জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী আজ
আজ শনিবার ১১ জ্যেষ্ঠ (২৫ মে), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী। বিশেষ এ দিনটিকে কেন্দ্র করে জাতীয় পর্যায়সহ সারাদেশে উদযাপন হবে নানা অনুষ্ঠান। মূল অনুষ্ঠান হবে বিদ্রোহী কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহে। শনিবার বিকাল ৩টায় শুরু হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
শনিবার সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির মাজারে ফুল দিয়ে সম্মান জানাবেন সর্বস্তরের মানুষ। এছাড়া মাজার জিয়ারতের আয়োজন করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের খবরে বলা হয়েছে, বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে নজরুল জন্মেছিলেন। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।
বাসসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে নজরুল স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বিকাল তিনটায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শান্তিনিকেতন, ভারতের উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী এমপি ও জাতীয় সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউট ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য খিলখিল কাজী। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি। নজরুল স্মারক বক্তা হিসেবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ উপস্থিত থাকবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
এবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নজরুল-চেতনায় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণিকা ও পোস্টার মুদ্রণ করবে। কবি নজরুল ইনস্টিটিউট জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে পরিচিত করার লক্ষ্যে কবির ছবি, পোস্টার ও বই প্রদর্শনীর আয়োজন করবে এবং গণগ্রন্থাগার অধিদফতর বই প্রদর্শনী, পাঠ প্রতিযোগিতা ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। তাছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অন্যান্য দফতর ও সংস্থাগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
ঢাকাসহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহ যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করবে। যেসব জেলায় জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নজরুল জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে না, সেসব জেলার জেলা প্রশাসকরা স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনের সহযোগিতায় কমিটি গঠন করে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করবে।
জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও অন্যান্য অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করবে।
জাতীয় কবির ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জাতীয় পর্যায়ের মূল অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তা দেবে। তাছাড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এসব স্থানের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বাসসের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার এক বছর পর ১২ই ভাদ্র ১৯৭৬ সালের শোকের মাসেই শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কবি নজরুল। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
শনিবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে চিরনিদ্রায় শায়িত কবির সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হবে।
নজরুলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাণী দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শুক্রবার এক বিবৃতিতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সবস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
নেতাকর্মীদের নিয়ে জাতীয় কবির মাজার জিয়ারত করবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাণী দিয়েছেন।
জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি ও কবির রুহের মাগফেরাত কামনা করে মহাসচিব তার বাণীতে বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় কবি, বাংলা সাহিত্যের এক অবিসংবাদিত কিংবদন্তি। পারিবারিক সীমাহীন দুঃখ দুর্দশার মধ্যেও তিনি নির্বাক হওয়া পর্যন্ত সাহিত্য-চর্চায় ব্রতী ছিলেন। তিনি ছিলেন বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী, তাঁর ক্ষুরধার লেখনিতে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে বিপ্লবের মন্ত্র উচ্চারিত হয়। বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব কাজী নজরুল ইসলাম।’
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন