বায়ুদূষণে শীর্ষ নগরীর তালিকায় পঞ্চম ঢাকা
বায়ুদূষণের ভিত্তিতে বিশ্বের শীর্ষ নগরীগুলোর তালিকায় উঠেছে ঢাকার নামও। তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছে ঢাকার নাম। এ ছাড়া অ্যামোনিয়া দূষণে বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী।
যুক্তরাষ্ট্রর মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার স্যাটেলাইটের তথ্য বিশ্লেষণ করে বায়ুদূষণের জন্য দায়ী ওজোন, অ্যামোনিয়া, ফরমিক এসিড ও মিথানল- এই চার বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রার তথ্যর ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা করা হয়েছে।
গবেষকদের তালিকায় ‘বিশ্বে ভয়াবহ দূষিত বাতাসের নগর’ হিসেবে প্রথমেই রয়েছে থাইল্যাণ্ডের রাজধানী ব্যাংকক, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চীনের রাজধানী বেইজিং। তালিকায় তৃতীয় স্থানে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস, চতুর্থ স্থানে ভারতের দিল্লি এবং পঞ্চম স্থানে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা রয়েছে বলে বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সায়েন্স’ এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নাসা, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের একদল গবেষকদের তিন বছরের বেশি সময় ধরে করা ওই গবেষণাপত্র মার্চে ‘অ্যাটমোসফেরিক কেমিস্ট্রি অ্যান্ড ফিজিক্স’ বা এসিপিডিতে প্রকাশিত হওয়ার পর পরিবেশ বিজ্ঞানীদের জন্য নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।
নাসার উপগ্রহ ‘অরা’য় স্থাপন করা ট্রপোসফেরিক ইমিশন স্পেকট্রোমিটার বা টিইএস যন্ত্রের মাধ্যমে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয় এই গবেষণার তথ্য সংগ্রহর কাজ।
কোটি মানুষের বসবাসের স্থান বিশ্বের মেগাসিটিগুলোর ১৮টির প্রতিটিকে ১৬ দিন পর পর প্রায় একই স্থানীয় সময়ে অতিক্রম করে যায় অরার ট্রপোসফেরিক ইমিশন স্পেকট্রোমিটার বা টিইএস। এই পর্যবেক্ষণে বায়ূদূষণে চার বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রা নির্ণয় করা হয়, যা একই সময়ে পৃথিবীর পরিবেশে সাথে সঠিকভাবে তুলনা করা হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফুসফুসের রোগসহ শ্বাসপ্রশ্বাসের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস সবচেয়ে বেশি দিল্লির বাতাসে; যা স্বাভাবিক ক্ষতিকর মাত্রার থেকে ৭৩ দশমিক ৩ ভাগ বেশি।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঢাকার বাতাসে অ্যামোনিয়া রয়েছে স্বাভাবিক ক্ষতিকর মাত্রার থেকে ৫১ দশমিক ৬ ভাগ বেশি। আর তৃতীয় স্থানে থাকা কলকাতার বাতাসে অ্যামোনিয়ার এই মাত্রা ৪৭ দশমিক ১ ভাগ বেশি।
খোলা স্থানের মলমূত্র ও কৃষিকাজে ব্যবহার করা সার থেকে সৃষ্ট অ্যামোনিয়া বাতাসে মিশে বায়ুবাহী ক্ষতিকর কণা তৈরি করে, যাতে হতে পারে ফুসফুসের রোগ।
ওজোন গ্যাস দূষণে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি, যেখানে প্রতি একক আয়তনে ৩২ দশমিক ২ পার্টস বিলিয়ন ওজোন গ্যাস রেকর্ড করেছেন গবেষকরা। ঢাকায় করাচির প্রায় অর্ধেক পরিমাণে ( ১৭.১ পার্টস পার বিলিয়ন) ওজোন রয়েছে।
ওজোন গ্যাস সাধারণত ট্রপোস্পিয়ার অঞ্চলে পাওয়া যায়। গ্রিন হাউসের অন্যতম এই উপাদান বায়ুমণ্ডলের স্তর ভেদ করে সূর্যালোক সরাসরি পৃথিবীতে আসতে দেয়। ভূ-উষ্ণতার জন্য অন্যতম গ্যাস হিসেবেই ওজোনকে দেখা হয়।
মূল প্রতিবেদনে ১৮টি মেগাসিটির মধ্যে উদাহরণ হিসেবে নাইজেরিয়ার রাজধানী লাগোস ও মেক্সিকো শহরকে তুলে আনা হয়েছে।
প্রতিবছর প্রায় প্রায় তিন শতাধিকবার নাসার ‘অরা স্যাটেলাইটে’ ভূমি থেকে ২২ শ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা বলছেন, প্রাপ্ত তথ্যর ওপর ভিত্তি করে শহরগুলোর মৌসুমি ও বার্ষিক বাতাসে দূষণের পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে।
‘সায়েন্স’ এর প্রতিবেদনে গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মিরিয়াম মার্লিয়ার বলেন, বায়ুদূষণের জটিল বিষয়গুলো এই গবেষণার মাধ্যমে বোঝা গেছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করবে। ‘
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন