‘প্রতিটি এলাকায় সতর্ক থাকতে হবে’
‘প্রশংসায় মন গলা স্বভাব আমার না’
ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশ এভাবে এগিয়ে যাবে এটা অনেকে মেনে নিতে পারে না। আমাদের শত্রু বাইরের না। ঘরের শত্রুই বিভীষণ।’
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
বিগত সময়ের সহিংস আন্দোলন ও জঙ্গিবাদ সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এ ধরনের চ্যালেঞ্জ আরও মোকাবেলা করতে হবে। আমার সব সময় চিন্তা হয়, যখনই বাংলাদেশর মানুষ ভালো থাকে, স্বস্তিতে থাকে, উন্নতি হয় তখনই যেন ষড়যন্ত্র আরও বেশি শুরু হয়।’
‘তারা ২০১৩, ১৪, ১৫ এর মতো আবারও কিছু করবে না এ আশঙ্কা থেকেই যায়। আবার তারা আঘাত করবে বা চেষ্টা করবে।’
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ আগস্ট যখন ঘটেছিলো তখন বাংলাদেশ খাদ্যাভাব ছিলো না, সব কিছু মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে এসেছিলো। তখন প্রথম বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগের বেশি হয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ এগিয়ে যাবে, এটা অনেকে ভাবতেই পারেনি। ঠিক তখনই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিলো।’
তিনি বলেন, ‘এখনও আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। হ্যাঁ, বিশ্বে বাংলাদেশ প্রশংসিত হচ্ছে। কিন্তু, ওই প্রশংসা শুনে মন গলা এটা আমার স্বভাব না। সেখানে সন্দেহের কিছু আছে কিনা তা আমাদের দেখতে হবে।’
‘৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় থেকে অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে তাদের কাছে ক্ষমতাটাই সব। দেশ গোল্লায় যাক। কিভাবে দেশের ক্ষতি করতে হবে, সেই চিন্তায় থাকেন তারা।
জঙ্গি দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হলি আর্টিজানের ঘটনার পর কোনো এক দেশের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য ছিলো এ ঘটনা বাংলাদেশ সামাল দিতে পারবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দিয়েছিলো। কিন্তু আমরা সেটা পারলাম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। তাতে মনে হলো কেউ কেউ খুশি হতে পারলো না।’
‘এরকম হবে আমরা তাদের কাছে আকুতি করবো, অমুকের কাছে যাইবো, এটা চাইবো। কিন্তু, এখনো তারা আমাদের চিনতে পারে নি। আমরাও পারি।’
হলি আর্টিজানে নিহত পুলিশ সদস্যদের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুইজন পুলিশ জীবন দিয়ে গেছে, কিন্তু তারা অনেকগুলো মানুষকে বাঁচিয়ে গেছে, দেশের সম্মান বাঁচিয়ে গেছে।’
‘এটা হচ্ছে কর্তব্যবোধ যে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও দায়িত্ব পালন করেছেন।’ আইন-শৃঙ্খলা যেন সুন্দর থাকে, সেদিকে নজর দিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।
সন্ত্রাস, জঙ্গি ও মাদক নির্মূলে জনগণকে সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণেই মূল শক্তি। জনগণের মাঝে একটা সচেতনতা সৃষ্টি করতে পেরেছি।’
পুলিশের প্রয়োজন অনুসারে যানবাহন সরবরাহ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছয় হাজার ৮৫৬টি গাড়ি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাহিনীতে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পদ সংখ্যা বৃদ্ধি, পদোন্নতি, যানবাহন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং স্বরাষ্ট্র সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পুলিশের মহা-পরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম বিভাগের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্তি ডিআইজি হাবিবুর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন-অর-রশীদ, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পুলিশের অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান প্রমুখ।
‘প্রতিটি এলাকায় সতর্ক থাকতে হবে’
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রতিটি এলাকায় এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তাকে এভাবে মৃত্যুবরণ করতে হবে, এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য না। প্রতিটি এলাকায় এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবে হবে।’
সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার না হওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোট খাট ঘটনা হলেই দেখি হাউকাউ শুরু হয়ে যায়। একজন সংসদ সদস্যকে হত্যা করার পর কোনো মানবাধিকার সংগঠন বা কেউ এ ব্যাপারে কোনো শব্দ করে না।’
‘যারা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে হত্যা করলো, মসজিদে আগুন দিলো মানুষ পোড়ালো তাদের বিরুদ্ধে অত বেশি সোচ্চার হতে দেখি না।’
গত ৩১ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এর আগে, লিটনের গুলিতে একটি শিশু আহত হওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়, তার লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হয়।
গাইবান্দায় সংসদ সদস্যকে হত্যা দুঃখজনক উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার বাসা থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। কেন পুলিশ তুলে নিয়ে যাওয়া হলো? তার বিরুদ্ধে একটা অপবাদ দিয়ে তার লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হলো।’
‘মনে হলো একেবারে পরিকল্পিতভাবে ছেলেটাকে মৃত্যুর মুখে ঢেলে দেওয়া হলো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গাইবান্দার সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ি, গোবিন্দগঞ্জ থেকে শুরু করে সাঘাটা এলাকায় ২০১৩ সালে চারজন পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো। পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন, ফিসপ্লেস খুলে ফেলা হয়েছিলো। এ ধরনের ঘটনা যেখানে ঘটেছিলো সেখানে একজন সংসদ সদস্যের নিরাপত্তার দিকে দৃষ্টি না দিয়ে, কোন পত্রিকায় কি লিখলো সেটা দেখে সঠিক খবর না নিয়ে এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হলো? যার জন্য একজন সংসদ সদস্যকে জীবন দিতে হলো।’
‘এটাও ষড়যন্ত্রের অংশ। প্রতিটি এলাকায় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে, আস্থায় রাখতে হবে। তাদের নিয়ে সব পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, উন্নতমানের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জামের ব্যবস্থা অবশ্যই আমরা করবো।
পুলিশের প্রয়োজন অনুসারে যানবাহন সরবরাহ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছয় হাজার ৮৫৬টি গাড়ি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাহিনীতে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পদ সংখ্যা বৃদ্ধি, পদোন্নতি, যানবাহন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং স্বরাষ্ট্র সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন- পুলিশের মহা-পরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক
সেখানে আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্তি ডিআইজ হাবিবুর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন-অর-রশীদ প্রমুখ।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পুলিশের অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন