ভোটের তারিখ চূড়ান্ত করতে ৩ নভেম্বর বসছে ইসি
‘স্বস্তির সুবাতাস’র সংলাপে তাকিয়ে নির্বাচন কমিশনও
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে রয়েছে নির্বাচন কমিশনও।
নির্বাচন নিয়ে বিরোধপূর্ণ অবস্থানের মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগে আকস্মিকভাবেই বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সংলাপে বসতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যখন সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাইছিল এবং ক্ষমতাসীনরা যখন সংবিধানের মধ্য থেকে তা সম্ভবপর নয় বলে আসছিল, তখন এই সংলাপের উদ্যোগ রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘স্বস্তির সুবাতাস বইয়ে দেবে’ বলে আশাবাদী আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একে চলমান সঙ্কট সমাধানের পথে ‘নতুন মোড়’ মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মিজানুর রহমান শেলীও।
এই পরিস্থিতিতে তফসিল ঘোষণার তোড়জোড় চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে এই সংলাপের উপর চোখ রাখছেন নির্বাচন কমিশনাররা।
নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, “সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো যদি সম্মিলিতভাবে কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়; সেটা সবাই জানবে। রাজনৈতিক সমঝোতা হলে আইনের মধ্য থেকে আমরা একোমোডেট করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”
দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপিসহ অন্য দলগুলোকে ভোটে দেখার প্রত্যাশা ইসি শুরু থেকেই জানিয়ে আসছে। বিএনপি না এলে যে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বলা যাবে না, সেটা সিইসি কে এম নূরুল হুদাও বুঝছেন।
কিন্তু বিএনপি কিংবা ঐক্যফ্রন্ট যেসব দাবি তুলেছে, তার বাস্তবায়ন ইসির পক্ষে করা সম্ভবপর নয় বলে নির্বাচন কমিশনাররা আগেই বলে আসছিলেন। তাদের ভাষ্য, সংবিধানে যেভাবে বলা আছে, সেই অনুযায়ী কাজ করতেই তারা বাধ্য।
তবে ইভিএম নিয়ে সিদ্ধান্তটি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন। বিএনপিসহ অনেক দলের বিরোধিতার মধ্যেও ইভিএম ব্যবহারের দিকে এগোচ্ছে ইসি।
ইভিএমের বিষয়ে সংলাপে কোনো সমঝোতা হলে তাতে সাড়া দেবেন কি না- জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল বলেন, “শুধু ইভিএম কেন? যে কোনো বিষয় হতে পারে।
“বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত অথবা ফল পাওয়া গেলে সেটি আমরা গ্রহণ করব। তবে সেটি আইনের মধ্যে থাকতে হবে। আমরা আইনের বাইরে যেতে পারব না।”
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিও রয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের; তবে এই সময়ে তার কোনো প্রয়োজন দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
সংলাপের আমন্ত্রণ পাওয়ার পর ইসিতে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, “সেখানে (সংলাপে) নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে।”
ভোটের তারিখ চূড়ান্ত করতে ৩ নভেম্বর বসছে ইসি
একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করতে ৩ নভেম্বর বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন।
সেখানে যে তফসিল অনুমোদন পাবে, তা বিটিভি ও বেতারে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
তবে কবে সেই ঘোষণা আসবে তা এখনও প্রকাশ করেননি নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।
ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান মঙ্গলবার বলেন, বুধবার ইসিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়েছে। পরদিন চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবকে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করবেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা।
“৩ নভেম্বর বিকাল ৩টায় নির্বাচন কমিশনের ৩৮তম সভা বসবে। এই সভায় একাদশ সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হবে।”
৩১ অক্টোবর একাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরুর পর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই যে তফসিল ঘোষণা হতে পারে, সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
গত সপ্তাহে তিনি বলেছিলেন, “কমিশন সভায় তফসিল অনুমোদন হবে। এরপর বিটিভি ও বেতারে জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে তফসিল ঘোষণার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সর্বশেষ দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিলও জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়েছিল। ইসি কার্যালয়ে সিইসির সেই ভাষণ রেকর্ড করা হবে। তারপর নির্ধারিত সময়ে তা প্রচার করা হবে। ধারণ করা ভাষণ সাধারণত সন্ধ্যায় প্রচার করা হয়।
দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বিটিভি মহাপরিচালক ও বেতার মহাপরিচালক ইসি সচিবের দপ্তরে এসেছিলেন। তফসিল ঘোষণার দিন ২৫ নভেম্বর সিইসির ভাষণ ধারণের জন্য দুপুরেই প্রস্তুতি শুরু হয় কমিশন কার্যালয়ে। বিটিভির তৎকালীন মহাপরিচালক নিজে উপস্থিত থেকে সিইসির কক্ষ সাজানোর বিষয়টি তদারক করেন। পরে তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের প্রায় আধা ঘণ্টার সেই ভাষণ ধারণ করা হয়।
সেদিন সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে রেকর্ডিং শেষে কমিশনের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সিইসি বলেছিলেন, তার ভাষণে ‘সব’ প্রশ্নের উত্তর মিলবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচারিত সিইসির সেই ভাষণে দশম সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, মনোনয়ন দাখিল, বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ সময় এবং প্রতীক বরাদ্দ শেষে প্রচারের পর্যাপ্ত সময় দিয়ে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত ৪০-৪৫ দিন সময় রাখা হয়।
সেই হিসাব ধরে ডিসেম্বরের শেষ দিকে ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েই সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
একই রকম সংবাদ সমূহ
‘ভোমরা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর করা হবে’ : নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর উন্নয়ন ও পরিচালনা গতিশীলতা আনয়নের নিমিত্ত গঠিতবিস্তারিত পড়ুন
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী
টিকাদানের সাফল্যে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পেলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি একটিবিস্তারিত পড়ুন
সর্বজনীন স্বাস্থ্য কর্মসূচির অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান
জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে এসেবিস্তারিত পড়ুন