দীর্ঘ ১০ বছরেও মেরামত হয়নি সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ
সিডরের ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও সম্পূর্ণরূপে মেরামত হয়নি পটুয়াখালী, বাগেরহাট ও পিরোজপুরের ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ। জনদুর্ভোগ এড়াতে ও উপকূল রক্ষায় দ্রুত স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
তবে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উপকূলীয় জেলাগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রাস্তাঘাট ও বাঁধ মেরামতসহ বিভিন্ন কাজ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপকূলীয় বাঁধ সুরক্ষা প্রকল্পের কর্মকর্তা।
‘হঠাৎ করেই দেখলাম পানিতে তলিয়ে যাচ্ছি। তখন বাচ্চাকে কোলে নিয়ে সাঁতার কাটতে শুরু করলাম আমি। ভাবলাম নিজের ঘরটাই জায়গাটাই নদী হয়ে গেছে।’ এভাবেই সিডরের সময়কার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিচ্ছিলেন এক নারী।
শুধুমাত্র তিনি নন, পটুয়াখালীর উপকূলবর্তী মানুষগুলো এখনও শিউরে ওঠেন সেই প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় সিডরের ভয়াবহতার কথা স্মরণ করলে। সিডরে বিধ্বস্ত হয় জেলার ৫৫ হাজার ঘরবাড়ি, ৯০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ও রাস্তাঘাট। প্রাণ হারান ৬৭৭ জন মানুষ। কিন্তু সিডরের দীর্ঘ ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও উঁচু বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করায় চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন কয়েক লাখ মানুষ।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, সিডরের পর অনেকদিন কেটে গেলেও এখনও নির্মিত হয়নি বাঁধ। সামনে এমন ঘটলে কী হবে সেটা ভেবে আমরা উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি আমরা।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান মো. আবু বকর সিদ্দীকি বলেন, বেড়িবাঁধগুলো যদি সংস্কার করা না হয় তবে আবার কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে মানুষের কষ্টের সীমা থাকবে না।
পিরোজপুরে প্রলয়ঙ্কারী সিডরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় ফসলি জমি, দুমড়ে-মুচড়ে যায় হাজার হাজার বাড়ি-ঘর, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ ও কালভার্ট। কিন্তু আজও সেগুলো মেরামত ও পুন:নির্মাণ না হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে উপকূলীয় এলাকার স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এলাকাবাসী বলেন, সিডরের সময় এখানে যেসব রাস্তা ও ব্রিজ ভেঙে যায় সেগুলো এখনো মেরামত করা হয়নি। এতে আমাদের যাতায়াতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
অন্যদিকে বাগেরহাটের উপকূলবর্তী এলাকার মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও রয়ে গেছে সিডরের তাণ্ডবের চিহ্ন। তাই যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় উঁচু ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এই এলাকার ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, এক এক করে আমাদের বাড়ি-ঘর ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা একটি টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।
বাগেরহাটের সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, যতই টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হোক না কেন, নদী শাসন করা না হলে এই বাঁধ টিকবে কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
তবে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উপকূলীয় এলাকায় রাস্তাঘাট ও বাঁধ নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে বলে জানালেন উপকূলীয় বাঁধ সুরক্ষা প্রকল্পের (সিইআইপি) কর্মকর্তা।
সিইআইপি’র সুপারভাইজার প্রকৌশলী শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, বেড়িবাঁধের ৩০ শতাংশ কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এবছরের ওয়ার্কিং আওয়ারেই আমরা কাজটা শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।
২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বর সিডরে বলেশ্বর নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। এতে ৯০৮ জনের প্রাণহানি হয়।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন