বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২৮, ২০২৪

কলারোয়া নিউজ

প্রধান ম্যেনু

সাতক্ষীরার সর্বাধুনিক অনলাইন পত্রিকা

মুক্ত মত

আগামি নির্বাচনে সহায়ক সরকার ও সেনা মোতায়ন জরুরী

ফরিদুল ইসলাম : নির্বাচনের দেড় বছরের মতো বাকি থাকলেও এখনই নির্বাচনকালীন সময়ে কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে তা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা শুরু হয়েছে। মাঠের বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনীকালীন সহায়ক সরকারের কথা বলে আসছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বর্তমানে লন্ডন সফর করছেন। সেখান থেকে দেশে ফিরেই তিনি নির্বাচনীকালীন সহায়ক সরকারের ফর্মুলা দিবেন বলে জানা গেছে। দেশের সর্বস্তরের মানুষের কামনাও তাই। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সুশীল সমাজের সংলাপে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণে তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, সেনা মোতায়েন, গ্রহণযোগ্য সহায়ক সরকার এবং না ভোটের বিধান পুনরায় আনাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। সহায়ক সরকার ও সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে কেউ কেউ দ্বিমত পোষণ করলেও অধিকাংশ আলোচক নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনারদের কথা না বলা এবং ভোটারদের আস্থা অর্জনের পরামর্শ দিয়েছেন।
কিন্তু জনগণ ও সুশীল সমাজের সেই প্রত্যাশাকে কোন আমলেই নিচ্ছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তারা নিজেদের সরকারকেই নির্বাচন-সহায়ক সরকার বলে চালাতে চাচ্ছেন। কিন্তু দেশের জনগণ বাস্তব অভিজ্ঞতা হলো দলীয় সরকারের অধীনে কোন সুষ্ঠ নির্বাচন হয় না।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হবে না; নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। আর সে নির্বাচনে শেখ হাসিনার সরকারই সহায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করবেÑ এটাই আমাদের সংবিধানের নিয়ম। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বর্তমান মতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারই আগামী নির্বাচনে সহায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করবে। বাংলার মাটিতে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির আগে যেকোনো দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন যে সরকার, তার অধীনে এবং নির্বাচন কমিশনারের কর্তৃত্বে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রয়োজনে ডায়েরিতে লিখে রাখুন, সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া আসবেন।’
কয়েক দিন আগে এরশাদের ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দলের এক মহিলা এমপি তো সরাসরি বলে দিয়েছেন, এ দেশে নির্বাচনের আর দরকার নেই। শেখ হাসিনাই সারা জীবনের জন্য প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। সরকারের মনের কথাটিই ওই মহিলা এমপি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন। আওয়ামী নেতাদের এই সাহস নেই। থাকলে হয়তো নিজেদের গৌরবময় অতীতের ওপর জুলুম করে ইতিহাসে এভাবে ‘গণতন্ত্রের ভাঁড়’ হিসেবে চিহ্নিত হতেন না।
অতীত যেমন মোছা যায় না, তেমনি কেউ বদলাতেও পারে না। গণতন্ত্রের জন্য এ অঞ্চলের মানুষ যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অথচ সেই গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত ও শৃঙ্খলিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু গণতন্ত্র আজ মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে অজানা গন্তব্যে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি প্রশ্নবিদ্ধ কোনো নির্বাচন দেখতে চান না। তার এ বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বলা যায়, অতীতে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হয়েছে। ওই রকম নির্বাচন হওয়া উচিৎ নয়। তিনি উল্লেখ না করলেও বুঝতে অসুবিধা হয় না, বহুল আলোচিত ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের কথাটি মাথায় রেখেই তিনি এই বক্তব্য দিয়েছেন। সাংবিধানিকভাবে ওই নির্বাচন যত সিদ্ধই হোক না কেন, গণতান্ত্রিক রীতি-প্রথা ও নৈতিক অবস্থান থেকে জানুয়ারির নির্বাচনকে নির্বাচন বলা যায় না। নির্বাচনটি দেশে-বিদেশে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। প্রধানমন্ত্রীর হয়তো উপলদ্ধিতে এসেছে, একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনই কেবল ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের দুর্নাম ঘোচাতে পারে। কিছুদিন আগে তিনি বলেছেন, বিগত নির্বাচনে তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন, আগামী নির্বাচনে সে দায়িত্ব নেবেন না। এ কথার প্রকৃতার্থও বুঝা যায়। সম্ভবত তিনি বলতে চেয়েছেন, নির্বাচনে যারা প্রার্থী হবেন তাদেরই জিতে আসার দায়িত্ব নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী তাদের জিতিয়ে আনার দায়িত্ব নেবেন না। গত ২০ মে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের একটি বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ১০ মে ভিশন ২০৩০ উপস্থাপন করেছে। জাতীয় জীবনের এমন কোনো দিক-বিভাগ নেই যা ভিশন ২০৩০-এ নেই। পর্যবেক্ষক মহল একে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক উন্নয়নের একটি ইতিবাচক রূপরেখা বা কর্মপরিকল্পনা হিসাবে অভিহিত করেছেন। অনেকের মতে, এটি নির্বাচনী ইশতেহার না হলেও বিএনপি এ ভিশন তৈরি ও উপস্থাপনের সময় নির্বাচনের বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখেছে। এর ভিত্তিতে নির্বাচনী ইশতেহার খুব সহজেই তৈরি করা যাবে।
নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি নির্বাচনপন্থী দল বটে। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতিও তার আছে এবং এ নিয়ে দলটি কাজ করে যাচ্ছে। আগামী নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ কোনো দলের থাকবে না। এটা ক্ষমতাসীন দল যেমন বোঝে, তেমনি বিএনপিরও না বোঝার কথা নয়। জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে দলের নীতি-নির্ধারক মহল দলকে সুসংগঠিত করার দিকে অধিক মনোযোগ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
সরকারের শরীক ও সংসদে গৃহপালিত বিরোধীদল হিসাবে পরিচিত জাতীয় পার্টি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে আরো আগে। জনগণের আস্থাহীনতার ভয়াবহ শিকার দলটি কখন যে কি করে তা অনেক সময় দলের নেতাকর্মীরাই বুঝতে পারেন না। এ কারণে তার সমর্থক সংখ্যাও একটা প্রান্তিক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারের সঙ্গে আছে, আবার বিরোধী দলের তকমাটাও রাখতে চায়, এমন দলের ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারাচ্ছন্ন, তা কারো না বোঝার কথা নয়। দলটি সাম্প্রতিককালে বেশ তৎপর বলে মনে হচ্ছে।
দেশ কার্যত, গণতন্ত্রহীন, রাজনীতিহীন অবস্থায় রয়েছে এবং এ অবস্থা অনেকদিন ধরে কার্যকর আছে। নির্বাচনের হাওয়া যতই বয়ে যাক, যতই তা প্রবল হয়ে উঠুক, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যদি কথা বলতে না পারে, প্রতিবাদ করতে না পারে, সভা-সমাবেশ ও কর্মসূচী পালন করতে না পারে, তবে তা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কোনো কল্যাণ ও সুফল বয়ে আনবে না। একটি অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যদি কাম্য হয় তবে রাজনীতিকে উম্মুক্ত বা বাধামুক্ত করতে হবে, গণতন্ত্রের চর্চা নিশ্চিত করতে হবে।
নির্বাচনের বিষয়ে আরও একটি বড় প্রশ্ন রয়েছে। প্রশ্নটি নতুন নয়। আমাদের রাজনৈতিক কালচার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের মধ্যে বিদ্যামান সংশয়-সন্দেহ ও আস্থাহীনতার প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালে কোন সরকার ক্ষমতা থাকবে, সেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রমাণ রয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় না। সংবিধানে এ কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংযোজন করা হয়েছিল। সেটা এখন নেই। এখন সংবিধান মতে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। বিএনপি এটা অগ্রহণযোগ্য বিবেচনা করেই গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুন: প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছিল। সরকার সে দাবী না মানায় বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এখন নতুন করে আগামী নির্বাচনকে সামনে ওেখে বিএনপি সহায়ক সরকারের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। এছাড়া নাগরিক সমাজ নির্বাচনে সেনা মোতায়নের সুপারিশ কওেছে। দলীয় সরকারের অধীনে যেহেতু সুষ্ঠ নির্বাচনের ঐতিহ্য আমাদের দেশে নেই সুতারং আগামী নির্বাচন সহায়ক সরকারের অধীনে হওয়া ব্যাঞ্চনীয়।

লেখক:
ফরিদুল ইসলাম, লন্ডন প্রবাসী রাজনৈতিক বিশ্লেষক

[মতামত একান্তই লেখকের। মতামতের জন্য কলারোয়া নিউজ কোনভাবেই দায়বদ্ধ বা দায়ি নয়]

একই রকম সংবাদ সমূহ

‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী

সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন

টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী

টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন

সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান

জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন

  • রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছে চীন
  • ইউপি নির্বাচন : চেয়ারম্যান-মেম্বারদের শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়টি ‘গুজব’
  • বাংলাদেশের নর্দান ইউনিভার্সিটি ও কানাডার কর্টলার ইন্টারন্যাশন্যাল, রেসিন্ট ইন্টারন্যাশন্যালের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি
  • চতুর্থ ড্রিমলাইনার ‘রাজহংস’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
  • প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৭টি পদক লাভ
  • ড. কালাম ‘এক্সিলেন্স এওয়ার্ড’ গ্রহণ করেই দেশবাসীকে উৎসর্গ করলেন প্রধানমন্ত্রী
  • তৃণমূল থেকে সংগঠনকে গড়ে তুলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
  • মোবাইল ছিনতায়কারীকে দৌড়ে ধরলেন ম্যাজিস্ট্রেট
  • কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শোভন-রাব্বানির ভাগ্য নির্ধারণ
  • পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
  • পুলিশের ব্যাংকের যাত্রা শুরু
  • বিএনপি অর্থ-সম্পদ অর্জনে বেশি ব্যস্ত ছিল: প্রধানমন্ত্রী