ভিডিও
কমান্ডো অভিযানে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী নিহত
কমান্ডো অভিযানের পর চট্টগ্রাম শাহ আমানত (রা.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ুরপঙ্খী’র মুক্ত হয়েছে জিম্মিদশা থেকে। মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে প্রায় চার ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান ঘটে।
১৪৭ যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপদে উদ্ধার করে রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিমান বন্দরটির পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয় যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে। এতে বলা হয়- ছিনতাই প্রচেষ্টাকারী ব্যক্তি অভিযানকালে বিমানের অভ্যন্তরে আহত হন এবং পরবর্তীতে মারা যান। ছিনতাই চেষ্টাকালে ‘মাহাদী’ বলে দাবি করে ছিনতাইকারী। তবে তার বিস্তারিত জানাতে পারেনি কেউ। তার বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়।
ছিনতাইকারীকে কৌশলে কথোপকথনে ব্যস্ত রেখে এ যৌথ অভিযান চালানো হয় বলে ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ছিনতাইকারীর বিস্তারিত পরিচয় জানা না গেলেও পরবর্তিতে যাছাই-বাছাই শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, বিমান বাহিনীর দল পাইলটদের প্রাথমিক ভাবে উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে যৌথ কমান্ড অভিযানে অংশ নেয়। ছিনতাইকারী যাত্রীদের ক্ষতি না করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথার বলা চেষ্টা করে বলে বলা হয়।
অভিযানে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো, নৌ-বাহিনীর সোয়াড, র্যাব, পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থার চৌকস সদস্যরা অংশ নেন।
বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি ‘ময়ূরপঙ্খী’ বোয়িং-৭৩৭ মেডেলের। বিমানটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। যাতে ১৪২ জন যাত্রী ও পাঁচজন ক্রু নিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাচ্ছিল।
বিমানবন্দরে ব্রিফিংয়ে বিমান বাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, ঘটনার পরপরই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানমাল রক্ষা করার নির্দেশনা দেয়া হয়। কৌশলে জিম্মি দশার অবসান ঘটনো হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। তার জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পাশাপাশি পরিচয় জানার চেষ্টাও চলছে। তবে প্লেনের কারও কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি। সবাই সুস্থ রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ওই যুবক বিমানটি করার চেষ্টা করেছিল। সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। তবে কারও কোনো ক্ষতি হয়নি। সবাই অক্ষত রয়েছেন। বিমানেরও কোনো ক্ষতি হয়নি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানে থাকা একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ঢাকা থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ছিনতাইকারী বিমানের পাইলটের নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চালায়। তার হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা সাদৃশ্য বস্তু। ছিনতাইয়ের প্রচেষ্টার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানটি চট্টগ্রাম চলে আসে। কয়েকবার চক্কর দিয়ে বিমানটি দ্রুততার সঙ্গে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করে। বিমানটি অবতরণের পর ইকোনমি শ্রেণির যাত্রী দের জিম্মি দশা থেকে মুক্ত করলেও এখনো বিমানের ত্রুদের সঙ্গে ছিনতাইকারীর হাতে জিম্মি দশায় রয়েছেন কয়েকজন বিজনেস শ্রেণির যাত্রী।
এতিকে সিভিল এভিয়েশন সচিব মহিবুল হক জানান, বিমানটির মধ্যে সন্দেহভাজন একজন অস্ত্রধারী পাইলটসহ দুইজন ক্রুকে জিম্মি করে। ঘটনার পরপরেই বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়। র্যাবের একাধিক গাড়ি বিমানবন্দরে প্রবেশ করে।
ওই বিমানে থাকা যাত্রী মইনউদ্দিন খান বাদল বলেন, একজন সন্দেহভাজন পাইলটের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিল। তবে সব যাত্রী নেমে গেছে। পাইলট আমার সঙ্গে নেমে এসেছিল। পাইটলকে ছিনতাইকারী বলেছে, সে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়। সব যাত্রীরা সেইফ।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই যৌথ অভিযান
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আসা নির্দেশনাতেই যৌথ অভিযান পরিচালনা হয় বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ‘ময়ুরপক্ষী’ জিম্মি উদ্ধারে। প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনাতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সমাপ্তি হয় চার ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির।
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা এয়ার ভাইস মার্শাল মুফিদুল আলম বলেন, ছিনতাইকারী বিমানটিকে জিম্মি করার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিষয়টি জানানো হয়। সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা আসে। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি।
তিনি বলেন, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না করে এ জিম্মি দশার অবসানের প্রচেষ্টা ছিল। আমরা সেদিক থেকে সফল হয়েছি। অভিযানে সেনাবাহিনীর বিশেষ একটি কমান্ডো টিম এবং র্যাব, পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা সম্মিলিতভাবে অংশ নেয়।
ছিনতাইয়ের চেষ্টা হওয়া বিমান থেকে যেভাবে বের হন যাত্রীরা (ভিডিও)
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ দুর্বৃত্তরা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটি জরুরি অবতরণ করেছে। রবিবার বিকালে এই ঘটনার পর সন্দেহভাজ ছিনতাইকারীকে বিমানের ভেতরে রেখে কর্ডন করে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে বিমানে যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় বিমানটির ডানা দিয়ে নামতে দেখা যায়। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোযাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযান
আট মিনিটের কমান্ডো অভিযানে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী যুবককে প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান।
রোববার রাতে চট্টগ্রামে বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।
মতিউর রহমান বলেন, সন্ধ্যা ৬টায় জানানোর পর দ্রুততম সময়ে বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে অত্যন্ত সফল একটা কমান্ডো অভিযান পরিচালনার মধ্য দিয়ে মাত্র ৮ মিনিটের মধ্যে এই ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ছিনতাইকারীর বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ২৬ বছর। সে নিজেকে মাহাদি বলে পরিচয় দিয়েছে। আমরা প্রথমে তাকে আত্মসমর্পণের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু সে এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করলে তার ওপর স্বাভাবিক অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে।
মতিউর রহমান জানান, ওই ব্যক্তি প্রথমে গুলিতে আহত এবং পরবর্তীতে মারা গেছে। এই ঘটনায় কোনও যাত্রী হতাহত হয়নি। বিমানেরও কোনও ক্ষতি হয়নি। ইতোমধ্যে বিমানটিকে চলাচল করার জন্য নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি জানান, বিমানের মধ্যে ১৩৪ জন যাত্রী ও ১৪ ক্রুসহ মোট ১৪৮ জন যাত্রী এবং ক্রু মেম্বার ছিলেন। তাদের প্রত্যেকেই অক্ষত অবস্থায় বিমান থেকে বের হয়ে এসেছেন।
ছিনতাইকারীর সঙ্গে কথোপকথনের সময় সে প্রধানমন্ত্রী এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল জানিয়ে মতিউর রহমান বলেন, অভিযান ও তার সাথে কথোপকথন এক সঙ্গে হয়েছে।
তিনি বলেন, যেকোনও বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ছিনতাইকারীর সঙ্গে কথোপকোথন করা। সেটার মধ্য দিয়ে ছিনতাইকারীকে ব্যস্ত রাখা। এ কাজটি আমাদের বিমান বাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল মফিজ অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে করেছিলেন।
শাহ আমানতে জিম্মি সংকটের অবসান, যাত্রী-পাইলট-ক্রুরা নিরাপদে
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবশেষে জিম্মি সংকটের অবসান হয়েছে।
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টার শিকার হওয়ার পর তা ব্যর্থ করে দিয়ে এই জিম্মি সংকেটর অবসান ঘটায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে এয়ার ভাইস মার্শাল মফিজুর রহমান এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ১৩০ যাত্রীর সবাইকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হয়েছে। পাইলট-কেবিন ক্রু সবাই নিরাপদে আছেন।
বেলা ৩টার পর ১৪৮ আরোহী নিয়ে ঢাকার হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি। উড়োজাহাজটি মাঝ আকাশে গিয়ে সংকটে পড়ে। এ সময় ২৫ থেকে ২৬ বছরের এক যুবক পাইলটকে অস্ত্র উঁচিয়ে উড়োজাহাজটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন।
বিকেল পৌনে ৬টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে উড়োজাহাজটি। এসময় ছিনতাইকারী যুবক এবং দুই ক্রু ছাড়া সবাই উড়োজাহাজ থেকে বের হয়ে আসেন।
রাত পৌনে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান বলেন, উড়োজাহাজটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়েছিল। কমান্ডো অভিযানে ছিনতাইকারী যুবক গুলিবিদ্ধ হয় এবং পরে মারা যায়।
তিনি বলেন, উড়োজাহাজটিতে ১৩৪ জন যাত্রী ও ১৪ জন পাইলট-ক্রু ছিলেন। তারা সবাই অক্ষত রয়েছেন। ছিনতাইকারী কাউকে ক্ষতি করেনি। কি উদ্দেশে সে উড়োজাহাজটি ছিনাইয়ের চেষ্টা করেছিল তা জানা যায়নি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন