জমে উঠেছে ‘ফুলের রাজধানী’ ঝিকরগাছার গদখালিতে ফুল বেচাকেনা
ঝিকরগাছার গদখালির ফুল বাজারে বেচাকেনা জমে উঠেছে। ফেব্রুয়ারি মাসের তিন উৎসবকে সামনে রেখে যশোরের ঝিকরগাছায় ‘ফুলের রাজধানী’ খ্যাত গদখালির ফুল বাজারে ব্যাপক হারে ফুল বিক্রয় হয়।
সারাবছর কমবেশি ফুল বিক্রি হলেও মূলত ১৩ ফেব্রুয়ারি বসন্তবরণ উৎসব, পরদিন ভ্যালেন্টাইনস ডে আর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সামনে রেখেই জমজমাট হয় ফুলের বাজার। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর ফুলের উৎপাদন ভালো হয়েছে,তাই বেচাকেনা ৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন চাষিরা। যশোর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে ফুলের গদখালীর ছোট্ট এ বাজার।
গত বছর এই মৌসুমে ২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছিল বলে জানিয়েছেন গদখালি ফুলচাষি কল্যাণ সমিতির।
তিনি আরো বলেন, ভ্যালেন্টাইনস ডেতে রঙিন গ্লাডিওলাস, জারবেরা, রজনীগন্ধা ও গোলাপ বেশি বিক্রি হয় আর গাঁদা বেশি বিক্রি হয় একুশে ফেব্রুয়ারি ও বসন্ত উৎসবে। ফলে সূর্য ওঠার আগেই প্রতিদিন চাষি, পাইকার ও মজুরের হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠছে গদখালীর ফুলের বাজার।পাইকারদের কেনা ফুল সকাল থেকেই বিভিন্ন রুটের বাসের ছাদে স্তূপ করে সাজানো হচ্ছে, পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো বড় শহরে ট্রাক-পিকআপ ভ্যান ভরে ফুল যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রতিদিন গড়ে অর্ধকোটি টাকার উপর ফুল বিকিকিনি হচ্ছে জানিয়ে গদখালীর ফুলচাষিদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি বলেন, এবার বিক্রি চল্লিশ কোটি টাকার ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন। এবার দাম ও বেচাকেনা দুটোই ভাল হওয়ায় আমরা দারুণ খুশি। ফুলের উৎপাদন, চাহিদা ও দাম- সবই বেশ ভালো। এ অঞ্চলের ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা সবাই খুশি।
তিনি আরো বলেন, দেশে ফেব্রুয়ারিতে যে পরিমাণ ফুল বেচাকেনা হয়, তার ৭৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় যশোরে। এবার চাহিদা বেশি, চাষিরাও আগাম প্রস্তুতি রেখেছেন।
ঝিকরগাছার নন্দী গ্রামের ফুলচাষি গোলাম রসুল বলেন, এবার তিনি ১০ বিঘা জমিতে গোলাপ, জবা, রজনীগন্ধা, গ্ল্যাডিওলাসের পাশাপাশি জারবেরার চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভাল থাকায় বাগানে আগের চেয়ে বেশি ফুল এসেছে। ফলে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা তার। গোলাম রসুলের ভাষায়, বিভিন্ন রংয়ের গোলাপ এবার কৃষকের ঘরে ‘বিশেষ উপহার হয়ে এসেছে।
ঝিকরগাছার কাগমারী গ্রামের রকিবুল ইসলাম বলেন, গত দু দিনে তিনি দেড় লাখ টাকার জারবেরা বিক্রি করেছেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেটে বিদেশি এ ফুলের চাহিদা বাড়ায় গদখালীতে বিক্রিও বেড়েছে।
এক বিঘায় গোলাপ ও দুই বিঘায় গ্ল্যাডিওলাসের আবাদ করেছেন হাড়িয়া নিমতলা গ্রামের আসলাম হোসেন।
তিনি বলেন, এক বিঘা গোলাপ আবাদে খরচ হয়েছে আশি হাজার টাকা। প্রথম বছর চল্লিশ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে, তবে তাতে ৭-৮ বছর ফুল পাওয়া যাবে। প্রতি বছর দেড় লাখ টাকার ফুল বিক্রি করা যাবে।
ঝিকরগাছার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কৃষি কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাস জানান, এ অঞ্চলে সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে ৫০০ ফুলচাষি বাণিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ করেছেন। বর্তমানে এটি ‘ফুলের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত। এবার শীতের তীব্রতা কম থাকায় পরাগায়নে সুবিধা হয়েছে। আর আবহাওয়া ভাল থাকায় ফুলের উৎপাদনও বেশি হয়েছে। এবার প্রতি বিঘায় উৎপাদিত ফুল চাষিরা গড়ে ৭০-৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
গদখালী বাজারে এক পাইকারের সঙ্গে দর কষাকষি করছিলেন সৈয়দপাড়ার আতিয়ার রহমান। ফুলের বাজার কেমন জানতে চাইলে হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ তুলে দিয়ে বলেন, দুই দিনে এক লাখ টাকার বেশি গোলাপ বিক্রি করেছেন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন