাজের ‘শুদ্ধিকরণ’ করছেন। তিনি গর্বের সাথে বলেন, হতাশাগ্রস্ত মানুষের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই, তাদের পৃথিবী থেকে বিদায় দেওয়াই তার লক্ষ্য।
যা শুনে বুদেকিনের মানসিক সুস্থতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে পুলিশ।
তবে, ব্লু হোয়েল গেমের মাধ্যমে যে সরাসরি আত্মহত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়- সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বুদেকিন। তিনি বলেন, এই গেমে কাউকে আত্মহত্যার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয় না। তার দাবি, গেইমটির সঙ্গে পাল্লা দিয়েই ইউজাররা নিজে থেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
কিন্তু বুদেকিন শুধু কি সমাজের ‘শুদ্ধিকরণ’ করতে চেয়েছিলেন, নাকি এই গেমের পেছনে তার অন্য কোনো কারণ ছিল? বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বুদেকিনের কৈশোর অন্য দশটা রাশিয়ান কিশোরের মত ছিল না। ছোটবেলা থেকেই তাকে তার মা বাবার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। তার একটা কারণ রয়েছে এই গেমটি তৈরির পেছনে। অন্যদিকে, বুদেকনি নিজেও মানসিকভাবে কিছুটা বিকারগ্রস্ত ছিল বলে জানিয়েছে রাশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুদেকিনের সৃষ্টি করা এই গেইমটি একবার কারো মোবাইলে ডাউনলোড হয়ে গেলে তা আর কোনোভাবেই আনইনস্টল করা যায় না। তখন খেলতে না চাইলেও অনবরত নোটিফিকেশন আসতে থাকে। তখন এক পর্যায়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও কিশোর-কিশোরীরা গেমটি খেলতে শুরু করে। প্রথম দিকে গেমটি আপনার ফোনের সিস্টেমে ঢুকে আপনার আপনার আই পি এড্রেস, মেইলের পাসওয়ার্ড, ফেসবুক পাসওয়ার্ড কনট্যাক্ট লিস্ট, গ্যালারী ফটো এমনকি আপনার ব্যাংক ইনফর্মেশান! আপনার লোকেশানও তারা জেনে নেবে। এভাবে আপনাকে কৌশলে এমনভাবে পরিচালনা করবে যে আপনি আর গেমটি থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন। কিংবা আসতে চাইলেও তারা বিভিন্নভাবে আপনাকে ক্ষতি করার হুমকি দিতে থাকবে। আর সেই পথে আপনাকে নিতে পারলে গেমটি শেষ ধাপ অর্থাৎ ৫০তম স্টেপে আপনাকে আত্মহত্যার করার কথা বলা হবে। আর এর মধ্য দিয়েই শেষ হবে গেমটি।
‘ভিকে’ নামক ওই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম’ নামের পেজের অ্যাডমিন ছিলেন বুদেকিন নিজেই। সেই সূত্র ধরেই বেশ কিছুদিন তদন্ত চালিয়ে বুদেকিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর গত মে মাসে এক গোপন বিচারের মাধ্যমে তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি সাইবেরিয়ার একটি কারাগারে কারাভোগ করছেন বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল। তবে বুদেকিন গ্রেফতার হলেও তার সৃষ্টি করা এই গেইম সারাবিশ্বে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে আগের মতই ছড়িয়ে পড়ছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
কলারোয়ায় ফুটবল টুর্নামেন্টে ফাইম একাদশ, গদখালি ও পাথরঘাটা সেমিতে
কলারোয়ায় ৮দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ১ম, ২য় ও ৩য় খেলায় ফাইমবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার কেঁড়াগাছিতে প্রীতি ফুটবল ম্যাচে মাধবকাটিকে হারালো স্বাগতিকরা
কলারোয়ার কেঁড়াগাছিতে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচে সাতক্ষীরা সদরের মাধবকাটি ফুটবলবিস্তারিত পড়ুন
সাতক্ষীরায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ
সাতক্ষীরায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখবিস্তারিত পড়ুন