৬ ডিসেম্বর কলারোয়া পাক হানাদার মুক্ত দিবস
৬ ডিসেম্বর, সাতক্ষীরার কলারোয়া পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল ছেলেরা সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও দোসরদের হটিয়ে অবরুদ্ধ কলারোয়াকে হানাদারদের কবল থেকে মুক্ত করে স্বাধীন দেশের পতাকা উত্তোলন করে।
সূত্র মতে, মহান মুক্তিযুদ্ধের কলারোয়ায় ৩৪৩ জন বীর সস্তান অংশ নেন। শহীদ হন ২৭জন মুক্তিযোদ্ধা, এর মধ্যে কলারোয়ার বীর সস্তান ৯জন।
আর এ পর্যন্ত কলারোয়ার ৮টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।
দীর্ঘ ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে কলারোয়ায় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয় ৬টি। প্রতিটি যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে পাকবাহিনীকে পরাস্থ করে।
কলারোয়া অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শতাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত প্রবাসী সংগ্রাম পরিষদ। সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন এমসিএ, এমএলএ বোয়ালিয়ার মমতাজ আহম্মেদ, ঝাপাঘাটের ভাষা সৈনিক শেখ আমানুল্যাহ, কলারোয়ার বিএম নজরুল ইসলাম, মোসলেম উদ্দীন, পাচঁপোতার শ্যামাপদ শেঠ, ইনতাজ আহম্মেদ, কেড়াগাছির মোছলদ্দীন গাইন, গয়ড়ার ডা. আহম্মদ আলী প্রমুখ।
কলারোয়া এলাকা ছিল মুক্তিযুদ্ধের ৮নং সেক্টরের অধীনে। পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম যুদ্ধ পরিচালনা করেন কলারোয়ার দুই বীরযোদ্ধা মোসলেম উদ্দীন ও আব্দুল গফ্ফার। এই দুই বীরযোদ্ধার নেতৃত্বে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন কলারোয়ার বীর সস্তান সৈয়দ আলী, গোলাম মোস্তফা, আবুল হোসেন, আ. রউফ, আনোয়ার হোসেনসহ শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা।
এই বীর সেনানীদের তত্ববধায়নে সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে সংগঠিত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৬ শতাধিক পাকিস্থানী সেনা নিহত হয়। কলারোয়ায় হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি বড় ধরনের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধেই ২৯ জন পাকিস্থানী সেনা নিহত হয়। শহীদ হন ১৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর কলারোয়ার সীমান্ত এলাকা কাঁকডাঙ্গা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে হানাদাররা কাঁকডাঙ্গার ঘাটি ছাড়তে বাধ্য হয়।
অক্টোবরের শেষদিকে মুক্তিযোদ্ধারা বাগআঁচড়ায় দু:সাহসিক হামলা চালিয়ে ৭ পাক রেঞ্জারকে হত্যা করেন।
খোরদো এলাকাও মুক্ত করে ফেলেন মুক্তিযোদ্ধারা।
কলারোয়ার বীর যোদ্ধাদের ধারাবাহিক সফল অপারেশনের মুখে কোনঠাসা হয়ে পড়ে পাক বাহিনী। কিন্তু পাক বাহিনী যখন বুঝতে পারে পরাজয় নিশ্চিত, তখন তারা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর চেষ্টা করে। এরই অংশ হিসেবে ৫ ডিসেম্বর দিবাগত গভীর রাতে কলারোয়ার বেত্রবতী নদীর লোহার ব্রিজ মাইন দিয়ে ধ্বংস করে পাকসেনারা পালিয়ে যায়। এর কিছুদিন আগে উত্তর মুরারীকাটির পালপাড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ ৯জনকে নির্মম ভাবে হত্যা করে হানাদার বাহিনী।
দীর্ঘ ৯ মাস কলারোয়ার বিভিন্ন স্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে অবশেষে ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী সেনারা কলারোয়া ছাড়তে বাধ্য হয়।
এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কলারোয়াকে মুক্ত করে, কলারোয়া থানা চত্বরে স্বাধীনদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। েআর কলারোয়ার স্বাধীনচেতা মুক্তমনের মানুষ উড়ন্ত পাখির মত উড়তে থাকে। ঐতিহাসিক ও গৌরবোজ্জ্বল দিনটি এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, উপজেলা প্রশাসনসহ কলারোয়ার বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
১৪ জুলাই: যবিপ্রবির ল্যাবে সাতক্ষীরা জেলার ৩০ জন করোনা পজিটিভ!
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৪ জুলাই,২০২০বিস্তারিত পড়ুন
‘প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে’: লুৎফুল্লাহ এমপি
সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেছেন- ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবেও উন্নয়নবিস্তারিত পড়ুন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন
কলারোয়ার দমদম বাজার মার্কেটের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন