শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরার সর্বাধুনিক অনলাইন পত্রিকা

পোকামাকড়ের ঘর বসতি

পোকামাকড়ের ঘর বসতি
কবি শাহাবুদ্দীন

সরু সরু চোখ মেলে সে
তাকিয়ে থাকে অপলক-
শুঁয়োপোকাগুলো কিলবিল করে
সজিনার ডালে,
গুটিসুটি হয়ে মিলেমিশে আছে
যেন একই বসতঘরে।
সে ভাবে, কীটপতঙ্গেরও
বাসা থাকে, নিয়মনীতি থাকে-
বাবুই দোল খায় নিজেরই আবাসে
কুটিল যে সাপ
তারও তো কোটর আছে
উঁইপোকা গড়ে তোলে মাটির ঢিবি
পিঁপড়ারা হেঁটে চলে একই সারিতে।

কিন্তু ওরা?
ওদের নেই কেন কোনো বসতঘর?
ওরা যে মানুষ নয়- টোকাই,
অপাংক্তেয় কীটপতঙ্গের পংক্তিতে।
ওরা আজ থাকে ফুটপাতে
তো কাল থাকে রেলস্টেশনে।
এরপরও আছে পুলিশের তাড়া
আছে লাঠিপেটা
নগর উন্নয়নের নামে
ওদের উচ্ছেদের মহোৎসব।
শুধু ওরা কেন-
ওই যে সাপুড়ে পাড়ার ছেলে-মেয়েরা
এতোবড় দেশজুড়ে ওদের
নেই কোনো ঠিকানা।
পথের ধারে যে মেয়েটা
ফুল বিকোয় রোজ
ওরাও বসতছাড়া-
থাকে ওদের পাশেই।
বড্ড ভালো লাগে তাকে
যখন হাসে টোল পড়া গালে।
একদিন বড়লোকের ছেলেগুলো
ললিপপের লোভ দেখিয়ে
কী যেন করেছিল ওর সাথে
ও ঠিক জানেনা সেটা কী-
তবে শুনেছে খুব জঘন্য
লজ্জার মতো কিছু
যার জন্যে ওকে হাসপাতাল
অব্দি যেতে হয়েছিল
ছি! কী বাজে ওরা- থুঃ!

টোকাই বলে মা ও’র
নাম রেখেছে টোকন।
যেদিন ওই বড় বাড়ি থেকে
ময়লা আবর্জনা ফেলেছিল ওর গায়ে
মা বলেছিল-দেখিস
তুই-ও একদিন বড় হবি।
কিন্তু না-ও বড় হতে চায় না।
ফুটপাতে শুয়ে টোকন ভাবে-
‘আমরা তো অনেক বড়- অনেক।
তারাভরা পুরো আকাশটা
আমাদের বাড়ির ছাদ
সারা পৃথিবীর জমিনটা
আমাদের উঠোন।
শুঁয়োপোকার বসতি তো
ওই সজিনা গাছ পর্যন্ত
ও’র থেকে আমরা অনেক ঢের’।

সেদিন পথের ধারের
ছাল ওঠা কুকুরটা মরে গেল
যার সাথে ও ভাগাভাগি
করে খেতো ডাস্টবিনের পচা
ফেলে দেওয়া খাবার-
খুব কষ্ট হয়েছিল সেদিন ও’র।
বড় একটা গাড়ি এসে
তুলে নিয়ে গেল কুকুরটাকে।
আচ্ছা! ও মরে গেলে কী হবে?
এমন বড় গাড়ি আসবে?
দূর ছাই, ও’র মন বলে-
‘তা কেন- তুই তো কুকুর নস
তুই যে টোকাই- কীটেরও অধম’।

যেবার বন্যা হয়েছিল ভীষণ
হেলিকপ্টারে করে ত্রাণ এসেছিল
কিন্তু ওদের ভাগ্যে জোটেনি কিছুই।
বড় বড় মানুষের বড় বড় কারবার
ও’র ছোটো মাথায় ঢোকেনা এসব।
শীতের রাতে ফুটপাতে শুয়ে
এতটুকু কষ্ট হয়না ও’র
যেন রাতের তারার আলোয়
আস্তে ধীরে ওম হয়ে
ওঠে ও’র শরীর।
এত বড় বড় দালানকোঠা
বড় বড় গাড়ি- টাকা-পয়সা
কিছুই চায়না ও
চায় শুধু এক মুঠো
ভাপ ওঠা গরম ভাত।

অনেক বড় ঢাউস একটা
চাঁদ উঠেছে আজ।
ও শুনেছে একে নাকি বলে,
‘ লাল নেকড়ে চাঁদ’।
কেনো যে এমন নাম তা
সে জানেনা- জানতে চায়ও না।
তবে ও শুনেছে আজ পূর্ণিমা
শীতের এ পূর্ণিমাতে চাঁদ
অনেক বড় হয়-বেশি আলো দেয়।
বিশাল চাঁদের আলোয়
আজ ও’র শীত লাগেনা।
ও ভাবে, মানুষের কাছে মানুষ আর
পোকামাকড়ের পার্থক্য থাকলেও
ভগবানের কাছে দুই-ই সমান।
তাইতো শীতের রাতে
ওদের ওম দিতে চাঁদটাকে
বড় করে দেয় ভগবান।

কিছুতেই ঘুম আসে না
আজ ও’র।
ঢাউস চাঁদটার দিকে তাকিয়ে
অবাক বিস্ময়ে ভাবে ও
সভ্যতার নামাবলী গায়ে মেখে
পৃথিবীটা বড্ড উলঙ্গ আজ!

সংগ্রহ : আমাদের সিনিয়র স্টাফদের রিপোর্টার শেখ আমিনুর হোসেন।

একই রকম সংবাদ সমূহ

‘ভূয়া’ সংবাদিকদের দৌরাত্মে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে

সংবাদপত্রকে বলা হয় সমাজের দর্পণ বা আয়না। এই আয়নায় সমাজেরবিস্তারিত পড়ুন

এবার অভিনয়ে পরিচালক শিমুল সরকার

নজরুল ইসলাম তোফা:: পরিচালক শিমুল সরকার। সময়ের তরুণ জনপ্রিয় একজনবিস্তারিত পড়ুন

আজব এক ব্যক্তি কাঁচা মাছ, মাংস ও লতাপাতা খেয়ে স্বাভাবিক চলে

নজরুল ইসলাম তোফা:: জীবনে চলার পথে বহু রকম মানুষের সাথেবিস্তারিত পড়ুন

  • নিরবতা
  • দাও ফিরিয়ে সে অরণ্য লও এ নগর
  • পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তির কারণ ও সমাধানের পথ
  • পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন বনাঞ্চলে আগুন : দায় কার?
  • মনের সুখই আসল সুখ, অপরকে সুখী করানোই প্রকৃত সুখ…
  • আধুনিকতা, মানবিকতা…
  • রাজনৈতিক কৌশলে গুল, গুঞ্জন ও গুজবের মতো বদঅভ্যাসে লিপ্ত মানুষ
  • ‘পুলিশের উবার ডাকতে নেই…’
  • ঢাবিতে ডেঙ্গুর বংশবিস্তার রোধ করুন
  • সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মাদকমুক্ত করুন
  • কোনও সুস্থ মস্তিষ্কপ্রসূত বক্তব্য এটি হতে পারে না
  • তরুণ প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফেসবুক, ইউটিউ, গুগল ব্যবহারে!