আরো খবর...
নানা সংকটে সুন্দরবন রক্ষা কার্যক্রম, ৭৬টি ক্যাম্পে ১৭৮ বনরক্ষী !!
আধুনিক নৌযান থেকে শুরু করে আগেআনয়াস্ত্র,পর্যাপ্ত জনবলসহ নানা সংকটে এক প্রকার খুড়িয়ে চলছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষা কর্যক্রম। ৬ হাজার ১৭ কিঃমিঃ সুন্দরবনের ৭৬ টি ক্যাম্পের মাত্র ১৭৮ জন বনরক্ষী দিয়ে চলছে এর রক্ষাণাবেক্ষণ। আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত এসব বনরক্ষীদের নেই রেশনিং ও ঝুঁকিভাতা,সর্বনি¤œ বেতন স্কেল নিয়ে বনের গহীনে অবস্থানরতরা ভোগ করতে পারেননা সরকারি ছুটিগুলো। নানা সংকট ও সমস্যায় কারো মৃত্যু হলেও তাদের পরিবারকে দেয়া হয়না কোন বেতন-ভাতা। এমন শত সংকট ও প্রতিকূলতায় মারাতœকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সুন্দরবন রক্ষা কার্যক্রম।
বন বিভাগ জানায়, ৬ হাজার ১৭ কিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের স্থলভাগের পরিমাণ ৪ হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার। আর জলভাগের পরিমাণ ২ হাজার ৮৭৪ বর্গ কিঃমিঃ। পূর্ব ও পশ্চিম এ দু’ভাগে বিভক্ত সুন্দরবন বনবিভাগে মোট ৪টি রেঞ্জ রয়েছে। সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে শতাধিক খাল ও নদী প্রবাহিত। এ সকল খাল-নদী পরিদর্শনে ৭৬টি ক্যাম্প থাকলেও সব মিলিয়ে বন প্রহরী রয়েছেন মাত্র ১৭৮ জন। বিস্তীর্ণ সুন্দরবনের নিরাপত্তায় নিরস্ত্র অল্প সংখ্যক বন রক্ষীদের দিয়ে পাহারা কার্যক্রম তাই মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সূত্র জানায়- পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সুন্দরবন অংশে কর্মরতদের ঝুঁকি ভাতা দেয়া হয় ২ লাখ টাকা। সুন্দরবনের পশ্চিম বনবিভাগ খুলনা রেঞ্জের ভোমরখালী টহল ফাঁড়ির জনৈক বনকর্মী বলেন, বনের ভেতর নিয়মিত টহলের জন্য তাদের কোনো আধুনিক নৌযান নেই। এক ফাঁড়ি থেকে অন্য ফাঁড়িতে দ্রুত কোনোভাবে পৌঁছানো যায় না। বনের ভেতর সব জায়গায় কাজ করেনা মোবাইল মোবাইল নেটওয়ার্ক।
তিনি আরো বলেন- নিয়মিত বনদস্যু,বাঘ ও কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে তাদের সুন্দরবনে কাজ করতে হয়। তারপরও ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও নানা প্রতিকূলতায় অনেক কাজ তারা করতে পারেন না। এসময় দুঃখের সাথে তিনি আরো বলেন, দায়িত্ব পালনকালে ঝুঁকি ভাতা তো দূরের কথা, ভালো কাজেরও কোনো স্বীকৃতি পাননা তারা। অনুপ্রেরণার অভাবে কখনো কখনো তারা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন। ভুক্তভোগী বনকর্মীরা জানান,পুলিশ বিভাগের ন্যায় শতভাগ ফ্যামিলি রেশন, ঝুঁকি ভাতা,কর্মরত অবস্থায় নিহত পরিবারের জন্য এককালীন অনুদান এবং সুন্দরবনসহ অন্যান্য বন বিভাগের জন্য শতকরা ৩০ ভাগ দুর্গম ভাতা পাবার জন্য সংশ্লিষ্ট বন মন্ত্রণালয়েএর আগে লিখিত আবেদন করা হলেও সাড়া না পাওয়ায় খানিকটা হলেও হতাশ তারা।
বাংলাদেশ বনপ্রহরী কল্যাণ সমিতির সুন্দরবন পশ্চিম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সৈয়দ অলিয়ার রহমান মিলন সাংবাদিকদের জানান,বন রক্ষীদের দাবিতে করা আবেদনটি বন মন্ত্রণালয় পার হয়ে লাল ফিতায় আটকে গেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে।
পশ্চিম সুন্দরবনের বিভগীয় বন কর্মকর্তা বলেন,বন বিভাগের স্টাফদের দাবির বিষয়টি বিভিন্ন সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ধীর গতিতে কপিলমুনি হাট-বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ
বাংলাদেশ সরকার ও এডিপি’র অর্থায়নে আরবান সেন্টার স্কীম সিটি রিজিয়ন ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট(সিআরডিপি) আওতায় পাইকগাছার কপিলমুনি হাট-বাজার উন্নয়নে বিভিন্ন ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের নির্দিষ্ট মেয়াদ ১ বছর আগে শেষ হলেও অর্ধেক কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। শম্ভুক গতির অপরিকল্পিত কাজের সর্বশেষ অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আগামী বর্ষা মওসুমের আগেও তা শেষ হবেনা। অন্যদিকে বাজার অভ্যন্তরে সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্থাপনা বাচাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসাজসে স্থানীয় তহশীলদার পানি নিষ্কাষণের ড্রেন নির্মাণে গলি রাস্তাগুলো ব্যবহার করছে। কোথাও কোথাও ড্রেণ গুলি স্বর্পাকৃতিতে করা হচ্ছে। আর এমনটি হলে দক্ষিণ খুলনার অন্যতম প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র কপিলমুনি তলিয়ে ফের সেখানে স্থায়ী জলাবদ্ধতার পাশাপাশি ভবিষ্যতে রাস্তা নির্মাণে চরম সংকটের আশংকা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সচেতন এলাকাবাসী।
জানা গেছে- এলজিইডি খুলনার তত্বাবধানে ৭ কোটি ১৭ লক্ষ ৪৩ হাজার ২ শ’ ৮৪ টাকা ৮৯ পয়সা বরাদ্দের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ পায় খুলনার রুপসা উপজেলার যোগীহাটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আইইএল এন্ড এফটি(জভি)। গত ৫ জুলাই ১৬’ থেকে শুরু করে কাজটি শেষ করার কথা ছিল গত ৪ জানুযারী ১৭’ কিন্তু নির্দিষ্ট মেয়াদের প্রায় ১ বছরেরও বেশী সময় অতিবাহিত হলেও প্রথম থেকেই মন্থর গতি,পরিকল্পনাহীনতা,অনিয়ম থেকে শুরু করে নানা সংকটে এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অর্ধেক কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্পের আওতায় কপিলমুনি হাট-বাজার উন্নয়নে জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন ও সুষ্ঠু চলাচলের জন্য কংক্রিট সড়ক নির্মানের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। তবে শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি বাজারের বিভিন্ন স্থানে একযোগে খুঁড়ে রাখলেও একই গতিতে কাজ করতে নাপেরে মূলত পিছিয়ে পড়ে তারা। বিশেষ করে গত বর্ষা মওসুমে কাজ করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ময়লা পানির-কাদার উপর ঢালই’র কাজ করে। কখনো কখনো বৃষ্টির মধ্যেও ঢালাইয়ের কাজ করে। এতে কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তাদেও বিরুদ্ধে। পক্ষান্তরে চলতি শুষ্ক মওসুমে এক সাথে বিভিন্ন এলাকা খুঁড়ে মাটি উঁচু-নিচু করে রেখে দক্ষিণ খুলনার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রটির স্বাভাবিক গতিতে মারাতœক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। বাজারের ইৎারাদারের অতিরিক্ত চাপ ও অনুপ্রবেশে প্রতিবন্ধকতার দরুণ ইতোমধ্যে ঐতিহ্যবাহী বাজার থেকে পার্শ্ববর্তী কাশিমনগর এলাকায় চলে গেছে মাছ কাটা ব্যবসায়ীরা। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতি ও রবিবার সাপ্তাহিক হাটবারে বিভিন্ন জেলাসদর থেকে আগত মালামালসহ হাটুরিয়াদের দূর্ভোগের যেন আজ আর অন্ত নেই। অনেক পাইকাররা হাটে আসাই বন্ধ করে দিয়েছে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর পাশাপাশি কাঁচামালের উর্দ্ধগতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছেনা চলতি উৎপাদন মওসুমেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে- প্রথম দিকে সদরের পালপাড়া ও কালীবাড়ি সড়ক দু’টির নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিলেও ব্যস্ততম কলেজ রোড,পুলিশ ফাঁড়ি রোড,প্রেস ক্লাব রোড,কাপড় পট্টি থেকে অধিকাংশ রোড গুলির কোন কাজই শুরু করতে পারেনি তারা। আর কোন কোন সড়কে কাজ শুরু করলেও তা শেষ না কওে আরেকটি শুরু করেছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এমন খাময়োলীপনা ও পরিকল্পনাহীনতায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন কপিলমুনিবাসী। ভ্যান,সাইকেল থেকে শুরু করে মালবাহী কোন বাহনই ঢুকতে পারছেনা বাজার অভ্যন্তরে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজের এমন ছন্নছাড়া গতিতে মোটেও ভাল নেই কপিলমুনির মানুষ। তারা এর প্রতিকার চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে কপিলমুনির হাট ইজারাদার মাসুম মোড়ল এপ্রতিনিধিকে বলেন,অধিক টাকায় হাট ইজারা নিয়ে রীতিমত বিপাকে পড়েছেন তিনি। অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজের অগোছালো ব্যবস্থাপনায় হাটের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ায় কোন ভাবেই আসল টাকা বাঁচানো তার জন্য দূরুহ হয়ে পড়েছে। আসন্ন বর্ষা মওসুমের আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ এগিয়ে নিতে না পারলে খানা-খন্দকে পানি জমে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পাওে বলেও আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে উন্নয়ন কাজের মন্থর গতির সুযোগে সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দখলে শুরু হয়েছে মহোৎসব। সরকারের সকল প্রকার নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে যে যার মত আরসিসি বিল্ডিং নির্মাণ করছেন। খোলা চাঁদণীতে রুম-রুম করে ঘর নির্মাণ করে চলে গেছে স্থায়ী দখলে। একসনা বন্দোবস্ত নিয়ে সরকারি সম্পত্তিতে অনেকেই নির্মাণ করেছেন পাকা ইমারত। হাটের জায়গা দখল করে কেউ নির্মাণ করেছেন ঘরের সিঁড়ি। বন্দোবস্তের বাইওে এস দখল করেছেন যাতায়াতের মূল রাস্তা। দীর্ঘ দিন পর বাজার উন্নয়নে চলমান কাজের স্বার্থে ও প্রত্যক্ষ্য-পরোক্ষাভাবে দখল ও দখল কাজে সহযোগিতা করতে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে তাই মুখ খুলছেননা কেউ।
এ ব্যাপারে কপিলমুনি হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা পরিষদেও সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কওছার আলী জোয়াদ্দার বলেন- অবৈধ দখলদারদেও উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সঠিক সময়েই তার বাস্তবায়ন হবে।
এ ব্যাপারে কপিলমুনি ভূমি অফিসের তহশীলদার জাকির হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,এবিষয়টি তার দেখার কথা না। বিষয়টি তার হলে অবশ্যই ইউএনও স্যার তাকে জানাতেন। সব মিলিয়ে উন্নয়ন কাজই অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে কপিলমুনিবাসীর ভাল থাকার। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাজের যথাযথ তদারকিহীনতাকেই দায়ী করছেন কেউ কেউ। তারা আগামী বর্ষা মওসুমের আগেই প্রকল্পের সমুদয় কাজের দাবী জানিয়েছেন।
পাইকগাছায় আ.লীগ নেতা কতৃক মহিলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে উত্যক্ত॥ প্রতিবাদ করায় স্বামীকে মারপিট
পাইকগাছায় শিক্ষা কর্মকর্তা স্ত্রী শোভা রায়কে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় স্বামী বাবলু ঘোষকে মারপিটের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নিজেকে আঁড়াল করতে অভিযুক্ত আ’লীগ নেতা ও কলেজ শিক্ষক ময়নুল ইসলাম(৪৪) একই আদালতে একটি পাল্টা মামলা করেছেন। এদিকে একজন মহিলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে উত্যক্ত’র প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে তার স্বামীকে মারপিট-টাকা ছিনতাই ও পরে অভিযুক্ত কতৃক একই আদালতে পাল্টা মামলার ঘটনায় উপজেলাব্যাপী বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে পাল্টা-পাল্টি মামলার ঘটনায় শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘিœত হওয়ারও আশংকা করছেন কেউ কেউ।
এদিকে শিক্ষা কর্মকর্তা শোভা রায়কে উত্যক্ত ও পরে পরিকল্পিতভাবে তার স্বামী বাবলু কুমার ঘোষকে মারপিটের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় রীতিমত বিপাকে পড়েছেন ঐ কর্মকর্তা দম্পতি বলে দাবি করেছেন তারা। তাদের দাবি,একদিকে উত্যক্ত ও মারপিট এরপর বিচার চাওয়ার অপরাধে অভিযুক্ত ময়নুল গং তাদের মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। এমনকি পরের দিন অপরাধীরা সংঘবদ্ধভাবে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় তাদের চরিত্র নিয়ে মিথ্যাচারের ঘটনায় খানিকটা হলেও মূষড়ে পড়েছেন তারা। শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি,সংখ্যা লঘু পরিবারের সদস্য ও একজন সরকারি চাকুরে হয়ে যেখানে তাদের নিজেদেরই বিচার চাওয়ায় নাকাল অবস্থা সেখানে সাধারণ মানুষরা তাদের কাছে কতটা অসহায়।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয়রা জানায়,খুলনার ডুমুরিয়ার বাবলু কুমার ঘোষের স্ত্রী শোভা রায় পাইকগাছা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর থেকে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এসময় উপজেলার ৬ নং ওয়ার্ডের বাতিখালী গ্রামের সরদার হারুন অর রশিদের ছেলে স্থানীয় ফসিয়ার রহমান কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংষ্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ও থানা কৃষকলীগের সদস্য সচীব ময়নুল ইসলাম দীর্ঘ দিন যাবৎ উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শোভা রায়কে বিভিন্ন অঙ্গ-ভঙ্গির মাধ্যমে উত্যক্ত করে আসছিলেন। শোভা রায় এর প্রতিবাদ করলে ময়নুল আরো বেশি করে তাকে উত্যক্ত করতে থাকেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা শোভা রায় বলেন, তিনি পাইকগাছা উপজেলায় যোগদানের পর থেকে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানমালায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এসময় অনেক অনুষ্ঠানে অভিযুক্ত ময়নুল ইসলামও সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করতেন। যার এক পর্যায়ে বিভিন্ন সময় ময়নুল নানা অঙ্গ-ভঙ্গির মাধ্যমে তাকে উত্যক্ত করতে থাকেন। সর্বশেষ ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠামালা চলাকালে তিনি তার উদ্দেশ্যে অনুরুপ উত্যক্ত করলে তার কড়া প্রতিবাদ করেন তিনি। এরপর ২৭ মার্চ ময়নুল গং সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে তার স্বামী বাবলু ঘোষের উপর হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটান। ঘটনায় ঐদিনই প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস কক্ষ ও পরে আ’লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডঃ সোহরাব আলী সানার মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষকে নিয়ে একাধিকবার বসাবসির মাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হলেও সর্বশেষ তারা কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি।
স্বামীর উপর ঘটে যাওয়ার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, ২৭ মার্চ রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে তার স্বামী বাবলু ঘোষ উপজেলা অফিসার কোয়ার্টারের বাসায় যাওয়ার সময় পথিমধ্যে উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে পৌছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ময়নুল ও তার আরেক সহযোগী স,ম আঃ ওহাবের নেতৃত্বে আরো ৩/৪ জন অজ্ঞাত পরিচয় যুবক তার পথরোধ করে আকস্মিক মারপিট ও গালিগালাজ করতে থাকেন। বাবলু তার প্রতিবাদ করায় তারা চাকু ও লোহার রড দিয়ে তাকে মারতে উদ্যত হয়। এক পর্যায়ে বাবলুর চোখের নিচে চাকু বসে যায়। একই সময় লোহার রডে তার নাকের হাড় ভেঙ্গে গুরুতর আহত হয়। এক পর্যায়ে তারা তার পকেট থেকে ৮৫ হাজার ৬ শ’ টাকা বের করে নেয়। এসময় বাবলুর আতœচিৎকারে স্বাক্ষীসহ অন্যান্যরা এগিয়ে এসে তাদের বাঁধা দিলেও তারা নিবৃত হয়নি। এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসলে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। এসময় তারা তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে অবস্থার আরো অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল শোভার স্বামী বাবলু ঘোষ বাদী হয়ে পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দঃবিঃ ৩৪১,৩২৩,৩২৪,৩২৬,৩০৭,৩৭৯ ও ৫০৯ ধারায় ময়নুলকে প্রধান করে একটি মামলা করেন। যার নং-২১১/১৮।
অন্যদিকে মূল ঘটনাটিকে আঁড়াল করতে পরের দিন ৯ এপ্রিল ময়নুল ইসলাম একই স্থান ও অনুরুপ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে একই আদালতে বাবলু ঘোষ ও স্ত্রী শিক্ষা কর্মকর্তা শোভা রায়সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে একটি পাল্টা মামলা করেছেন। যার নং-২১২/১৮। ধারা দঃবিধির ৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬(২)।
এদিকে একজন শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে অশোভন আচরণ ও তার প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে স্বামীকে মারপিট ও সর্বোপরি মূল ঘটনা থেকে নিজেকে আড়াল করতে তাদের নৈতিক ও চারিত্রিক স্থলনের স্পর্ষকাতর মিথ্যা অভিযোগে মামলার ঘটনায় রাজনৈতিক,শিক্ষাসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে আবার বিষয়টিকে ভিন্ন চোখে চোখে দেখছেন। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ঘটে যাওয়া অনাকাংখিত ঘটনায় তারা উপজেলার সাবিংক শিক্ষার স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কোন প্রকার বিরুপ প্রভাব পড়ারও আশংকা করছেন তারা।
সম্পত্তি দখলে পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধে মারপিট ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ
তালার কানাইদিয়ায় অবৈধ সম্পত্তি রক্ষায় পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মারপিট ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ হয়েছে। কলেজ ছাত্রকে তার পিতার সাথে জড়িয়ে অব্যাহত হয়রাণির ঘটনায় ঐএলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনে স্থানীয় প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে যে, তালার জালালপুর ইউনিয়নের কানাইদিয়া এলাকার জনৈক মীর আক্কাজ আলী জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে একই এলাকার শেখ হাফিজুর রহমান ও তার ছেলে কপিলমুনি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শেখ সাব্বির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা অভিযোগ ও মামলা করে আসছেন। এক পর্যায়ে সম্প্রতি মীর আক্কাজ আলীর মেয়ে আরিফা আক্তার পাটকেলঘাটাস্থ শ্বশুরালয় থেকে পিত্রালয় কানাইদিয়ায় বেড়াতে আসলে মামলার ইস্যু তৈরী করতে হাফিজুরদের সাথে অহেতুক কথা কাটাটিতে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা তাদের উচ্ছেদে মারপিট ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে তালা থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
হাফিজুর রহমান জানান- মীর আক্কাজ আলীসহ তার অন্যান্য ৩ ভাই মোনতাজ,রাজ্জাক ও একরাম মীর তার মায়ের মৃত্যুতে মামার বাড়ির সম্পত্তি প্রাপ্ত হয়ে এর আগে তার মামা আলী আহম্মেদ শেখ ওরফে টুকার নিকট বিক্রি করে দেন। পরে আক্কাজ আলী বিল এলাকা থেকে ৫ শতক সম্পত্তি কিনে বাড়ি থেকে দখল করে সেখানে বাড়ি করে বসবাস করে আসছেন। এর আগে এসংক্রান্ত একটি মামলা সাতক্ষীরা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। যার নং-৮৪/১২।
তিনি আরো অভিযোগ করেছেন যে- মামলায় টিকতে তারা বিভিন্ন সময়ে তার কলেজ পড়–য়া ছেলেকে জড়িয়ে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক মিথ্যা মামলা করেছেন।
তারা এব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন