‘ডটার অব বাংলাদেশ’ নিহত পাইলট কলারোয়ার মেয়ে পৃথুলা
পৃথুলা রশিদের ছিলেন সোমবার বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজের সহকারি পাইলট। বেঁচে আসা নেপালি যাত্রীরা জানিয়েছেন, ১০ জন নেপালি যাত্রীকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে নিরাপদে সরিয়ে নেন তিনি। তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করতে করতেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয় পৃথুলা রশিদের।
জীবনের বিনিময়ে বীর নারী পাইলট প্রিথুলা রশিদ বাঁচিয়ে গেছেন ১০ নেপালি যাত্রীর প্রাণ। এজন্য নেপাল ভিত্তিক বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে এই বীর নারীকে ‘ডটার অব বাংলাদেশ’ আখ্যা দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে, সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের ইলিশপুর গ্রামের কাজল হোসেনের মেয়ে পৃথুলা রশিদের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ স্বজনেরা। খুব শীঘ্রই ছুটি নিয়ে বাড়ি আসার কথা ছিল তার। কথা ছিলো আসছে আমের মৌসুমে বাড়িতে এসে আম খাবে।
এদিকে, নেপালে বিমান দূর্ঘটনায় নিহত সহকারি পাইলট পৃথুলা রশিদের গ্রামের বাড়ি কলারোয়ার ইলিশপুরে শোকের মাতম চলছে। যদিও পৃথুলার জন্ম-বেড়ে ওঠা ঢাকা ও দেশের বাইরে। আর তাই এখানে তাঁর বসবাস ছিলো না। তবু পূর্বপুরুষদের পৈত্রিকভিটা বলে কথা।
বাবা-কাজল হোসেন ও মা রাফেজা বেগমের একমাত্র সন্তান পৃথুলা রশিদ। গ্রামের বাড়িতে যেয়ে আম খাওয়া হলো না তার। ফুটফুটে হাস্যোজ্বল মেধাবী তরুণী নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ইউএস বাংলা ইয়ারলাইন্সের সহকারি পাইলট ইলিশপুর গ্রামের কাজল হোসেনের মেয়ে পৃথুলা রশিদ (২৪) এর। সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ স্বজনেরা। এলাকায় চলছে শোকের মাতম। মার্চে ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল তার। আর আসা হলো না। খবর আসে লাশের। তার স্মৃতি আবেগ তারিত করছে পরিবারের সদস্যদের। জাতীয় সম্মদ হারালো তারা। এ ক্ষতি পূরণ হবার নয়। বলে শেষ হবে হবে না কথা বার বার মূছা যাচ্ছিন অনেকে। বাকরুদ্ধ তারা।
নিহতের চাচা-কামাল হোসেন ও সহিদুল আলাল বলেন, কোটি টাকা খরচ করে গড়ে তোলা জাতীয় সম্পদে রুপ নিয়েও শেষ রক্ষা হলোনা। চলে গেল পরপারে। সবার কাছে দোয়া চান তারা।
নিহতের চাচী বলেন, এমাসের গ্রামের বাড়িতে আম খেতে আসা কথার ছিল তার আর আসা হলো না। ছুটিতে এসে ঘুরে ফিরে বেড়াবে স্বজনদের বাড়িতে অপেক্ষায় ছিল এক সময়ের খেলার সাথি চাচাতো বোনেরা ছিল অপেক্ষায় আর ফিরে আসেনি আসবে না কোন দিন চলে গেছে পরপারে।
এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বোনের জন্যে অপেক্ষায় ছিল তারা বলেন, বোন উম্মে ইলমা ও উম্মে জান্নাতি।
উল্লেখ্য, লন্ডন গ্রেজ এন্টার ন্যাশন্যাল থেকে ও এবং এ লেবেল অর্জনকারী ঢাকা নর্থ স্উাথ বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে এমবি এবং আমিব্যাং এভিয়েশন থেকে উড্ডয়ন ড্রিগ্রি নিয়ে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে অফিসার পদে সহকারি প্ইালট হিসাবে ইউএস বাংলা ইয়ারলাইন্সের যোগদান করেন। একমাত্র মেয়ে সন্তানেেক হারিয়ে নি:স্ব সর্বশান্ত তার পরিবার।
পৃথুলা রশিদের মাতা রাফেজা বেগম আশা এনজিতে সহকারি পরিচালক হিসেবে চাকরিরত বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে, মৃথুলা রশিদের মৃত্যুতে গভীর শোক জানানোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন স্টাটাস দিয়েছেন তার পরিচিত জন ও স্বজনরা। তেমনি একজন আলমগীর হোসেন। তার দেয়া ফেসবুক স্টাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
ইউএসবাংলার কো পাইলট পৃথুলা রাসিদ সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার ইলিশপুরের মেয়ে
যিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে প্রজ্জ্বলিত বিমানের লেলিহান শিখার মাঝে নিজের জীবন বিপন্ন করে
১০ জন বিমানযাত্রীকে বাঁচানোর মহৎ প্রচেষ্টা করেছেন। এজন্য বৈমানিক প্রিথুলা রাসিদ এর প্রতি আন্তরিক দোয়া ও অভিনন্দন। তিনি “ডটার অফ বাংলাদেশ” খেতাব পেয়েছেন। তাঁর এই বেদনাদায়ক চলে যাওয়া সত্যিই আমাদের সকলকে গভীরভাবে মর্মাহত ও শোকাহত করেছে!!!!”!! বৈমানিক প্রিথুলা রাসিদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং তাঁর বিদেহি রূহের মাগফেরাত কামনা করছি। মহান আল্লাহতালা মৃত্যুবরণকারি ও আহতদের সবাইকে শান্তিতে রাখুন। আমিন।
“বিমানের সবচেয়ে ভয়ংকর সময় হচ্ছে ল্যান্ডিং এবং টেকঅফ এর সময়। এই সময় ও অনেকে সিট থেকে উঠে ক্রুদের কাছে চা কিংবা কফি চাইতেও দ্বিধাবোধ করে না। বিদেশে থাকার সুবাদে প্রতি বছরই 1/2 বার প্লেনে চড়তে হয়। খুব কাছ থেকে দেখেছি বিমান যাত্রিদের উশৃংখলতা। দেশ থেকে যাওয়ার সময় স্বজনদের বিচ্ছেদের বেদনা এবং ফিরিয়ে আসার সময় কাছে পাওয়ার পরম অানন্দ যেন অাল্লাহ তাঅালার অস্তিত্বকেই ভুলিয়ে দেয়। প্রায় ৩০ থেকে ৩৬ হাজার ফুট উচ্চতায়,১ ঘন্টায় ১ হাজার কিলোমিটার গতিবেগে শুন্যে ধেয়ে চলা প্লেনটি অাদৌ তার গন্তব্যে স্হানে পৌছবে কিনা সেটা কেউ ভাবেনা।
বিমানের ক্রুদের বারবার সিটবেল বাধা, সিট সোজা করা, মোবাইল সহ সমস্ত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইজ বন্ধ করার অনুরোধ করলে অনেকেই কর্নপাতই করে না।
মুহুর্তের মধ্যে ভুলে যায় যে এটা হতে পারে আমাদের অন্তিমযাত্রা!!!!!! মনে রাখা উচিত অামরা যারা অাকাশে উড়ে বেড়াই, ঐ অাকাশের মালিক মহান আল্লাহতালা একমাত্র ভরসা। এ সময় তাকে ভূলে গিয়ে অন্য কিছুতে মনোনিবেশন করা মোটেও সমীচীন নয়। শুধু অনুশোচনা নয়! নেপালে হারানো তাজা প্রানগুলো অামাদের জন্য সংশোধনের কারণ হোক। আমিন।।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন