আ.লীগ দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছে
দেশের সব অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরে :সিইসি
বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছে। দেশের সব অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। বর্তমান ইসি আজ বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বেশি স্বাধীনতা ভোগ করে। যা আওয়ামী লীগ সরকারই দিয়েছে।
বুধবার সকাল ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত সংলাপে অংশ নেয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে সূচনা বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন। এসময় কমিশনের অন্য চার সদস্য এবং ইসি কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ উপদেষ্টা পরিষদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্যসহ দলের ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়। সূচনা বক্তব্যে ইসির সচিবও আওয়ামী লীগকে প্রসংশা করেন।
সিইসি তার স্বাগত বক্তব্যে দেশের প্রাচীন ও ঐতিহাসিক দল আওয়ামী লীগের আত্ম প্রকাশ থেকে এখনকার কর্মকাণ্ড এবং এ দলের নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরে প্রায় নয় মিনিট বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, যে কোনো দলের সঙ্গে সংলাপের আগে সংশ্লিষ্ট দলের প্রোফাইল তুলে ধরা হয়। এর ধারবাহিকতায় আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রসঙ্গ তিনি তুলে ধরছেন।
সিইসি বলেন, দেশের সব অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কূটনৈতিক সমাধান অর্জনের মধ্যে দিয়ে তিনি বিশ্ব মাতৃকার আসনে সমাসীন হয়েছেন।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মত নিবেদিত নেতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলণের সফল নেতারা এখানে রয়েছেন। সত্তরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বহু অর্জন, বহুমুখী, গণমুখী সকল আন্দোলন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ফসল বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।
নূরুল হুদা বলেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ শুনে, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। বঙ্গবন্ধুর হুকুমে এবং এখানে যারা উপস্থি হয়েছেন, তাদের অনেকের অনুপ্রেরণায়, নির্দেশে, পরিচালনায় আমরা তরুণ সন্তানরা বুকে গ্রেনেড ও কাঁধে অস্ত্র নিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। ঐতিহাসিক সব সফল আন্দোলন আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে।
সিইসি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি দেশকে পূনর্গঠনের দায়িত্ব কাঁধে নেন। এক বছরের কম সময়ের মধ্যে দেশকে একটি সংবিধান উপহার দেন; কূটনৈতিক সাফল্যে বহু দেশের আনুকূল্য, সমর্থন অর্জন করেন। নির্বাচন কমিশন গঠন করেন, ১৯৭৩ সালে জাতিকে প্রথম সংসদ নির্বাচন উপহার দেন এবং স্বাধীন দেশে প্রথম সংসদীয় সরকার গঠন করেন।
নূরুল হুদা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সময়ে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ রেকর্ড অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট কালো রাতে জাতির জনককে সপরিবারের হত্যার মধ্যে দিয়ে জাতির জীবনে কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর আওয়ামী লীগকে যে কঠিন সময় পার হতে হয়েছে, সে কথাও সিইসি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ১৯৮১ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো দলটির সভাপতি নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। বহু বাধা বিপত্তি, প্রতিকূলতা, ভয়ঙ্কর সব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দলকে সুদৃঢ় অবস্থানে নিয়ে আসেন তিনি। ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদে নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম বিশ্বের প্রথম নারী বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে তিন দফা সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়, রায় কার্যকর করা হয়।
সিইসি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছে। উন্নয়নের প্রতিটি খাতে, শিক্ষা, সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার, পরিবেশ সংরক্ষণে আজ বিশ্ব ধরিত্রীর মুকুট প্রধানমন্ত্রীর মাথায়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কূটনৈতিক সমাধান অর্জনে বিশ্ব মাতৃকার আসনে সমাসীন প্রধানমন্ত্রী।
সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের আইন-বিধি বিধানের প্রায় সবগুলোই আওয়ামী লীগের আমলে তৈরি। বর্তমান ইসি বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বেশি স্বাধীনতা ভোগ করে, যা আওয়ামী লীগ সরকারই সম্ভব করেছে।
উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখানে উপস্থিত অনেকের কাছ থেকে আগের অনেক পর্যায়ে শিক্ষা, দীক্ষা, সাহস, অনুপ্রেরণা পেয়েছি। অনেকের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করেছি। আজ ভিন্ন পরিস্থিতিতে ইসির দায়িত্ব পালনে আপনাদের সহযোগিতা, পরামর্শ, সুপারিশ কীভাবে নেয়া যায়; সাহস পুঁজি করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে সে সহযোগিতা পেতেই আজকের এ সংলাপের আয়োজন। নির্বাচন কমিশনের সামনে এগিয়ে যেতে ও সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সুপারিশ কার্যকর ভূƒমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সিইসি নূরুল হুদা।
এদিকে, গত রবিবার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসে সিইসি নূরুল হুদা দলটির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গুণগান করেন। তিনি বলেন, ব্যক্তি হিসেবে এবং দলনেতা হিসেবে জিয়াউর রহমান চার বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। তার হাত দিয়েই দেশে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ পায়। বিএনপির সঙ্গে সংলাপে ওই বক্তব্যের কারণে ক্ষমতাসীন দলের অনেকের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সিইসিকে। তবে সংলাপে সিইসির বক্তব্য ভুলভাবে ব্যাখ্যার অবকাশ থাকায় বিতর্ক এড়ানোর জন্য কমিশনকে সতর্কতার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেয়া হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন